২মে ২০১৫ বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, ঢাকা নগর শাখার উদ্যোগে প্রেসক্লাবের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষিকাকে লাঞ্ছনাকারি ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সম্পাদক আরজ মিয়াকে গ্রেফতার ও স্থায়ীভাবে বহিষ্কার এবং ছাত্রী লাঞ্ছনার দায়ে অভিযুক্ত হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার দায়িত্ব ও পদ থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা নগর শাখার সভাপতি এডভোকেট সুলতানা আক্তার রুবির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তাছলিমা নাজনিন সুরভীর পরিচালনায় এই প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্ত, নগর শাখার দপ্তর সম্পাদক ইভা মজুমদার, সদস্য মনি সরকার, তিথি চক্রবর্তী।
বক্তারা বলেন, সারা দেশের মানুষ নববর্ষে ঘটে যাওয়া নারী লাঞ্ছনার বিচার চেয়ে প্রতিবাদে মুখর হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন বরাবরের মত সে প্রতিবাদকে তোয়াক্কা না করে, অপরাধীদের নির্বিঘ্নে চলার পথ করে দিয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলিতে একের পর এক ঘটে চলেছে নারীর উপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা। নীতিহীন অনৈতিক কাজ করে বীর দর্পে যারা ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা আবার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও পাচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষককে লাঞ্ছনাকারি ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সম্পাদক আরজ মিয়াকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়িয়ে এনেছে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আরো কয়েকজন নেতা কর্মী। হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সেই শিক্ষক লাঞ্ছনার শিকার ছাত্রীসহ অনেককে দিনের পর দিন উত্যক্ত করেছে। কিন্তু তার কোনো প্রতিকার হয়নি।
বক্তারা আরো বলেন আজ একদিকে বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো অপরাধীদের বিভিন্নভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে, রাষ্ট্রীয় মদদ পাচ্ছে আবার সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের ভাষাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য অশ্লীলতা- অপসংস্কৃতি- মৌলবাদী চিন্তা- কূপমন্ডূকতাকেও সামন ভাবে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে। নারীর সম্মান, মর্যাদাকে পুরোপুরি ধুলায় লুণ্ঠিত করার শিক্ষা দেয়া হচ্ছে ছেলে মেয়েদের। ফলে আজ সমাজে যারা অপরাধ করে তারা বুক ফুলিয়ে চলে আর যারা ভুক্তভোগী তারা ভয়ে থাকে।
বক্তারা বলেন, এভাবে চলতে দিলে সমাজে মানুষ নামে কোনো প্রাণী থাকবে না। দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রগতিমনা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে । অভিভাবকদের সময় এসেছে এক হওয়ার। নয়তো তাদের সন্তানদের রক্ষা করা যাবে না। সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী ছাত্রলীগ নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার এবং ছাত্রী লাঞ্ছনাকারী শিক্ষককে আজীবন অপসারণের দাবি জানান। অন্যথায় এর বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে বক্তারা হুঁশিয়ারী জানান।