সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে আয়োজিত “সুন্দরবন না রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র” ইস্যুতে প্রতীকী গণভোটের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ২১ জানুয়ারি বেলা ১২টায় সংগঠনের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রংপুর প্রেসক্লাব চত্তরে অনুিষ্ঠত ছাত্র-সমাবেশে গণভোটের ফলাফল প্রকাশ করেন কারমাইকেল কলেজের সাবেক ভাইস-প্রিন্সিপাল অধ্যাপক সাহারা ফেরদৌস।
ফলাফলে দেখা যায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজে অংশগ্রহণকারী মোট ৬৪১৮ জন ভোটারের মধ্যে সুন্দরবনের পক্ষে ৬০১১টি, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে ৩৬৩ টি এবং পরিত্যক্ত হয়েছে ৪৪ টি ভোট। শতকরা হিসেবে ৯৩.৬৬ ভাগ সুন্দরবনবিধ্বংসী রামপাল চুিক্ত বাতিল চায় এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে মত দেয় মাত্র ৫.৬৬ ভাগ।
ফলাফল পরবর্তী ছাত্রসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি আহসানুল আরেফিন তিতু। এ সময় বক্তব্য রাখেন তেল-গ্যাস, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য ও বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু, লেখক ও গবেষক ড.মিজানুর রহমান, রংপুর বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক ওয়াদুদ আলী, ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন। উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন চাঁদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের পাঠাগার সম্পাদক আবু রায়হান বকসী, কারমাইকেল কলেজ সভাপতি হোজায়ফা সাকওয়ান জেলিড, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অংশগ্রহণকারী ২০২৩ জন ভোটারের মধ্যে সুন্দরবনের পক্ষে ১৮৮০টি, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে ১৬৫টি এবং ১২টি ভোট পরিত্যক্ত হয়। শতকরা ৯১.৩০ ভাগ সুন্দরবনের পক্ষে এবং ৮.১১ ভাগ রামপালের পক্ষে মত দেয়। অন্যদিকে কারমাইকেল কলেজে ৪৩৮৩ ভোটের মধ্যে সুন্দরবনের পক্ষে পড়ে ৪১৫৩টি, রামপালের পক্ষে ১৯৮টি এবং ৩২টি ভোট বাতিল হয়।কারমাইকেল কলেজে ৯৪.৭৫% শিক্ষার্থী রামপাল চুক্তি বাতিলের পক্ষে ভোট দেয় এবং সুন্দরবনের বিপক্ষে ভোট পড়ে ৪.৫২%।
ছাত্রসমাবেশে বক্তাগণ বলেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষার বেসরকারিকরণ, বানিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে যেমন লড়াই করছে তেমনি দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার আন্দোলনেও সমানভাবে অংশ নিয়েছে।সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনেও শুরু থেকে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সক্রিয়ভাবে লড়ছে।এর ধারাবাহিকতায় রংপুরের উচ্চশিক্ষার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজে প্রতীকী গণভোটের আয়োজন করা হয়। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেছে।ফলাফলে সুন্দরবনের পক্ষে বিপুল ভোটই প্রমাণ করে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি মানুষের ক্ষোভ কতটা।এবং বক্তাগণ আরও বলেন, দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে ব্যাপক মানুষ বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন করছে এবং রামপালচুক্তি বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। সরকারের উচিত একগুঁয়েমি ছেড়ে জনগণের মতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবিলম্বে রামপাল চুক্তি বাতিল করা। উল্লেখ্য ছাত্রসমাবেশ শেষে সংগঠনের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি সুসজ্জিত র্যালী নগর প্রদক্ষিণ করে।