২০১৬ সালের মধ্যে পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা বাতিল এবং অবিলম্বে স্কুলে বর্ধিত ফি প্রত্যাহার করতে হবে
“প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা কোমলমতি শিশুদের ঠেলে দিয়েছে পরীক্ষা নামক যুদ্ধে আর অভিভাবকদের বাধ্য করেছে কোচিং এবং প্রাইভেট টিউটরের বাসায় ধরনা দিতে। শিশুদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। যেকোন উপায়ে ভালো ফলাফলের জন্য অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ নানা অসাধু উপায় গ্রহণ করতে দ্বিধা করছেন না। এর সুযোগে শিক্ষাব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। প্রচণ্ড মনস্তাত্বিক চাপ তৈরি হওয়ায় শিশুদের কোমল মন-অনুভূতি হারিয়ে যাচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে ‘শিক্ষার মান উন্নয়ন করা’ কিংবা ‘শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলা’ এরকম বহু মুখরোচক কথা বলা হলেও এর কোনটাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। তারা চেয়েছে চমক লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর পাশের বাহবা নিতে এবং শিক্ষাব্যবস্থার প্রাথমিক স্তর থেকেই ব্যাপক শিক্ষাব্যবসার পথ রচনা করতে। তাই কোনো যুক্তিতেই এই পরীক্ষা দুটি চলতে পারে না। আমরা ২০১৬ সালের মধ্যে পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানাই।”
২১ জানুয়ারি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক মলয় সরকার, সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা ও মাসুদ রানা। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে সচিবালয়ের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরবর্তীতে একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে।
বক্তরা আরও বলেন, ‘সারাদেশের স্কুলগুলোতে অস্বাভাবিক হারে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন স্কুল- ভিকারুননিসা নূন স্কুল, উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল, আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজসহ বিভিন্ন স্কুলে বেতন ৫০ থেকে ১০০ ভাগ বাড়ানো হয়েছে। চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশন অধিভুক্ত স্কুলগুলোতে ভর্তুকি কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফলে সারাদেশের অভিভাবক ও শিক্ষার্র্থীরা রাস্তায় নেমেছেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৭ জানুয়ারি ’১৬ বেসরকারি স্কুলগুলোর মাসিক বেতন পুনর্নির্ধারণের কথা বলেছে সরকার। কিন্তু বেতন পুনর্নির্ধারণ করলেও বর্তমানের থেকে তা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। ফলে এই সিদ্ধান্তও অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের উপর বাড়তি আর্থিক বোঝা হিসেবে আসবে। এমনিতেই মূল্যবৃদ্ধির চাপে পিষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ তাদের সীমিত আয়ে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাতেই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে এমন সিদ্ধান্ত তাদের আরও দিশাহীন করবে।’
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে স্কুলগুলোতে বাড়তি ফি আদায় বন্ধ এবং বেসরকারি স্কুলে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ফি বৃদ্ধির সরকারি অনুমোদন বাতিল করার দাবি জানান।