দিনভর গণশুনানীতে বাম জোটের প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা – ‘ভোট ডাকাতি’ বললে খুব কমই বলা হবে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন পরবর্তী নানা ধরনের অনিয়ম, অভিজ্ঞতা ও সুনির্দিষ্ট ঘটনাবলী শোনার জন্য ১১ জানুয়ারি শুক্রবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গণশুনানী করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গণশুনানীতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ৮২ জন প্রার্থী তাদের অভিজ্ঞতা ও ভোটের চিত্র তুলে ধরেন।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানীতে ৮২ জন প্রার্থী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি, জবর দখল ও অনিয়মের সুনির্দিষ্ট চিত্র তুলে ধরেন। এসময় সকলের কণ্ঠেই একথা প্রতিধ্বনিত হয় যে, কোটি কোটি মানুষকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করে যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তা মোটেই জনমতের প্রতিফলন নয়। তারা বলেন, এই নির্বাচনকে ‘ভোট ডাকাতি’ বললে খুব কমই বলা হবে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসের কাছে পরাস্ত জনগণের ভোটাধিকার। তাঁরা জনগণের ভোটাধিকার অর্জনের সংগ্রামে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
গণশুনানীর সমাপনী বক্তব্যে মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন নিয়ে বহু অভিযোগ আছে, এটি নজিরবিহীন একটি ভুয়া ভোটের নির্বাচন। তিনি বলেন, গণশুনানীর এসব বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করে আমরা আমাদের করণীয় নির্ধারণ করব। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল, সংসদ বাতিল করে দল নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে বামপন্থিরা রাজপথে থেকেই লড়াইকে এগিয়ে নিবে। তিনি এই লড়াইয়ে দেশবাসীকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
গণশুনানীতে বাসদ (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক। গণশুনানীতে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
গণশুনানীতে প্রার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দিনাজপুরের রেয়াজুল ইসলাম রাজু, নীলফামারীর ইউনুস আলী, লালমনিরহাটের আনোয়ার বাবুল, রংপুুরের অধ্যাপক কামরুজ্জামান, সাদেক হোসেন, মমিনুল ইসলাম, কুড়িগ্রামের উপেন্দ্র নাথ রায়, আবুল বাসার মঞ্জু, গাইবান্ধার মিহির ঘোষ, গোলাম রাব্বানী, শামিউল আলম রাসু, জয়পুরহাটের অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ, বগুড়ার আমিনুল ফরিদ, সন্তোষ পাল, রঞ্জন দে, লিয়াকত আলী, নওগাঁর ডা. ফজলুর রহমান, রাজশাহীর এনামুল হক, আলফাজ হোসেন যুবরাজ, সিরাজগঞ্জের নবকুমার কর্মকার, মোস্তফা নূরুল আমীন, আব্দুল আলিম, কুষ্টিয়ার শফিউর রহমান শফি, ঝিনাইদহের অ্যাড. আসাদুর রহমান, বাগেরহাটের খান সেকান্দার আলী, শরিফুজ্জামান শরিফ, খুলনার এইচ এম শাহাদাত, জনার্দন দত্ত নান্টু, সাতক্ষীরার আজিজুর রহমান, পটুয়াখালীর মোতালেব মোল্লা, জহিরুল ইসলাম সবুজ, বরিশালের আব্দুস সাত্তার, পিরোজপুরের ডা. তপন বসু, দিলীপ পাইক, টাঙ্গাইলের জাহিদ হোসেন খান, জামালপুরের আলী আক্কাস, ময়মনসিংহের অ্যাড. এমদাদুল হক মিল্লাত, হারুন আল বারী, নেত্রকোনার মোস্তাক আহমেদ, জলি তালুকদার, সজিব সরকার রতন, কিশোরগঞ্জের ডা. এনামুল হক ইদ্রিস, ডা. খন্দকার মোসলেউদ্দিন, মানিকগঞ্জের রফিকুল ইসলাম অভি, ঢাকার আবু তাহের হোসেন (বকুল), খালেকুজ্জামান লিপন, সম্পা বসু, জোনায়েদ সাকি, আহসান হাবীব লাবলু, রিয়াজ উদ্দিন, ডা. সাজেদুল হক রুবেল, নাঈমা খালেদ মনিকা, আহসান হবীব বুলবুল, গাজীপুরের রাহাত আহমেদ, মফিজ উদ্দিন আহমেদ, মানবেন্দ্র দেব, নরসিংদীর কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, নারায়ণগঞ্জের আব্দুস সালাম বাবুল, আবু নাঈম বিপ্লব, ফরিদপুরের রফিকুজ্জামান লায়েক, গোপালগঞ্জের ইসহাক মোল্লা, সুনামগঞ্জের নিরঞ্জন দাস খোকন, সিলেটের প্রণব জ্যোতি পাল, মৌলভীবাজারের প্রসান্ত দেব সানা, মইনুর রহমান মগনু, হবিগঞ্জের পিযুষ চক্রবর্তী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহরিয়ার মোহাম্মদ ফিরোজ, কুমিল্লার আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, চাঁদপুরের শাহজাহান তালুকদার, ফেনীর জসিম উদ্দিন, হারাধন চক্রবর্তী, চট্টগ্রামের হাসান মারুফ রুমি, অপু দাস গুপ্ত, রাঙ্গামাটির জুই চাকমা প্রমুখ।