কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ঐ কলেজের নাট্য সংগঠন ’ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের’ সদস্য সোহাগী জাহান তনুর ধর্ষণকারী ও হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার-বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ০৩ এপ্রিল ২০১৬ সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে রংপুরে কারমাইকেল কলেজ ও বিভিন্ন স্কুলে ধর্মঘট পালিত হয়েছে।
সকাল ১০টায় কলেজে ধর্মঘটের সমর্থনে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে একই দাবিতে বিভিন্ন স্কুলে ধর্মঘট পালিত হয়। পৃথক কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি আহসানুল আরেফিন তিতু, পাঠাগার সম্পাদক আবু রায়হান বকসি, কলেজ সাধারণ সম্পাদক ইমরান সরকার, ছাত্র ফেডারেশনের জেলা আহ্বায়ক প্রত্যয়ী মিজান, কলেজ সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব, ছাত্র ফ্রন্ট কলেজ সাধারণ সম্পাদক জনক রায়, অর্থ সম্পাদক মৌসুমী আক্তার মৌ, সাধারণ শিক্ষার্থী তৌফিক ইসলাম, আসাদুজ্জামান সিমন প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ২০ মার্চ রাত সাড়ে সাতটায় টিউশন শেষে বাসা ফেরার পথে সোহাগী জাহান তনুকে নরপশুরা ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করে। তার লাশ কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের কাছে উদ্ধার করা হয়েছে। বাবা যখন মেয়ের এই লাশের সন্ধান পান তখন কি সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা ভাবেন, সাধারণ মানুষ কি নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন? বিচারহীনতার সংস্কৃতি মানুষকে দুর্বিষহ জীবনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে । যে মেয়ে টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালায় সে মেয়ের এই কি পরিণতি হবে? সারাদেশে যে ভয়াবহ নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে তার তথ্য দেখলেই যে কোন বিবেকবান মানুষ শিউরে উঠবে। কোন্ দেশে আমরা বাস করছি যেদেশে বছরে ৪ হাজার ৪৩৬ জন নারী ধর্ষণসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু রাষ্ট্র এই ধর্ষণকারী-নির্যাতনকারীদেরকে বিচারের আওতায় আনেনি। বরং বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার নিয়ে প্রহসন চলছে। রাষ্ট্রের মন্ত্রীরা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে লাঞ্ছনাকারীদের মদদ দিয়েছে, পৃষ্ঠপোষকতা দান করছে। ফলে এই দায়িত্বহীন বক্তব্য শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত দুবৃত্তকারীদেরকেই অপরাধ সংঘটনে উৎসাহী করেছে। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি নারীসমাজ সহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কেড়ে নিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ, তনু হত্যাকারিদের অবিলম্বে গ্রেফতার-বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি করেন এবং দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে সেই সংস্কৃতির অবসান ঘটানোর আহবান জানান। সেই সাথে, জনগনের জান-মালের নিরাপত্তা এবং তনুর মতো আর কোন মেয়ের জীবনে যেন এই পরিণতি না আসে তার জন্য জনগণকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান করেছেন।
নেতৃবৃন্দ, সফলভাবে ধর্মঘট পালন করার জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ ও আগামি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।