বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বগুড়ায় শ্রমিকলীগ নেতা ধর্ষক তুফান ও সহযোগিদের দৃষ্টন্তমূলক শাস্তির দাবিতে ১ আগস্ট’১৭ বিকাল সাড়ে ৪টায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত ও পরিচালনা করেন নগর শাখার সদস্য সুস্মিতা রায় সুপ্তি। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস পপি ও প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক আফসানা লুনা।
সমাবেশে সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, বগুড়ায় কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ভর্তি ইচ্ছুক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে সন্ত্রাসী ও গডফাদার শ্রমিকলীগ নেতা তুফান। আর ধর্ষণের ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার লক্ষ্যে সালিশের নামে তার আত্মীয় নারী কাউন্সিলর মার্জিয়া আক্তার মধ্যযুগীয় কায়দায় ঐ ছাত্রী ও তার মা’কে নির্যাতন করে এবং মাথা ন্যাড়া করে দেয় যা দেশবাসী পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছেন। এই ঘটনার তিনি তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানান। তিনি আরও বলেন, সরকার দলের নেতা কর্মীরা সারাদেশে নারী লাঞ্ছনাসহ নানা অপরাধের সাথে যুক্ত। কিন্তু সরকার তার কোনো বিচার না করে বরং অপরাধীদের পুরষ্কৃত করার যে নীতি গ্রহণ করেছে তার কারণেই বগুড়ায় এই ধরণের জঘন্য এবং ঔদ্ধত্বপূর্ণ ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। অপরাধীদের পুরস্কৃত করার বিপরীতে সরকারকে এই ঘটনার প্রধান আসামী তুফান ও তার সহযোগিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এই ধরনের ঘটনার পুণরাবৃত্তি বন্ধ করা সরকারে দায়িত্ব।
কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আফসানা লুনা বলেন, আমরা দেখেছি এ যাবৎকাল যত ঘটনা ঘটেছে, সেই সব ঘটনা একটিকে ছাড়িয়ে আর একটি ঘটনা ঘটেছে। তনু হত্যার ঘটনার পর নারীমুক্তি কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল। সরকার তার সুষ্ঠু বিচার করেনি। তনু’র মা’র কান্না এখনো শেষ হয়নি। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে সিলেটে দিনের আলোতে কুপিয়েছে ছাত্রলীগের ক্যাডার। বনানীতে নারী লাঞ্ছনার ঘটনারও বিচার প্রক্রিয়াধীন। এভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটছে। আর প্রভাবশালী গডফাদারদের ছত্রছায়ায় অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। বিচার না হওয়ায় দিন দিন অপরাধের মাত্রা বাড়ছে। ফলে খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, নিরাপত্তাহীনতা, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিতে জনজীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে নারীসমাজসহ সারাদেশের মানুষের নিরাপত্তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এই ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান অপরাধী তুফান ও সহযোগিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান এবং একই সাথে সারাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ হত্যার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।