সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগরের ১০ম নগর কাউন্সিলে নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগরের ১০ম নগর কাউন্সিলে নবনির্বাচিত কমিটি পরিচিতি সভা ৪ মার্চ ২০১৬ বিকাল ৫ টায় নগরীর স্টুডিও থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয়। তাজনাহার রিপনের সভাপতিত্বে এবং আরিফ মঈনুদ্দিনের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস।
আগামী ৩০ মার্চ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৪র্থ কেন্দ্রীয় সম্মেলনের অংশ হিসেবে সারা দেশের থানা, নগর, জেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ধারাবাহিক কাউন্সিল ও সম্মেলনের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম নগরেও গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ১০ম নগর কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, “ দেশে প্রথিমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার প্রতিটি স্তরে ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে। স্কুলগুলোতে বেতন ফি, ভর্তি ফি ক্রমাগত বাড়ছে। ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে পিইসিই ও জেএসসি পরীক্ষা চালু শিক্ষার মানের অবনমনই শুধু ঘটায় নি, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মানসিক চাপ ও হয়রানি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি কোচিং ও গাইড বইয়ের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতার ফলে খরচ বেড়েছে বহুগুন। মাধ্যমিক স্তরেও একদিকে পরিকাঠামো নেই, অন্যদিকে বেড়েছে পর্যাপ্ত ও মানসম্মত শিক্ষকের অভাব। সৃজনশীলতার নামে পরীক্ষানির্ভর শিক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে। পিইসিই থেকে শুরু করে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন পর্যন্ত ফাঁস হচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে শিক্ষার নৈতিক মানকেই ধ্বংস করা হচ্ছে। পাবলিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে উচ্চশিক্ষায় বানিজ্যিকীকরণ নীতির প্রসার চলছে। চাহিদা অনুসারে অর্থ বরাদ্দ না দেওয়ার ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলছে ধঁকে ধুঁকে, বাড়ছে বেতন ও ভর্তি ফি। চলছে ইউজিসি’র ২০ বছর মেয়াদী কৌশলপত্রের বাস্তবায়ন। প্রাইভেট বশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সরকারি কোন নীতিমালা না থাকায় প্রতিবছর ইচ্ছেমত বাড়ছে ভর্তি ফি, সেমিষ্টার ফি। যুক্ত হচ্ছে নামে-বেনামে নানা ফি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংকট-শিক্ষক সংকট নিরসন না করে ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ চালু শিক্ষার গুণগত মানকেই ধ্বংস করছে।”
বক্তারা বলেন, “সবকিছু মিলে মানুষ তৈরি ও চরিত্র গঠন এখন আর শিক্ষার উদ্দেশ্য নয়, সার্টিফিকেট অর্জনই চরম লক্ষ্য। এর বিষময় ফল ছড়িয়ে পড়ছে পুরো সমাজ জুড়ে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট তার প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই শাসকশ্রেনীর শিক্ষা সংকোচন নীতির প্রতিটি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে লড়ছে। চট্টগ্রামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট বাতিলের দাবিতে সফল আন্দোলন, এস.এস.সি. পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বোর্ড নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সফল আন্দোলন, প্রশ্ন ফাঁস বন্ধের দাবিতে আমাদেও ধারাবাহিক আন্দোলন, সম্প্রতি চসিক পরিচালিত স্কলগুলোতে ভর্তুকি কমিয়ে বেতন ফি ও ভর্তি ফি দ্বিগুন হারে বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আমাদের চলমান আন্দোলন জনগণের মনে আশা সঞ্চার করেছে।”
বক্তারা আরো বলেন, “ সর্বস্তরে শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী ও বেগবান করার উদ্দেশ্যে ১০ম নগরন কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
সভা শেষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস নবনির্বাচিত কমিটিকে পরিচয় করিয়ে দেন। ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নবনির্বাচিত কমিটি নিম্নরূপঃ
সভাপতি – তাজনাহার রিপন
সহ- সভাপতি – মুক্তা ভট্টাচার্য
সাধারন সম্পাদক – আরিফ মঈনুদ্দিন
সাংগঠনিক সম্পাদক – দীপা মজুমদার
দপ্তর সম্পাদক – মোঃ সাইয়েম
অর্থ সম্পাদক – প্রনব দে
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক – কাজী সাঈদ রানা
স্কুল বিষয়ক সম্পাদক – জয়তু সুশীল
পাঠাগার সম্পাদক – রাজেশ্বর দাশগুপ্ত
সদস্য – অর্পন পাল, আয়েন উদ্দিন, রামপ্রসাদ দে ও নরেন সাহা