আজ ২৪ এপ্রিল। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আট তলা রানা প্লাজা ভেঙ্গে পড়লে নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক, আহত হন আরও হাজার খানেক শ্রমিক, যারা ওই ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। ভবনে ফাটল ধরার পরও শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ফলে এটি ছিল আসলে একটি হত্যাকান্ড। এমন ভয়াবহ একটি ঘটনার চার বছর অতিক্রান্ত হলেও আজও নিহত-আহত শ্রমিকরা তাঁদের বিচার পাননি। রানা প্লাজার মালিক, যুবলীগের নেতা সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করলেও এখন পর্যন্ত মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি।
এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এবং নিহত শহীদদের স্মরণ করতে আজ গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সকাল ১০টায় রানা প্লাজা চত্ত্বরে ফুল দিতে গেলে পুলিশ বাধা প্রদান করে। নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। অধিকার আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করতে চাইলেও পুলিশ শুরুতে তা করতে দেয়নি। পরবর্তীতে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে মাল্যদান এবং সমাবেশ করা হয়।
এক বিবৃতিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক কমরেড জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মালিকের স্বার্থ রক্ষা করতেই সরকার সবকিছু করছে। তাই চার বছর অতিক্রান্ত হবার পরও রানা প্লাজার মালিকের বিচার হয়নি, হাজার হাজার আহত শ্রমিকের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ সরকার দেয়নি। অথচ যারা এর প্রতিবাদ করছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে এবং গ্রেফতার করে নানাভাবে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নে শিকার হতে হতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়। সরকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নিয়েও টালবাহানা করছে। অধিকার বলতে শ্রমিকদের কিছু নেই। অথচ শ্রমিকদের রক্তের উপর দাঁড়িয়েই সরকার প্রতিদিন মধ্যম আয়ের দেশ আর ডিজিটাল বাংলাদেশের গল্প শোনাচ্ছে।’
কমরেড জহিরুল ইসলাম অবিলম্বে রানা প্লাজায় নিহত-আহত শ্রমিকদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান, হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার-বিচার দাবি করেন। একই সাথে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মোট মজুরি, সকল কারখানায় ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করারও দাবি জানান।
আজকের কর্মসূচিতে গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোশরেফা মিশু, প্রকাশ দত্ত, শামীম ইমাম, শ্যাম, , সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।