বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকার ভাইরাস সংক্রমণের জন্য ছুটির সময় ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন। কিন্তু গার্মেন্টস মালিকেরা ৫ এপ্রিল কারখানা খুলবে বলে ঘোষণা দেন। এতে লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিক দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সংক্রমণের যে ঝুঁকির কারণে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হলো, গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে সেই ঝুঁকি পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যমান। কারণ গার্মেন্টস একটি শ্রমঘন শিল্প। অথচ, মালিকশ্রেণি শ্রমিকদের জীবনের দিকে না তাকিয়ে মুনাফার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকারও মালিকশ্রেণির স্বার্থে নিজেদের নীতি ঠিক করছে। এর আগেও লকডাউন ঘোষণার পূর্ব-মুহূর্ত পর্যন্ত গার্মেন্টস বন্ধের ব্যাপারে কোনো কথা বলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী গত ২৫ মার্চ যে ভাষণ দেন, সেখানেও এ ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করেননি। পরবর্তীতে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিবাদ করায় কিছু কারখানা ২৬ মার্চ, কিছু কারখানা ২৭ মার্চ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এবারও একই কা- ঘটলো। এর মধ্যে বিপুল সংখ্যক শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হবে বলে খোদ সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ধারণা করছে। গত দুদিন ধরে শ্রমিকের এই ঢল রাজপথে দেখা গেছে। পেটের দায়ে এতবড় স্বাস্থ্যঝুঁকি নিতে তারা বাধ্য হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে আবার গতকাল রাতে বিজিএমইএ সভাপতি মালিকদেরকে কারখানা বন্ধের অনুরোধ করেছেন। শ্রমিকদের সাথে এ এক নির্মম উপহাস। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে যে, সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ আরও বর্ধিত করা এবং এর টাকা শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে সরাসরি মালিকদের অ্যাকাউন্টে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টির জন্য তারা এ কাজ করছে। মুনাফার উদ্দেশ্যে এ ধরনের নিষ্ঠুর কাজ মালিকদের পক্ষেই সম্ভব।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বিবৃতিতে আরও বলেন, “কোনো অজুহাতেই শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না। অবিলম্বে শ্রমিকদের সবেতন ছুটি ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি।”