বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল রায় ১৯ এপ্রিল ২০২১ এক যুক্ত বিবৃতিতে শ্রম আইনের শ্রম ঘণ্টা ও ওভারটাইম সংক্রান্ত ১০০, ১০২ এবং ১০৫ ধারা ৬ মাসের জন্য স্থগিতের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “করোনা মহামারিতে সরকার শ্রমিকের সুরক্ষা না দিয়ে শ্রম ঘণ্টা ও ওভারটাইম সংক্রান্ত ধারা স্থগিত করে মূলত মালিকশ্রেণির স্বার্থকেই রক্ষা করছে। এতে মালিকরা তাদের ইচ্ছামতো অধিক সময় শ্রমিকদের খাটিয়ে নিবে। কিন্তু তাদের ন্যায্য পাওনা দিবে না। ফলে অল্প শ্রমিকরাই বেশি উৎপাদনের জন্য বাধ্যতামূলক শ্রমে নিক্ষিপ্ত হবে ও বাকি শ্রমিকদের উপর ছাঁটাইয়ের খড়গ নেমে আসবে। যা একমাত্র দাসত্বমূলক শ্রমের সাথেই তুলনীয়। গত ১৭ এপ্রিল থেকে আগামী ৬ মাসের জন্য কার্যকর এই প্রজ্ঞাপন শ্রমিকস্বার্থ ও গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের মাধ্যমে অর্জিত অধিকারের পরিপন্থী। আমরা সরকারের এই প্রজ্ঞাপন জারির তীব্র নিন্দা জানাই।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “একদিকে সরকার করোনা সংক্রমণ রোধে মানুষের চিকিৎসার তেমন কোনো দায়িত্বই নেয়নি। আবার শ্রমিক-কৃষক, গরিব, মেহনতি মানুষের খাদ্য, রেশন, নগদ অর্থ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত না করেই হঠাৎ কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। ফলে মানুষদেরকে দিশাহীন অবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, গণপরিবহন ইত্যাদি বন্ধ করা হলো। অথচ শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষার কথা বিবেচনা না করে মালিকশ্রেণির স্বার্থে শিল্প-কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। এর পরে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’-র মতো শ্রম আইনের শ্রম ঘণ্টা ও ওভারটাইম সংক্রান্ত ধারা স্থগিত করে শ্রমিকদেরকে নির্মম শোষণের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হলো। এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।”
পরিশেষে নেতৃবৃন্দ শ্রমিকস্বার্থবিরোধী এই প্রজ্ঞাপন বাতিল এবং শ্রম ঘণ্টা, ওভারটাইম সম্পর্কিত ১০০, ১০২, ১০৫ ধারাসমূহ পুনরায় বহাল রাখার দাবি জানান।