রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সুপারিশের প্রতিবাদে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার উদ্যোগে ৮ ফেব্রুয়ারি ’১৬ দুপুর ১২.৩০ টায় সিলেট রেল স্টেশনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্র ঘোষিত এই বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচির পূর্বে একটি মিছিল সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে জিন্দাবাজার-সিটি পয়েন্ট-পুরান পুল হয়ে রেল স্টেশনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার সদস্য জেলার সদস্য এডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েবের সভাপতিত্বে এবং অনীক ধরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টি সিলেট জেলার সদস্য সুশান্ত সিনহা, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সাইদুল, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলার সংগঠক ইশরাত রাহী রিশতা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রুবাইয়াৎ আহমেদ, শাবিপ্রবি শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ রুদ্র প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রেলখাতে লোকসান কমানো ও যাত্রীসেবা মান বাড়ানোর নামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির যে সুপারিশ করা হয়েছে তা অযৌক্তিক। এ রকমভাবে ২০১২ সালেও যাত্রীসেবা মান বাড়ানোর নামে রেলের ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। তখন যুক্তি করা হয়েছিল যে, রেলের বার্ষিক ৮’শ কোটি টাকার লোকসান রোধ এবং যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু গত ৪ বছরের বাস্তব চিত্র হলো রেলের যাত্রী সেবার মান যেমন কমেছে তার সাথে সাথে বাৎসরিক লোকসানের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯’শ কোটি টাকা। ফলে যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধি করে রেলের আধুনিকায়ন কিংবা সম্প্রসারণ অথবা লোকসান কোনটার ই সমাধান সম্ভব নয়। তাহলে বর্তমান সরকার পুণরায় রেলের বাড়া বৃদ্ধির চেষ্ঠা করছে কেন? বাস্তবে মহাজোট সরকার একটি চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক পন্থায় জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে দেশি-বিদেশি লোটেরাদের সহযোগিতায়। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে একদিকে যেমন চাল-ডাল-তেল, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য দফায় দফায় বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে সকল ধরণের বিরোধী মতকে দমন করছে। তাই জনমনে চূড়ান্ত বিক্ষোভ বিরাজ করছে। এই অবস্থায় মহাজোট সরকারের ক্ষমতায় ঠিকে থাকার একমাত্র হাতিয়ার হলো দেশি-বিদেশি লোটেরাদের অকুন্ঠ সমর্থন। তাই রেলের কাঠামোগত সংস্কারের নামে বেসরকারিকরণের অংশ হিসেবে এডিবি প্রদত্ত ঋণের শর্ত হিসেবে ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়টি সম্পূর্ণ আড়ালে রেখে লোকসান ও যাত্রীসেবা মান বাড়ানোর যে যুক্তি, তা চরম মিথ্যাচার ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপকৌশল মাত্র।
সরকার যদি রেলের নানা দুর্নীতি, লুটপাট ও অপচয়মূলক প্রকল্প বন্ধ তথা অবৈধ দখলে থাকা রেলের ১২,১০০ একর জমি উদ্ধার, ২৩টি মন্ত্রনালয় ও বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে রেলের ১২,৬১০ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা আদায় করলে রেলকে আধুনিকায়ন ও রেলখাতকে লাভজনক করা সম্ভব। এজন্য দাতা সংস্থার কাছেও হাত পাতার দরকার নেই। এর সাথে সাথে সিলেট-চট্টগ্রাম, সিলেট-ঢাকা রুটে ডাবল লাইন চালু, নতুন বগি ও ইাঞ্জন চালুও জরুরি।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রক্রিয়া থেকে সরকারকে সরে আসার জন্য এবং এর বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।