রুশ বিপ্লবের শতবর্ষে
আলী মো. আবু নাঈম
এ দেশের যত
মুক্তিপিয়াসী প্রাণ
কান পেতে শোনো
আমাদের এই গান।
গল্প তো নয় –
নয় কোনো রূপকথা,
শ্রমিক কৃষক মেহনতি যত
এক হয়েছিল সেথা।।
শোনো সেই দেশ –
রুশ দেশ ছিল যার নাম!
সেই দেশে এক
হয়েছিল সংগ্রাম।
মাটির পৃথিবী
স্বর্গ বানাবে বলে,
যত শ্রমজীবী গরিব মানুষ
সোভিয়েত গড়ে তোলে।
ওরা নাকি সব
বলশেভিকের দল,
শোষকের হাত ভেঙে
দেবে বুকে আদর্শ সম্বল।
যত না বিভেদ বৈষম্য
নিপীড়ন হবে দূর
ইতিহাস ছেনে মার্কস এঙ্গেলস
বাজালেন সেই সুর।
সেই গান গায় লেনিন স্ট্যালিন
শতেক বছর আগে
হাতে তুলে নিয়ে রক্ত পতাকা
রাশিয়ার লোকে জাগে।
দিকে দিকে সেই ঢেউ যায় ছুটে
ডাক ওঠে দিকে দিকে,
মানুষের মতো বাঁচবার লাগি
কত দেশ নাম লেখে।
ধুঁকে ধুঁকে যারা মরে বেঁচে আছি
এই গান তারা শোনো,
এ পৃথিবী আজ মৃত্যুর মুখে
ধ্বংসের দিন গোনো …।
ইতিহাস ডাক দিয়ে দিয়ে যায়,
মানুষের এত বলিদান সব
বিফল হবে কি হায়?
ইতিহাস কথা কয়,
মুক্তিপিয়াসী মানুষের জয়
হবে হবে নিশ্চয়!!!!
কমরেড লেনিন
ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য সোমা
মেঘের ওপার থেকে বজ্রনিনাদ ধ্বনি বাজে,
তরঙ্গ উত্তাল প্রশান্ত সাগরের মাঝে –
দৃঢ় কদম, বুকে বল,
ঐ সৈন্যদল অবিচল,
আছে সবার সামনে দাঁড়িয়ে – কমরেড লেনিন!
আছে রক্তপতাকা হাতে দাঁড়িয়ে – কমরেড লেনিন!!
প্লাবন, মড়ক, ক্ষুধা, মৃত্যুর সাথে লড়ে লড়ে
উদ্বেগ, বিভীষিকা, আতঙ্ক গেছে ছেড়ে
ছেঁড়া পোষাকের মজুর দল,
তবু চোখগুলো জ্বল জ্বল,
দেখ তাদের রয়েছে হাতিয়ার – কমরেড লেনিন!
আছে রক্তপতাকা হাতে দাঁড়িয়ে – কমরেড লেনিন!!
সোনালী শস্য ক্ষেতে ছায়া পড়ে শকুনের ডানার
সময় গিয়েছে চলে, দুঃস্বপ্নের রাত টানার।
অতীত গেছে, অতীত যাক,
দুঃস্বপ্নেরা সেখানে থাক,
দিলো অনাগত কালের ডাক – কমরেড লেনিন!
আছে রক্তপতাকা হাতে দাঁড়িয়ে – কমরেড লেনিন!!
ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ পথে কদমে কদমে বাড়ে গতি
দমকা ঝড়ো হাওয়া রাত জেগে হলো আজ সাথী,
সামনে পাহাড়, সামনে খাদ
আছে মৃত্যুর নোনা স্বাদ,
তবু দুনিয়া কাঁপানো দিল ডাক – কমরেড লেনিন!
আছে রক্তপতাকা হাতে দাঁড়িয়ে – কমরেড লেনিন!!
এবার তুমি রুশ বসন্তে এসো
ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য
এবার তুমি রুশ বসন্তে এসো
দেখে যাও মানুষ হতে পারে কত বড়
এবার তুমি বাঁচতে চাইবে ঠিক
স্ট্যালিন যুগ বলবে তোমায় ‘লড়ো তুমি লড়ো’।
কাটছে জমি, ঠেলছে মাটি, বুনছে ফসল মেয়েছেলেতে
সারাদেশে লাগলো দোলা নতুন দিনের ইট বসাতে
বঞ্চিত আর লাঞ্ছিতেরা চাষা-ভুখা, নাঙ্গা-মজুর
গৌরবে সব তুললো মাথা, ভৃত্যেরা আজ বীর বাহাদুর
আগে সবাই শ্রম দিয়েছে মর্যাদা কোথাও মেলেনি
স্ট্যালিন যুগে শ্রমই মহান, শ্রমিকেরই জয়ধ্বনি।
তোমায় আমি নিয়ে যাবো স্তাখানভের কাছে
কয়লা খনির সাধারণ এক মজুর ছিলো যে
এক নতুন রাস্তা খুলে দিয়ে কয়লা তোলার হার
অনেকখানি বাড়িয়ে দিলো সে।
কিংবা তুমি যেতে পারো দেমচেঙ্কোর কাছে
বীট ফলানোর রেকর্ডকে যে ছাড়িয়ে গিয়েছিলো
দুনিয়ার সব কৃষককে সে জানিয়ে দিলো হেসে
কি পারো না, রুশ মেয়েদের বলো!
মাইনে ধরা-বাঁধা কাজের বিরক্তি হতাশা
দেমচেঙ্কো-স্তাখানভের জীবনে পাবে না
তবে তারা কি পেতো তাই ভাবছো তুমি বসে
ভাবতে পারো উত্তর মিলবে না।
স্ট্যালিন যুগের স্কুল ছাত্র দুর্বার-দুর্দম
ছুটি মানে তাদের কাছে নতুন অভিযান
কেউ বা যাবে উত্তরমেরু, কেউ বা এভারেস্ট
কেউ বা যাবে খাটতে গ্রামে, কেউ বাঁধবে গান।
ভাবছো তুমি বলছি আমি রূপকথার গল্প
বানিয়ে বানিয়ে বলছি আমি মিথ্যে সকল কথা
এমন কখনও হয় নাকি আর হতে কি তা পারে?
এগুলো সব গুল-বানোয়াট এক্কেবারে যা-তা!
বন্ধু তুমি সেই সময়টা বুঝতেও পারবে না
আজকের এই ছোট মানুষ ছোট কাজের যুগে –
সোভিয়েতের আকাশ ছিলো সবার চেয়ে বড়ো
সোভিয়েতের মানুষ ছিলো ভোরের জন্য জেগে।