দিনাজপুর যমুনা রাইস মিলে বয়লার বিস্ফোরণে নিহত-আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও মালিকের গ্রেপ্তার-বিচারের দাবিতে শ্রমিক সমাবেশে হামলার নিন্দা
বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল রায় আজ এক বিবৃতিতে গতকাল ২৮ এপ্রিল বিকেলে গোপালগঞ্জ বাজারে ‘চাতাল ও চালকল সংগ্রাম কমিটি’ আয়োজিত সমাবেশে মালিকপক্ষের সন্ত্রাসীদের হামলা ও সমাবেশ বানচাল প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল দিনাজপুর যমুনা অটো রাইস মিলে বয়লার বিস্ফোরণে নিহত ১৫ শ্রমিক ও আহতদের ক্ষতিপূরণ এবং মালিকের গ্রেপ্তার-বিচারের দাবিতে এই শ্রমিক সমাবেশে ডাকা হয়েছিল।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “মেয়াদোত্তীর্ণ ও উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণবিহীন বয়লার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এ পর্যন্ত ১৫ শ্রমিকের মৃত্যু, ৪ জন আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীনসহ আরো ১৫ শ্রমিক আহত হওয়ার জন্য দায়ী হচ্ছে মালিকের অবহেলা, মুনাফার লোভ এবং প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা। এতবড় হত্যাকান্ডের পর শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ ও বিচারের দাবিতে যে আন্দোলনে নেমেছে তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে বানচাল করার জন্য গতকালের সমাবেশে মালিকের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। মালিক ও সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসন। বাসদ (মার্কসবাদী)সহ বিভিন্ন বাম-প্রগতিশীল দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত থাকা অবস্থায় এ হামলা প্রমাণ করে মালিকপক্ষ কতটা ক্ষমতাধর ও বেপরোয়া। কিন্তু শ্রমিক ও এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় ও পরে সমাবেশ-মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “দিনাজপুরের ঘটনার পর কুষ্টিয়াতেও বয়লার বিস্ফোরণে দুইজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এর আগে গতবছরের সেপ্টেম্বরে টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়েলসে বয়লায় বিস্ফোরণে ৩১ জন শ্রমিক নিহত হন। দিনাজপুরেই গত ৫ বছরে ৭টি কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। অথচ কোথাও মালিকের শাস্তি হচ্ছে না, বয়লারগুলো নিয়মিত পরিদর্শনের উদ্যোগ সরকারের নেই, নিহত-আহত শ্রমিকরা সত্যিকার অর্থে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না।”
নেতৃবৃন্দ দিনাজপুরে সমাবেশে হামলার নির্দেশদাতা ও বয়লার বিস্ফোরণে শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ী মালিকের গ্রেপ্তার-বিচার, নিহত-আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও কারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অব্যাহত রাখতে শ্রমিক জনতার প্রতি আহ্বান জানান।