Saturday, November 23, 2024
Homeসাম্যবাদসাম্যবাদ সেপ্টেম্বর ২০১৭সংগঠন ও আন্দোলন সংবাদ — সাম্যবাদ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সংগঠন ও আন্দোলন সংবাদ — সাম্যবাদ সেপ্টেম্বর ২০১৭

 

বিচারব্যবস্থার প্রতি আওয়ামী সরকারের
ফ্যাসিবাদী মনোভাব উন্মোচিত হয়েছে

BAM-Morca

গত ২২ আগষ্ট সকালে তোপখানা রোডে নির্মল সেন মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে কেন্দ্র করে  প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা  প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে বলে বাস্তবে উচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এই রায়কে কেন্দ্র করে সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদকের মাননীয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে সাক্ষাৎ, রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত সরকারে নীতি-নির্ধারকদের দৌড়ঝাপ এবং রায় ও পর্যবেক্ষণ পরিবর্তনে মাননীয় প্রধান বিচারপতি তথা উচ্চ আদালতের উপর বহুমুখী চাপ, হুমকি, অপবাদ ও চরিত্রহনের মাধ্যমে বলপ্রয়োগের এক অপরাজনীতির জমিন উর্বর করে তুলছে। বাস্তবে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরী করা হচ্ছে যাতে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগে বাধ্য হন। এটা সরকার ও সরকারি দলের চরম অসহিষ্ণু, অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ।

এটা অত্যন্ত পরিস্কার যে, অতীতের সরকারগুলোর ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারও অপরাপর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মত বিচার বিভাগকেও তাদের আকাংখা পূরণের অনুগত প্রতিষ্ঠান হিসাবেই দেখতে চায়। এই সব চিন্তা ও তৎপরতার সাথে প্রকৃত প্রস্তাবে আইনের শাসনের কোন সম্পর্ক নেই।

আর আইন কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক রাষ্ট্রের লাভজনক পদে বহাল থেকে উচ্চ আদালতের এই রায় সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে যে বক্তব্য প্রদান করছেন তা তার ক্ষমতা ও এখতিয়ারের পরিপন্থী এবং গুরুতর আদালত অবমাননা। তার এই আচরণ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি হিসাবে নৈতিক শৃঙ্খলারও পরিপন্থী। তিনি কার্যত সরকার ও সরকারি দলের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গত ৩রা জুলাই আপিল বিভাগ কর্তৃক সর্বসম্মতভাবে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক এবং এই ঐতিহাসিক রায়ের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ ও পার্লামেন্টের হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার পক্ষে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক আকাংখার প্রতিফলন ঘটেছে। যুগান্তকারী এই রায়ের মধ্য দিয়ে নির্বাহী বিভাগ ও জনসম্মতিহীন সংসদের অনভিপ্রেত প্রভাব ও অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্বের বাইরে বিচার বিভাগের স্বাধীন ও কার্যকরী ভূমিকার ক্ষেত্র প্রসারিত হল। এই রায়ের মধ্য দিয়ে সরকার ও তাদের বিনা ভোটে নির্বাচিত সংসদের রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয় ঘটলেও এই রায় রাষ্ট্রের দুর্বল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বাধীন বিকাশে শক্তি ও আস্থা যোগাবে।

সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় বা পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে সরকার বা সরকারি দলের যদি কোন ভিন্নমত বা আপত্তি থাকে তা জানানো অথবা ‘রিভিউ’ চাওয়ারও আইনত বিধিবিধান রয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন বা আইনের শাসনের প্রতি যদি সরকারের নূন্যতম কোন অঙ্গীকার অবশিষ্ট থাকে তাহলে সরকার প্রথাগত আইনী পথেই তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারতেন। তা না করে সরকার ও সরকারি দল, মন্ত্রীবর্গ, তাদের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ ও তাদের আইনজীবীরা যেভাবে এই রায়, রায়ের পর্যবেক্ষণ, উচ্চ আদালত, এমনকি মাননীয় প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমনাত্মক বক্তব্য ও তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন তা উচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণার সামিল। তাদের বক্তব্য-বিবৃতি ইতিমধ্যে শিষ্টাচারেরও সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তাদের এমন তৎপরতা আদালত অবমাননার নজিরবিহীন সব উদাহরণও সৃষ্টি করছে। আইনসিদ্ধ পথে না হেঁটে যুদ্ধাংদেহী মনোভাব নিয়ে উচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে তারা যেভাবে তোপ দাগছেন তা বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিচার ব্যবস্থার মূলে কুঠারাঘাতের সামিল।

সংবাদ সম্মেলনে সরকার ও সরকারি দলকে বিচার বিভাগের অবশিষ্টাংশকে ধ্বংস করার এই আত্মঘাতি খেলা অনতিবিলম্বে বন্ধ করার উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়। একই সাথে প্রজাতন্ত্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বি হিসাবে দাঁড় না করিয়ে সাংবিধানিক নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বাধীন কার্যকরী ভূমিকা নিশ্চিত করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার সাথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেনবাম মোর্চার সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতা বাসদ (মার্কসবাদী) এর শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেত্রী বহ্নিশিখা জামালী, মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুদ্দীন কবীর আতিক, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, মমিনুর রহমান মমিন প্রমুখ।

২৪ আগস্ট : নারী নির্যাতনবিরোধী লড়াইয়ের চেতনা আজও অম্লান

Nari-mukti copy

২৪ আগস্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট দিনাজপুরের কিশোরী ইয়াসমিনকে পুলিশ গণধর্ষণ ও হত্যা করেছিল। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে গড়ে উঠেছিল ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব প্রতিরোধ আন্দোলন। শেষ পর্যন্ত ধর্ষক পুলিশদের ফাঁসি হয়। সেই থেকে এই দিনটিকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। দিবসটিকে স্মরণ করে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া ও নোয়াখালীসহ দেশব্যাপী মিছিল-সমাবেশ-আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইয়াসমিন হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে বুকের রক্ত ঢেলে লড়াইয়ের যে নজির স্থাপিত হয়েছিল, তা এদেশের ইতিহাসে ছিল এক বিরল ঘটনা। কিন্তু এত মহৎ আত্মত্যাগের পরও দেশে নারী নির্যাতনের চিত্র পাল্টায়নি। বরং তার মাত্রা তীব্রতা পেয়েছে। ঘরে-বাইরে নারী লাঞ্ছনার ঘটনা অহরহ ঘটছেই। আজও প্রতি মুহূর্তে নারীর জীবন সংকটময়, বিপর্যস্ত। ধর্ষণ, গণধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, পাচার, ধর্মীয় ফতোয়ার বলি হচ্ছে নারী। মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তি একদিকে নারীকে কূপমন্ডুক-কুসংস্কারগ্রস্ত রাখতে চাইছে, অন্যদিকে পুঁজিবাদ অপসংস্কৃতি-ভোগবাদকে ছড়িয়ে দিতে নারীকে ব্যবহার করছে। এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রতিটি বিবেকবান ও সচেতন মানুষের কর্তব্য। পাশাপাশি প্রয়োজন সকল প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক লড়াই। ২৪ আগস্টের চেতনা আমাদের মধ্যে যেন নারীর উপর সকল প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রেরণা তৈরি করে।

রক্তে লেখা ফুলবাড়ী বিদ্রোহের ইতিহাস ভোলা যায় না

A woman protestor demonstrates at Phulbari on 30 September 2006

২৬ আগস্ট, ২০০৬। উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত যেন ঘটেছিল সবুজে ঘেরা ফুলবাড়ীতে। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী। ফুলবাড়ীর মাটির নীচে আছে উন্নত কয়লা। বিস্ফোরণটা কয়লার ছিল না, ছিল মানুষের ক্ষোভের। লোভী শাসকরা অধিক মুনাফার আশায় এক অসম চুক্তিতে কয়লা তুলে দিতে চেয়েছিল এশিয়া এনার্জি নামের একটি কোম্পানির হাতে। যারা চেয়েছিল উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুলতে, লক্ষ লক্ষ মানুষকে উচ্ছেদ করে। এই অন্যায্য তৎপরতা মানতে পারেনি ফুলবাড়ীর সাধারণ মানুষ। ২৬ আগস্ট ছিল মহাসমাবেশ। সেদিন সংগ্রামী মানুষের ইস্পাতদৃঢ় শক্তিকে চিনেছিল শাসকের রক্তচক্ষু। হাজার হাজার নারী-পুরুষ, হাতে লাঠি-বটি-স্যান্ডেল নিয়ে ভয়হীন তীব্র চাহনি নিয়ে তাকিয়েছিল পুলিশ-বিডিআরের আধুনিক অস্ত্রের দিকে। ভয়ে পিছিয়ে গিয়েছিল জান্তার দল। বাপ-দাদার ভিটেমাটি আর সোনার ফসল ফলা জমি থেকে উচ্ছেদ করতে চেয়েছিল শাসকরা। তাই দেখে মানুষ সেদিন দাঁড়িয়েছিল সম্পদ আর মর্যাদা রক্ষার কঠিন শপথে। কে ছিল না সেই মিছিলে? শিশু থেকে বয়স্ক, ছাত্র থেকে শ্রমজীবী, শিক্ষক থেকে কৃষক। পরিস্থিতি দেখে তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকার শহরে জারি করেছিল কারফিউ, লেলিয়ে দিয়েছিল পেটোয়া বাহিনীকে, চালিয়েছিল গুলি। রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ফুলবাড়ির সবুজ ভূমি। বহু জীবনের দামে স্বাধীনতা এনেছে যে জাতি, প্রাণত্যাগে তার ভয় ছিল না। তাই তরিকুল, আলামীন, সালেকীনের প্রাণহীন নিথর দেহ নিয়েই এগিয়ে গিয়েছিল সংগ্রামী জনতার ঢল। আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে।
এমন তীব্র জনরোষ আটকানোর সামর্থ্য কোনো শাসকেরই থাকে না। তখনকার সরকারেরও ছিল না। তারা নতি স্বীকার করল। এশিয়া এনার্জিকে বহিষ্কার করা, হত্যাকা-ের সাথে জড়িতদের শাস্তি, ক্ষতিপূরণ দেয়া, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলা বন্ধসহ ছয় দফা দাবি মেনে নেবার প্রতিশ্রুতি দিল। তখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ছিল বিরোধী দলের ভূমিকায়। তারাও বলল, ক্ষমতায় গেলে ছয় দফা বাস্তবায়ন করবে। ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ীতে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে রচিত হলো সংগ্রামের এক বীরত্বগাথা। এই আন্দোলনের পুরোভাগে নেতৃত্বকারী ভূমিকা পালন করেছিল তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
এ বছর ফুলবাড়ী দিবস ১১ বছরে পদার্পন করল। এই ১১ বছরে ক্ষমতার পট পরিবর্তন ঘটেছে। শাসকদের চেহারা পাল্টেছে। কিন্তু ফুলবাড়ীর জনগণের সাথে প্রতারণার ব্যাপারটি অপরিবর্তিতই থেকে গেছে। বিএনপি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। আওয়ামী লীগও দুই দফা ক্ষমতায় এসে একই কাজ করেছে। আজও এশিয়া এনার্জিকে বহিষ্কার করা হয়নি, আজও ওখানকার জনগণের হয়রানি বন্ধ হয়নি, মিথ্যা মামলা তুলে নেয়া হয়নি, এমনকি হত্যাকা-ের সাথে যারা যুক্ত তাদেরও বিচার হয়নি। বরং বিভিন্ন সময়ে নানা কৌশলে ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলার কথা শোনা গেছে। তবে এখনও ওই অঞ্চলের মানুষের সজাগ-সচেতন অবস্থা আছে বলেই শাসকেরা পেরে উঠেনি। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ফুলবাড়ী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী হবে তা হয়তো বলা মুশকিল, কিন্তু এই বীরোচিত লড়াই ওই অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে কী যে গভীর ছাপ ফেলেছে, তা সহজেই বোঝা যায়। সেই সময়ের একজন আন্দোলনকারী গোলবানুর একটি উক্তিতে ধরা পড়ে হার না মানা তেজ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “আমরা বাঁচি থাকতে এই চুক্তি পারবি না করতে। কি মনে করছে আমরা মরি যাব? আমরা যদি একটা মানুষ মরি যাই আমাদের ছাওয়াল পাওয়াল তিনটা বড় হবে। মায়ের ইতিহাস ধরে কি থাকবে না?” গোলবানুদের মতো মায়েরা আমাদের চারপাশে আছে বলে তরিকুল-সালেকীনদের জন্ম হয়েছিল। হয়তো আরও বহু তাজা প্রাণ প্রস্তুত হচ্ছে। রক্তের দাগ এত সহজে মোছা যায় না, যাবে না।

হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণাসহ ১২ দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত হলো আঞ্চলিক হাওর কনভেনশন

Hawar convention 1 copy

কয়েক মাস আগে পাহাড়ি ঢল থেকে সৃষ্ট বন্যায় ভেসে যায় সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলের ফসল। হাজার হাজার কৃষক সর্বস্বান্ত হয়। লাখো মানুষ নিরুপায় ও অসহায় হয়ে এখন আস্তে আস্তে শহরের দিকে রওনা হচ্ছে কাজের আশায়। বাসদ (মার্কসবাদী) কৃষকদের এ সমস্যা সমাধানের জন্য ১২ দফা দাবি নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার চালায় এবং প্রায় আট হাজার স্বাক্ষর সংগ্রহ করে গত ১৭ জুলাই জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ম্মারকলিপি পেশ করে।

এরপর গত ২৫ আগস্ট সুনামগঞ্জ শহরের আবুল হোসেন মিলনায়তনে আড়াই শতাধিক কৃষকের উপস্থিতিতে বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট অঞ্চলের উদ্যোগে আঞ্চলিক হাওর কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক কমরেড উজ্জ্ব ল রায় ও পরিচালনা করেন দলের সুনামগঞ্জ জেলার সংগঠক আল আমিন। বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, ‘জল ও পরিবেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট’র চেয়ারম্যান ম. ইনামুল হক, বিশিষ্ট নারীনেত্রী ও উদীচী সুনামগঞ্জ জেলার সভাপতি শীলা রায়, ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’ এর আহবায়ক এড. বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, সিপিবি সুনামগঞ্জ জেলার সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার, জাসদ সুনামগঞ্জ জেলার সভাপতি আ.ত.ম. সালেহ্, লেখক ও গবেষক সুখেন্দু সেন, ‘বাংলাদেশ আইনজীবী সমিতি’ সুনামগঞ্জ জেলার সভাপতি এড. রুহুল তুহিন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান, ‘দৈনিক কালের কণ্ঠ’ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শামস্ শামিম, ‘দৈনিক সুনামগঞ্জ খবর’ এর সম্পাদক পংকজ কান্তি দে, বাসদ (মার্কবাদী) হবিগঞ্জ জেলার সংগঠক শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সভাপতি দিপাল ভট্টাচার্য, দিরাইয়ের জেলে প্রতিনিধি আব্দুল হাই, ধর্মপাশার কৃষক প্রতিনিধি লিয়াকত আলী ও জেলে প্রতিনিধি রফিকুল এবং ছাত্র প্রতিনিধি ইমরান। কনভেনশনের শুরুতে ‘কনভেনশন পেপার’ পাঠ করেন আল আমিন। কনভেনশনে ধর্মপাশা, দিরাই, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর উপজেলা ও সিলেট জেলা মিছিল সহকারে উপস্থিত হয়। কনভেনশনে ২য় অধিবেশনের শুরুতে বাউল শাহ আব্দুল করিমের গান পরিবেশন করেন বাউল কারিবউল্লাহ্।

কনভেনশনে ১২ দফা দাবি নিয়ে আরও ব্যাপকভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করা হয়।

অক্টোবর বিপ্লবের তাৎপর্যকে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে
— সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

‘অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদ্যাপন জাতীয় কমিটি’র উদ্যোগে গত ২৫ আগস্ট, বিকাল ৪টায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি গেমরুমে শিক্ষক-লেখক-বুদ্ধিজীবী-বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আহমদ রফিকের সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়ক হায়দার আকবর খান রনোর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। আরও আলোচনা করেন অধ্যাপক ড. অজয় রায়, সৈয়দ আবুল মকসুদ, ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক সফিউদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, শ্রেণি-পেশা ও সংস্কৃতি কর্মীদের সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ‘অক্টোবর বিপ্লব শতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি’। এই কমিটি কর্তৃক কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় আগামী ১ অক্টোবর শতবর্ষের কর্মসূচি শুরু হবে, ৭ নভেম্বর মহাসমাবেশ ও লালপতাকা মিছিলের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হবে। এই সময়ের মধ্যে দেশের প্রগতিশীল শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুর- ছাত্র-যুব-নারী-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো ঢাকায় সভা-সমাবেশ-প্রদর্শনী-সেমিনার-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানামাত্রিক কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া দেশের প্রতিটি জেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সমন্বয়ে অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উদ্যাপনের জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেবল অনুষ্ঠানসর্বস্বতা নয়, বরং এই মহান বিপ্লবের ঐতিহাসিক তাৎপর্য সকল মানুষের কাছে তুলে ধরে এদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষ্যেই এই জাতীয় কমিটি কর্মসূচি পালন করবে।’

বন্যার্তদের জন্য সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ‘স্যালাইন প্রজেক্ট’

21077345_377004772716881_7192860172738594082_n

সারাদেশে ভয়াবহ বন্যার কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে খাবার স্যালাইন বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। গত ২৭ আগস্ট বিকাল ৪টায় ডাকসু-তে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আকমল হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোশাহিদা সুলতানা।

উদ্বোধনী বক্তব্যে ড. আকমল হোসেন বলেন, ‘সারাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ যখন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সে সময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ত্রাণ তৎপরতা এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য স্যালাইন প্রজেক্ট খুবই প্রশংসনীয় উদোগ। এ ধরনের উদ্যোগে ছাত্র-ছাত্রীদের এগিয়ে আসা খুবই প্রয়োজন। কারণ প্রাকৃতির দুর্যোগ ও সামাজিক সংকট মোকাবেলায় শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে সংকটগ্রস্ত অসহায় মানুষেরা ভরসা পায় এবং সামাজিক মূল্যবোধের বিস্তার ঘটে।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের পক্ষ থেকে সকল দুর্গত অঞ্চলে মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন এবং প্রয়োজনীয় ঔষুধ সরবরাহের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্য স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্যালাইন প্রজেক্ট ও চলমান ত্রাণ তৎপরতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এর আগে গত ২৩ আগস্ট সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আগামী দুই মাস দেশব্যাপী শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এই সময় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যাক্রান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাউপকরণ — বই, খাতা, কলম, পেন্সিল সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি বন্যাদুর্গত শিক্ষার্থীদের এক বছরের বেতন-ফি মওকুফ, বিনামূল্যে শিক্ষাউপকরণ সরবরাহ, চার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনর্নির্মাণ-সংস্কারের দাবিতে কেন্দ্রীয়ভাবে এবং দেশব্যাপী গত ২৮ আগস্ট শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

বার্লিন সম্মেলন থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবি

berlin conference 2 copy

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে গত ১৯ ও ২০ আগস্ট দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সুন্দরবন সংহতি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক এক ইউরোপীয় সম্মেলন। বাংলাদেশ সরকার ভারতের সাথে যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ দুনিয়ার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে যুক্ত হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বসবাসরত বাংলাদেশি জনগোষ্ঠী।

ইউরোপের বিভিন্ন শহরে গড়ে ওঠা আন্দোলনকে সমন্বয়ের প্রয়োজন থেকে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি’র ইউরোপীয় একশন গ্রুপের আহ্বানে বার্লিন শহরের হাউস অব ডেমোক্রাসি’র এক হলে অনুষ্ঠিত হয় এই সম্মেলন। সম্মেলনে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইটালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে ও সুইডেন থেকে ৮০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। অংশ নেন তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘রামপাল প্রকল্প কেবল সুন্দরবন ধ্বংস করবে না, তা বাংলাদেশ-ভারতের আন্তঃসম্পর্কের মধ্যে একটি স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করবে।’ তিনি জ্বালানিসহ জনসম্পদের উপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। কনভেনশনে তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স জোনায়েদ সাকিও বক্তব্য রাখেন

দুদিনব্যাপী এ কনভেনশনে মোট আটটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, জার্মানির হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ভিলফ্রেড এন্ডলিসার, কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হার্টমুট বেরভোল্ফ, গ্রিনপিসের ক্রিসটিন ডোরেনব্রুক, লাইবনিজ ভূপদার্থবিদ্যা ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. আজিজুর রহমান, বিকল্প জ্বালানি গবেষক মাহবুব সুমন, জার্মান পরিবেশ ফোরামের এলিজাবেথ স্টাউড, পরিবেশ সাংবাদিক ক্যাথরিন ফিঙ্কে, ডেভিড ওয়েন্ড ও ভারতের পিপলস সায়েন্সের ড. সৌম্য দত্ত। বিভিন্ন পর্বে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন দেবাশীষ সরকার, ড. অনিমেষ গাইন, তানজিয়া ইসলাম ও ওয়াহেদ চৌধুরী।

কনভেনশনের শেষ অধিবেশনে বার্লিন ঘোষণা গৃহীত হয়। বার্লিন ঘোষণায় অবিলম্বে সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক ভারত-বাংলাদেশ যৌথ রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। ঘোষণায় বলা হয় যে, রামপাল প্রকল্প প্রজাতি ও প্রতিবেশ ধ্বংস করে মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যকার সম্পর্কের বিপত্তি ঘটাবে। সুন্দরবন ধ্বংস হলে ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সুরক্ষা ও স্থানীয় জীবনযাত্রা ভেঙ্গে পড়বে। ঘোষণায় আরও বলা হয়, অগ্রসর দুনিয়া যখন কয়লা বাদ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালনির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, বাংলাদেশ তখন কয়লাভিত্তিক নোংরা জ্বালানির পথ বেছে নিচ্ছে। ঘোষণায় বাংলাদেশ সরকারকে কয়লার বিকল্প নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি জ্বালানি খাতে কর্পোরেট স্বার্থকে রক্ষা না করার আহ্বান জানানো হয়। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০৪১ সালের মধ্যে বর্তমান ৩ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশে উনড়বীত করার সরকারি ঘোষণার সমালোচনা করে বলা হয়, এতে পরিবেশ ও প্রযুক্তিগত বিকাশকে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। বার্লিন ঘোষণায় ২০৪১ সালের মধ্যে ৫৫ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের যে পরিকল্পনা জাতীয় কমিটি দিয়েছে, তার প্রতি সমর্থন জানানো হয়। বার্লিন ঘোষণায় সমর্থন জানিয়ে ১০৩টি সংগঠন ও ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে গ্রিন পিস, ফ্রেন্ডস অব দা আর্থ, ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড ফাউন্ডেশন, থ্রি ফিফটি, লন্ডন মাইনিং নেটওয়ার্ক, কোল একশন নেটওয়ার্ক ইউকে,উইমেন ইনগেইজ ফরদি কমন ফিউচার, ব্যাংক ট্র্যাক, আর্থ ফরএভার ফাউন্ডেশন, ফয়েল ভেডান্ট, ম্যানগ্রোভ একশন গ্রুপ ইউএসএ, ওয়ার্ল্ড লাইফ ইমপ্যাক্ট, জার্মান রিসার্চ সেন্টর ফর জিও সায়েন্স, উইমেন আফ্রিকান এলায়েন্স, ফেমিনিস্ট নেটওয়ার্ক নেপাল, ক্লাইমেট এলায়েন্স জার্মানি ইত্যাদি।

সম্মেলনের চতুর্থ অধিবেশনে সুন্দরবন অঞ্চলে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল ও বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাব্যতা নিয়ে আন্দোলন ও সংহতি প্রকাশের লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন জার্মানির বাবুল সৈয়দ, যুক্তরাজ্যের ডা. মুখলিছুর রহমান, ড. আখতার সোবহান মাসরুর, ডা. রফিকুল হাসান, গোলাম কবির, ডা. সেলিম ভূঁইয়া ও ডা. সাহিদা সুলতানা, ইটালির শিপলু আহাত শামুল, ফ্রান্সের নিলয় সূত্রধর সুমন, সুইডেনের বসিত চৌধুরী, নরওয়ের আশরাফুল হক আবির ও নেদারল্যান্ডসের অনুপম সৈকত শান্ত প্রমুখ।

এই অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহকে নিয়ে তেল- গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ইউরোপীয় শাখা গঠন করা হয়। ইউরোপীয় শাখার সমন্বয়ক নির্বাচিত হন মোস্তফা ফারুক। জাতীয় কমিটির আন্দোলনের পক্ষে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে জনমত গড়ে তোলা, ইউরোপের রাজনৈতিক-সামাজিক শক্তিসমূহের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন ও বিভিন্ন দেশে গড়ে ওঠা জাতীয় কমিটির কার্যμমের মধ্যে সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে ইউরোপীয় শাখা কাজ করবে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নওগাঁ জেলা কমিটি গঠিত

গত ২৪ আগস্ট ’১৭ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, নওগাঁ জেলার ৫ম কাউন্সিল এবং কমিটি পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কাউন্সিলে আলোচনা করেন বাসদ (মার্কসবাদী) নওগাঁ জেলার সংগঠক অধাপক মু আ ব সিদ্দিকী বাদাম, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রহমান রায়হান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নওগাঁ জেলার সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান মিঠু।

কাঞ্চন সরকারকে আহ্বায়ক ও আবু সাঈদ হাবীবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি পরিচয় করিয়ে দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু।

সাম্যবাদ সেপ্টেম্বর ২০১৭

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments