শ্রমিকদের বকেয়া অবিলম্বে পরিশোধ করুন
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের ১২ সপ্তাহের মজুরি ও কর্মচারীদের ৩ মাসের বেতন অবিলম্বে পরিশোধ, ২০১৫ সালের মজুরি কমিশন কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত-মৃত শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি বাবদ ২০১৩ সাল থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ আন্দোলনরত শ্রমিকদের ৯দফা দাবির সমর্থনে বাংলাদেশ শ্রমিক র্কমচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে ১১ মে শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জহিরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল রায়, শ্রমিকনেতা মানস নন্দী, শফিউদ্দিন কবির প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ২৬টি পাটকলের শ্রমিকদের গত ১২ সপ্তাহের মজুরি ও তিন মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। ২০১৩ সাল থেকে অবসরপ্রাপ্ত ও মৃত শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, বকেয়া মজুরি না পাওয়ায় শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহার-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েও সরকার ও বিজেএমসি তা ভঙ্গ করেছে। এখন পর্যন্ত বকেয়া পরিশোধে কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছেনা।বরং লোকসানের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলগুলো পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ) খাতে ছেড়ে দেয়া হবে- –পাটমন্ত্রীর এ ঘোষণা সরকারের উদ্দেশ্য ও সদিচ্ছা নিয়ে শ্রমিকদের আরো উদ্বিগ্ন ও সন্দিহান করে তুলেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলগুলোর লোকসানের কারণ সরকারের ভ্রান্ত নীতি, বিশ্বব্যাংকের পাটশিল্প ধ্বংসের পরামর্শ বাস্তবায়ন, সরকারের উচ্চ মহলের যোগসাজশে বিজেএমসি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি-লুটপাট, অব্যবস্থাপনা ও মাথাভারী প্রশাসন। এ সমস্যাগুলো নিরসনের উদ্যোগ নিলে সহজেই পাটখাতকে লাভজনক করা সম্ভব। কিন্তু সে পদক্ষেপ না নিয়ে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট লোকসানের অজুহাতে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলগুলোকে পিপিপি খাতে ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব কার্যতঃ দেশের বৃহৎ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর স্বার্থে পাটখাতকে পরিপূর্ণভাবে বেসরকারীকরণের গভীর ষড়যন্ত্রেরই অংশ।”
নেতৃবৃন্দ পাটকল শ্রমিকদের ঘোষিত অনির্দিষ্টকাল ব্যাপী শ্রমিক ধর্মঘট ও রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচীর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধসহ ৯ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জোর দাবি জানান।