Monday, December 23, 2024
Homeফিচারভারতের নদী-আগ্রাসন ও শাসকদের নতজানু নীতির বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন

ভারতের নদী-আগ্রাসন ও শাসকদের নতজানু নীতির বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন

গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চ

RoadMarch-1

সাম্যবাদ প্রতিবেদক
পুনর্ভবা, আত্রাই ও করতোয়া – এই তিন নদীর মিলিত স্রোতধারার নাম তিস্তা। এক সময়ের প্রমত্ত এই নদী এখন মৃতপ্রায়, বুকে তার ধু ধু বালুর চর, পানির চিহ্নমাত্র নেই। পাড়ের কৃষকরা হাহাকার করছে। গাছপালা, মাটি এগুলো যদি শব্দ করতে পারত, তাহলে তাদের হাহাকারও শোনা যেত। কেমন করে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হল? এর পেছনে আছে একদিকে তিস্তার পানির ওপর ভারতীয় শাসকদের আগ্রাসন, অন্যদিকে আমাদের শাসকদের নতজানু নীতি। গজলডোবা নামক স্থানে বাধ দিয়ে ভারত তিস্তার বুক থেকে সমস্ত পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। তারও উজানে তৈরি করেছে আরও কয়েকটি বাধ। আর এর ফলেই তিস্তার বুকে আজ পানি নেই। উত্তরবঙ্গের হাজার হাজার কৃষকের হাহাকার, নদীনির্ভর পরিবেশ এবং কৃষির মরণদশা দেখেও আমাদের সরকার নির্বিকার। এমন পরিস্থিতিতেই বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে চলছে আন্দোলন। এর অংশ হিসাবেই গত ৮ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হল তিন দিনের ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চ। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে দেশপ্রেমিক বাম-গণতান্ত্রিক জনগণের অংশগ্রহণে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান ঘোষিত হল তিস্তা রোডমার্চে। এ লক্ষ্যে ১৬ এপ্রিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও এবং আগামী ২৩ মে ঢাকায় জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়া হয় তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার দোয়ানীবাজারে অনুষ্ঠিত রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশে।
RoadMarch_Doani Bazar১০ এপ্রিল বিকেলে দোয়ানী বাজারের সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চ। সম্প্রতি তিস্তার পানির প্রবাহ স্মরণকালের সর্বনিম্ন সীমায় নেমে আসে। পানির অভাবে তিস্তা সেচপ্রকল্পের অধীন হাজার হাজার কৃষক ও তাদের জমি বিপন্ন হয়ে পড়ে। পানির দাবিতে কৃষকরা বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ মার্চ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর উদ্যোগে রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত রোডমার্চ ঐ অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। বাসদের ওই রোডমার্চের পরিপ্রেক্ষিতে তিস্তার পানির ইস্যুটি জাতীয়ভাবে আলোচনায় গুরুত্ব পায় এবং গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা এ দাবিতে ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চের ঘোষণা দেয়।
গত ৮ এপ্রিল সকালে ঢাকা থেকে যাত্রা করে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, নীলফামারী হয়ে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন দোয়ানী বাজারে এসে রোডমার্চ শেষ হয়। পথে পথে অসংখ্য পথসভা, প্রচারপত্র বিলি, গণসংযোগের পাশাপাশি বগুড়ার সাতমাথায় ও রংপুরের পায়রাচত্বরে দুটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রোডমার্চের শেষ দিন ১০ এপ্রিল সকালে রংপুর থেকে যাত্রা করে রংপুরের সিও RoadMarch_Gazipurবাজার, হাজিরহাট, পাগলাপীর, গঞ্জিপুর, চন্দনেরহাট, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার আবিলের বাজার, বড়ভিটা, বিন্নাকুড়ি, বড়ঘাট ও জলঢাকা উপজেলা শহরে পথসভা করে বিকাল পৌনে ৫টায় তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন দোয়ানী বাজারে গিয়ে পৌঁছায়। সেখানে সমাপনী সমাবেশে পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার শপথ গ্রহণ ও পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে রোডমার্চ সমাপ্ত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, সমাবেশের ঘোষণা পাঠ ও পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাম মোর্চার সমন্বয়ক কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার।
উত্তরবঙ্গের পথে পথে দুপাশে অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে থেকে রোডমার্চকে অভিনন্দন জানিয়েছে। প্রতিটি সমাবেশেই সাধারণ মানুষ আগ্রহ নিয়ে নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শুনেছে। বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির প্রকাশিত রোডমার্চ সংখ্যা সাম্যবাদ কিনেছে, বাম মোর্চার লিফলেট সংগ্রহ করেছে। রোডমার্চকে ঘিরে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। যেমন বগুড়া শহরের এক পঞ্চাশোর্ধ রিক্সাচালক রোডমার্চকারীদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলছিলেন, ‘এমন প্রতিবাদ করে হবে না বাবারা, সরকারকে শক্ত করে চেপে ধরতে হবে’। কেউ কেউ হতাশার কথাও বলেছেন, যেমন পলাশবাড়ীর চায়ের দোকানে বসে থাকা এক বৃদ্ধ বলছিলেন, ‘এগুলা করে কোনো লাভ হবে না, সরকার জনগণের কোনো কথাই শুনবে না, আপনাদের কোনো কথাও শুনবে না।’ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য এক বৃদ্ধ তার কথার প্রতিবাদ করে বলেছেন, ‘তাহলে কি আমরা চুপ করে বসে থাকব? না বাবারা, তোমরা আন্দোলন চালিয়ে যাও, আমরা অন্তর থেকে এ আন্দোলন সমর্থন করি।’ রংপুর শহরে পত্রিকার হকার আব্দুল হান্নান বললেন, ‘আমাদের সরকারের কোনো জোর নেই। মন্ত্রী-এমপিরা তো মিটিং ঠিকই করছে ভারতের সাথে, কিন্তু জোর গলায় পানির দাবি করতে পারছে না।’ রংপুরের স্টুডিও মালিক ইকবাল মনে করেন, বাংলাদেশের সব দলই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে ভারতকে তোষামোদ করে। সে জন্যই মানুষ বঞ্চিত হয়। নীলফামারীর বড়ভিটায় সমাবেশ শুনতে আসা পঞ্চাশোর্ধ বয়সী কৃষক রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘আমার জীবনে এত কম পানি তিস্তায় দেখি নি। কম আসছে, তাও কিছু না কিছু পানি আসছে। এইবার একেবারেই পানি নাই। পানির খালগুলো সব শুকিয়ে গেছে। আপনাদের প্রতিবাদে যদি কিছু কাজ হয়, যদি সরকারের হুঁশ হয়।’
RoadMarch_Dimlaরোডমার্চ শুরু হয় গত ৮ এপ্রিল ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে। ৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা-ভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমবেত হতে শুরু করেন। সকাল ১০টায় রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশ শুরু হয়। বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বি ডি রহমতউল্লাহ, পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক। এছাড়া উদ্বোধনী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহবায়ক হামিদুল হক, বাসদ (মাহবুব)-এর শ্যামল কান্তি দে, বাসদের ফখরুদ্দিন কবির আতিক প্রমুখ।
উদ্বোধনীর পর রোডমার্চের মিছিল প্রেসক্লাব থেকে হাইকোর্ট মোড় ঘুরে মৎসভবন মোড়ে গিয়ে গাড়িবহরসহ গাজীপুর অভিমুখে যাত্রা করে। বেলা দেড়টায় গাজীপুর চৌরাস্তায় বাসদ নেতা কমরেড জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তায় একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। রোডমার্চ বহর বেলা তিনটার দিকে টাঙ্গাইল শহরে পৌঁছে এখন সেখানে টাঙ্গাইল মিল্কভিটা দুগ্ধ কারখানা প্রাঙ্গনে দুপুরের খাবার গ্রহণ করে। এরপর রোডমার্চ পুনরায় পথে নামে বগুড়ার উদ্দেশ্যে। পথে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড়ে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
৮ এপ্রিল সন্ধ্যা সাতটার কিছু পরে রোডমার্চ বগুড়া পৌঁছায়। তিস্তা রোডমার্চকে স্বাগত জানাতে বগুড়ার সাতমাথায় এক সমাবেশের আয়োজন করে জেলা গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। সাতমাথায় সমাবেশের মাধ্যমে রোডমার্চের প্রথম দিনের কর্মসূচি সমাপ্ত হয়। সাতমাথার সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়ক বাসদ নেতা সামছুল আলম দুলু, বক্তব্য রাখেন বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ শেষে বগুড়ার বিভিন্ন স্কুলে রাত্রিযাপন করে মোর্চার নেতা-কর্মীরা।
RoadMarch_BoroVita৯ এপ্রিল সকালে সাতমাথায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে রোডমার্চ রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সকালের সমাবেশ শেষে মিছিল সরকারি আযিযুল হক কলেজের সামনে গিয়ে গাড়িবহরে যাত্রা করে। তিস্তা রোডমার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছায়। গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের প্রধান সড়কে র‌্যালি শেষে পৌর শহরে থানা মোড়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় বাম মোর্চার সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম রফিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সাইফুল হক, মোশরেফা মিশু, জেনায়াদে সাকী, মোশারফ হোসেন নান্নু, হামিদুল হক, এড. শ্যামল কান্তি দে প্রমুখ। রোডমার্চ পলাশবাড়ী মহিলা কলেজে যাত্রাবিরতি দিয়ে দুপুরের খাবার গ্রহণ করে। এরপর বিকালে পলাশবাড়ী উপজেলা সদরের চৌমাথায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ নেতা আহসানুল হাবীব সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাসির উদ্দিন নাসু, ফয়জুল ইসলাম সবুজ, কামরুল আলম সবুজ ও আবু বকর রিপন।
তিস্তা রোডমার্চ ৯ এপ্রিল বিকেল ৫টায় রংপুর পায়রাচত্বরে পেঁছায় এবং সেখানে একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি রংপুর জেলা শাখার সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমবেশে বক্তৃতা করেন বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, মোশরেফা মিশু, হামিদুল হক, ইয়াসিন মিয়া, তৌহিদুর রহমান, পলাশ কান্তি নাগ প্রমুখ।
১০ এপ্রিল সকালে রংপুর থেকে যাত্রা করে রোডমার্চ বেলা সাড়ে ১২টায় পৌঁছায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটায়। এখানে পথসভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকেল ৩টায় নীলফামারীর জলঢাকা ট্রাফিক মোড়ে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাম মোর্চার সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে এ পথসভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, মোশরেফা মিশু, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকী, হামিদুল হক, ইয়াছিন মিয়া প্রমুখ। উভয় সমাবেশে আশেপাশের অঞ্চল থেকে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। বিকাল ৪টায় রোডমার্চ পৌঁছায় ডিমলা উপজেলার চাঁপানীর হাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। এখানে একটি সংক্ষিপ্ত সংহতি সমাবেশ করে রোডমার্চ তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে লালমনিরহাট জেলায় প্রবেশ করে। লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার দোয়ানীবাজরের রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

রোডমার্চের সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ

তিস্তা থেকে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার এবং মহাজোট সরকারের নতজানু নীতির প্রতিবাদে এবং বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে ৪ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টায় বাসদ কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল গুলিস্তান, পল্টন, বায়তুল মোকাররম এলাকা প্রদক্ষিণ করে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কমরেড উজ্জ্বল রায়, সাইফুজ্জামান সাকন ও কল্যাণ দত্ত।

শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিকদের সংহতি

ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চের সমর্থনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ৭ এপ্রিল বিকাল ৫টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টুর পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, এড. সুলতানা আক্তার রুবি, একুশে টিভির সিনিয়র সাংবাদিক সাজেদ রোমেল, যমুনা টিভির সিনিয়র সাংবাদিক সুশান্ত সিনহা, রাশেদ শাহরিয়ার, মাসুদ রানা।
সিলেট : ঢাকা-তিস্তা রোডমার্চের সাথে সংহতি জানিয়ে ১০ এপ্রিল বিকাল ৪টায় সিলেট জেলা বাসদের উদ্যোগে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিটি পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি সিলেট জেলার সদস্য এড. হুমায়ুন রশীদ শোয়েব এবং পরিচালনা করেন সুশান্ত সিনহা সুমন। বক্তব্য রাখেন রনেন সরকার রনি, রেজাউর রহমান রানা প্রমুখ।
চট্টগ্রাম : বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে ঢাকা-তিস্তা রোড মার্চের সাথে সংহতি জানিয়ে আজ ১০ এপ্রিল বিকাল ৪টায় নিউমার্কেট থেকে স্টেশনরোড পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও রেলস্টেশন মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অপু দাশগুপ্ত, সফিউদ্দিন কবির আবিদ ও রফিকুল হাসান।

কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে ২২ এপ্রিল রংপুর-দিনাজপুর-নীলফামারীতে স্মারকলিপি পেশ

তিস্তা প্রকল্পের আওতাধীন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ, বেকার ক্ষেতমজুরদের ১২০ দিনের কর্মসৃজন, আগামী আমন মৌসুম পর্যন্ত আর্মি দরে রেশন প্রদান এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে ২২ এপ্রিল রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারীতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করবে বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি। গত ১২ এপ্রিল বেলা ১২টায় বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি রংপুর জেলা শাখা কর্তৃক জেলা বাসদ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের রংপুর বিভাগীয় কমিটির সংগঠক মঞ্জুর আলম মিঠু। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কমরেড ওবায়েদুল্লাহ মুসা, রংপুর জেলা বাসদ সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, দিনাজপুর জেলা সমন্বয়ক রেজাউল ইসলাম সবুজ, রংপুর জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ, আহসানুল আরেফিন তিতু। সংবাদ সম্মেলন থেকে উত্তরবঙ্গকে মরুকরণের হাত থেকে রায় তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও কৃষির স্বার্থ রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানানো হয়।
এসকল দাবিতে গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় পাগলাপীর বন্দরের গোলচত্বরে বাসদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি রংপুর জেলা শাখার সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক মনোয়ার হোসেন প্রমুখ। এছাড়া একই দাবিতে গত ১৬ এপ্রিল গঞ্জিপুরে ক্ষেতমজুর ও কৃষকদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments