“মাদক নির্মূলের নামে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে বিনা বিচারে হত্যার লাইসেন্স তুলে দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের আগে একদিকে সস্তা জনপ্রিয়তা ও বাহবা কুড়াতে চায়, অন্যদিকে সমাজে আতংকের পরিবেশ সৃষ্টি করে সরকারবিরোধী আন্দোলন দমন করতে চায়। অথচ মাদক সাম্রাজ্যের গডফাদারদের ধরা হচ্ছে না, সরকারী দলে ও পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে মাদক বাণিজ্যের পৃষ্ঠপোষক-সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।” চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ক্রসফায়ারের নামে বিনা বিচারে হত্যা বন্ধ এবং মাদক ব্যবসার গডফাদারদের গ্রেপ্তার-বিচারের দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে ৭ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক প্রমুখ। সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “দেশে দীর্ঘদিন ধরে মাদকব্যবসা বিস্তার লাভ করে মাদকদ্রব্য সহজলভ্য পণ্যে পরিণত হয়েছে এবং এক ভয়াবহ জাতীয় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যেকোনো বিবেকবান মানুষ মাদকবিরোধী অভিযান ও কঠোর পদক্ষেপকে স্বাগত জানায়। কিন্তু মাদক নির্মূলের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ বিচার পাওয়ার অধিকার এমনকি মাদক ব্যবসায়ীদেরও আছে। আদালতে প্রমাণ করা ছাড়া শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে বা সন্দেহের বশে খুন করার অবাধ লাইসেন্স দেয়া হলে ভুলক্রমে বা ইচ্ছাকৃতভাবে যেকোন নির্দোষ মানুষ এর শিকার হতে পারেন। অপরাধ দমনের নামে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে খুনী বাহিনীতে পরিণত করা হলে জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা থাকে। এর মধ্য দিয়ে সরকার বিরোধীদের অপরাধী আখ্যা দিয়ে নির্বিচারে খুন করার ক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে। এই সরকার এবং পূর্বের সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্রসফায়ার-গুম নাম দিয়ে অতীতে এই ধরণের বহু রাজনৈতিক হত্যাকান্ড চালিয়েছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে অব্যাহত বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম মহাজোট সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ।”
নেতৃবৃন্দ ক্রসফায়ার-এনকাউন্টারের নামে বেআইনী হত্যাকান্ডের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ও গণতন্ত্রমনা মানুেষর প্রতি আহ্বান জানান।