Monday, December 23, 2024
Homeছাত্র ফ্রন্টসমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে

12792218_1073599286035790_6007412436240851019_o

‘শিক্ষার সকল স্তরে ব্যয়বৃদ্ধি ও দুর্নীতি রুখে দাঁড়ান’ -এই শ্লোগানকে সামনে রেখে  ৩০ মার্চ ২৯১৬  অগ্রবর্তী চিন্তার পথিকৃৎ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর ৪র্থ কেন্দ্রীয় সম্মেলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।  সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক সেক্যুলার গণতান্ত্রিক একইধারার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থার দাবি নিয়ে ১৯৮৪ সালে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। সেই থেকে সংগঠনটি শিক্ষা সংস্কৃতি মনুষ্যত্ব রক্ষার লড়াই সাধ্যমত গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছে।

কেন্দ্রীয় সম্মেলন উপলক্ষে ২৮ মার্চ ২০১৬ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহার্দ্রী চক্রবর্ত্তী রিন্টু তনু হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত পিশাচদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, এমন একটা সময়ে আমরা এই সম্মেলন করতে যাচ্ছি, যখন সারাদেশে ছাত্র-জনতা মনুষ্যত্ব-বিবেকের প্রতি অসম্মান-অসভ্যতা আর বর্বরতার প্রতিবাদে ক্ষোভে-ঘৃণায় ফেটে পড়েছে। রাতের আঁধারে পড়ে থাকা সোহাগী জাহান তনুর নিথর দেহ জানিয়ে দিয়ে গেলো, দেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা আজ কোথাও নেই। ছাত্র-জনতা প্রতিবাদে সোচ্চার হলেও সরকারের তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং অতীতের মতোই এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করছে। এমনই এক আঁধার সমাজের মধ্যেই আমরা নিত্যদিন পার করছি। উন্নয়নের রঙ্গিন ফানুসের ভিতরে দমবদ্ধ দশা।

দেশের শিক্ষাব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়,  বর্তমানে একদিকে শিক্ষার সর্বস্তরে ব্যয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে আর অন্যদিকে শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যকেই হত্যা করা হচ্ছে। শিক্ষাজীবনের সূচনা থেকে যে আয়োজনে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে তাতে কল্পনাশক্তি দূরে থাক, শিশুমনের কৌতূহল-আনন্দ সবই মাটি হয়ে যাচ্ছে। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা চালুর ফলে মানসিক চাপ ও হয়রানি বৃদ্ধির পাশাপাশি কোচিং ও গাইড বইয়ের ব্যবসা তথা অভিভাবকদের খরচ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পাসের হার বাড়িয়ে দেখানো ইত্যাদির ফলে দুর্নীতি পাকাপোক্ত আসন গেড়েছে, নেমেছে শিক্ষার মান। মাধ্যমিক স্তরেও একদিকে পরিকাঠামো নেই, অন্যদিকে রয়েছে পর্যাপ্ত ও মানসম্মত শিক্ষকের অভাব। এসব ঘাটতি দূর না করে চালু হওয়া সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি সৃজনশীলতা বাড়ায়নি। বহুগুণে বাড়িয়েছে কোচিং ও গাইডের ব্যবসা। একসময় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমানের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত কলেজসমূহের যে সুনাম-সুখ্যাতি ছিল, আজ তা অনেকটাই ম্লান। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, শিক্ষক, হল-সেমিনারসহ সামগ্রিক আয়োজন তৈরিতে অবহেলা এ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ক্রাশ প্রোগ্রামের ফলে কেবল পরীক্ষা নেবার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়! চাহিদা অনুসারে বরাদ্দ না দেবার ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলছে ধুঁকে ধুঁকে। মধ্যমেয়াদে থাকা ইউজিসি’র ২০বছর মেয়াদী কৌশলপত্রের সুপারিশ অনুযায়ী প্রতিবছরই বাড়ছে অভ্যন্তরীণ আয়। ফলে ফি বৃদ্ধি এখানে নিত্য ব্যাপার। পাশাপাশি বাণিজ্যিক নাইটকোর্স চালু করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠন করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেবার চক্রান্ত চলছে। এভাবে পাবলিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ-বাণিজ্যিকীকরণের-রাষ্ট্রীয় ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্য পূরণ করা হচ্ছে। সে কারণেই গত ২০ বছরে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে হাতে গোনা, বিপরীতে প্রাইভেট স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বেড়েছে বহুগুণ।

47a6054006b2945d4b1f16c5711d1523আমরা বিগত বছরে অভিজিৎ হত্যাকান্ড, বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপ, মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে সাধ্যমত আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। এবছর এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণে বর্ধিত ফি আরোপের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে। চট্টগ্রাম ও রংপুরে অনেক স্কুলে আদায়কৃত অতিরিক্ত ফি প্রশাসন ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত ১৯টি স্কুলে বেতন-ফি প্রায় দ্বিগুণ করার প্রতিবাদে আমাদের সংগঠন আন্দোলন পরিচালনা করছে। এভাবে শুধু স্কুলস্তরে নয়, সর্বস্তরে শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। তার অংশ হিসেবে গত ২০১৪ সালে আমরা প্রথমে কেন্দ্রীয়ভাবে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার সংকট চিহ্নিত করে শিক্ষা কনভেনশন করি। এরপর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস জুড়ে বিভাগীয় ও আঞ্চলিক ছাত্র সমাবেশ কর্মসূচী সম্পন্ন করি। এই ধারাবাহিকতায় আমাদের বক্তব্যকে আরও বিস্তৃত পরিসরে নিয়ে গিয়ে আগামী দিনে শিক্ষার উপর সকল আক্রমণকে প্রতিহত করার প্রত্যয় নিয়ে আগামী ৩০ মার্চ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সপ্তদশ কাউন্সিল পরবর্তী ৪র্থ কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। গত কয়েক মাস ধরে সংগঠনের সারা দেশের নেতা-কর্মীরা নিরলস পরিশ্রমে সম্মেলনের প্রচারণা, মতবিনিময়, অর্থসংগ্রহসহ সামগ্রিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। সম্মেলনে সারা দেশ থেকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন। শিক্ষার অধিকার রক্ষার এ সম্মেলন সফল করতে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়।

৩০ মার্চ চতুর্থ কেন্দ্রীয় সম্মেলনের সূচী:

উদ্বোধন : সকাল ১১ টা, অপরাজেয় বাংলা

উদ্বোধক : ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

র‌্যালি : বেলা ১২ টা।
(র‌্যালির রুট: বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট, পল্টন, গুলিস্তান, বঙ্গবাজার প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে শেষ হবে।)

দ্বিতীয় সেশন :
দুপুর ৩.৩০মি.- ৪.৩০মি. পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; স্থান : রাজু ভাস্কর্য চত্বর; পরিবেশন করবে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
বিকেল ৪.৩০-৬.৩০ মি. পর্যন্ত আলোচনা সভা ও কমিটি পরিচিতি।
প্রধান বক্তা : কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী
সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটি, বাসদ (মার্কসবাদী)
বক্তা : কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী,সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটি, বাসদ (মার্কসবাদী)
কমল সাঁই, সভাপতি, অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস্ অর্গানাইজেশন

সন্ধ্যা ৬.৩০- রাত ৮টা পর্যন্ত সঙ্গীতানুষ্ঠান।

সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ভারতের বিশিষ্ট গণসঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়

সভাপতিত্ব করবেন : সাইফুজ্জামান সাকন

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments