Monday, December 23, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদ`শোষণমুক্তির লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান'

`শোষণমুক্তির লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান’

আজ মহান মে দিবস। শ্রমিকশ্রেণির লড়াই-সংগ্রামের ঐতিহাসিক দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন ও রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে জীবনদানের ইতিহাস আজও অমলিন। সেই শহিদদের স্মরণে ও মালিকীব্যবস্থা থেকে শ্রমিকমুক্তির লক্ষ্যে আজও দেশে দেশে শ্রমিকরা তাদের দাবিতে এই দিনে মাঠে নামে, মিছিল-সমাবেশ করে। শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদের লক্ষ্যে এই দিন শ্রমিকদেরকে নতুনভাবে জাগিয়ে দিয়ে যায়।
আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে সকাল ১১টায় মে দিবসের মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনের তোপখানা রোডস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সংগঠনের পতাকা, লাল পতাকা ও দাবিসম্বলিত ফেস্টুনে সজ্জিত একটি মিছিল পুরানো পল্টন মোড় ঘুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি জহিরুল ইসলাম। সংগঠনের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ও ঢাকা নগর শাখার আহ্বায়ক রাজু আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মানস নন্দী, বাসদ (মার্কসবাদী) ঢাকা নগরের ইনচার্জ নাঈমা খালেদ মনিকা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ভজন বিশ্বাস।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “সারা বিশ্বের শ্রমিকশ্রেণির তথা মুক্তিকামী মানুষের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। শ্রমশোষণ অবসানের লক্ষ্যে সংগঠিত হওয়ার এই দিনে শ্রমিকরা সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের সোচ্চার দাবি তুলে ধরে। কিন্তু মালিকশ্রেণি ও শাসকগোষ্ঠী এই দিনের সত্যিকার তাৎপর্যকে ভুলিয়ে রাখতে নানারকম অপসংস্কৃতির জাল বিস্তারের চেষ্টা করছে। মালিকশ্রেণির ষড়যন্ত্র ও সুবিধাবাদী নেতৃত্বের কারণে এই দিনের মূল চেতনাকে সামনে আনা হয় না। এখনও আমাদের দেশে শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের অধিকার বাস্তবায়িত হয়নি। শ্রমিকদেরকে জোরপূর্বক ১৪/১৬ ঘণ্টা বা ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশি খাটানো হয়। কিন্তু ন্যায্য মজুরি দেওয়া হয় না। বেতন-বোনাস, ছুটির দাবিতে আন্দোলনে নামলে তাদেরকে পুলিশি নির্যাতন এমনকি মৃত্যুর মুখেও পড়তে হয়। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার তেমন কোনো বালাই নেই। অগ্নিকাণ্ড, ভবন ধসে শ্রমিকের মৃত্যু যেন নিত্যকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেওয়া হয় না নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক। ফলে ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রেও শ্রমিকদেরকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত করা হয়। এসবের বিরুদ্ধে সংগঠিত হতে হবে।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল-চিনিকল বন্ধ করে তা মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে সরকার। বিশ্বব্যাপী বাজারি অর্থনীতির কাছে দেশীয় শিল্পকে তুলে দেওয়ার এই চক্রান্ত একটি দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-শ্রমিকদের উপরে চলছে চাঁদাবাজি, পুলিশি হয়রানি। প্রায় সকল সেক্টরের শ্রমজীবী মানুষদের শ্রমশোষণের মাধ্যমে পুঁজিপতিরা সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে। ফলে এই শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই গড়ে তুলতে সত্যিকারে চেতনাবাহী সংগঠনের নেতৃত্বে ব্যাপক শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই। আগামী দিনে সেই লড়াইয়ে সকলকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানাই।”
নেতৃবৃন্দ সমাবেশে আট ঘণ্টা কর্মদিবস, কাজ, ন্যায্য মজুরি, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, কারখানায় অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত, ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত, শ্রমিকদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশি হামলা বন্ধসহ ইত্যাদি দাবি জানান।
RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments