Tuesday, December 24, 2024
Homeফিচারসমমর্যাদা ও মতপ্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করুন

সমমর্যাদা ও মতপ্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করুন

গত ৮ মার্চ বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে ঘরে বাইরে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং সমমর্যাদা ও মত প্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি নিয়ে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্তের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা নগরের সভাপতি তসলিমা আক্তার বিউটি, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ও ঢাকা নগরের সদস্য সচিব তৌফিকা লিজা এবং ঢাকা নগর কমিটির সদস্য নাজনিন আক্তার শারমিন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৮ মার্চের ইতিহাসের সাথে সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নাম এবং সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন যুক্ত। কিন্তু আজ আমরা দেখছি ক্লারা জেটকিন কিংবা সমাজতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে, সংগ্রামী তেজকে ম্লান করে দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে নারী দিবস পালন করা হচ্ছে। অথচ ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে দেশে দেশে নারীদের সমানাধিকার এবং ভোটাধিকারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে ২য় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন প্রতি বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। স্থির হয় মার্চ মাসের যে কোন একদিন দিবসটি পালন করা হবে। তার ভিত্তিতে অস্ট্রীয়া, ডেনমার্ক, জার্মান এবং সুইজারল্যান্ডের সমাজতান্ত্রিক নারী সংগঠনগুলির উদ্যোগে ১৯১১ সালের ১৯ মার্চ প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। পরবর্তীতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, মজুরী বৃদ্ধি এবং কাজের ঘণ্টা কমানোর দাবিতে ১৯০৮ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্কে দর্জি নারী শ্রমিকরা যে সফল ধর্মঘট করে তাকে স্বীকৃতি দিয়ে ১৯১৪ সালে কোপেনহেগেনের ৩য় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে নির্দিষ্টভাবে শ্রমজীবি নারীর ‘সমানাধিকারের দাবি দিবস’ হিসাবে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

বক্তারা আরো বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ঠিক করা হয়েছে ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’। অথচ করোনাকালে আমরা দেখেছি শ্রমজীবি নারীসহ সকল শ্রেণী পেশার নারীদের কি ভয়াবহ দুঃসময় পার করতে হয়েছে। কাজ হারানো; আয় কমে যাওয়া; কাজের অনিশ্চয়তা; পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ-গণধর্ষণ, নারী নিপীড়ন বৃদ্ধি পাওয়া; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নিরাপত্তাহীনতা এবং আর্থিক টানাপোড়নের কারণে বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়া; ধর্মীয় সভাগুলিতে নারীদের নিয়ে নানা প্রকার আপত্তিকর বক্তব্য রাখা ইত্যাদি নানা ঘটনা প্রমাণ করে এই করোনাকালে বা তার পরবর্তী সময়ে নারী সবচেয়ে বেশী প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, পুঁজিবাদ সাম্রাজ্যবাদ উচ্ছেদ না হলে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা দূর হবে না। সমাজ থেকে বৈষম্য দূর হবে না। তাই আজ নারী দিবসের যথার্থতা তুলে ধরতে হলে নারী আন্দোলনকে সমাজ পরিবর্তনের পরিপূরক আন্দোলনের লক্ষে পরিচালিত করতে হবে। বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র এ আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

(উৎস: সাম্যবাদ, এপ্রিল-মে ২০২১)

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments