রাফিকুজ্জামান ফরিদ সভাপতি ও অরূপদাস শ্যাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা নগর শাখার ৩য় সম্মেলন ১১ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার বেসরকারিকরণ-বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শত ভাগ পরিবহন সেবা চালু ও গণপরিবহনে হাফ ভাড়া নিশ্চিতের দাবিতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন উদ্ধোধন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা। উদ্বোধনের পর বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড হাতে শিক্ষার্থীদের একটি সুসজ্জিত র্যালী শহরের কয়েকটি মোড় প্রদক্ষিণ করে।
সম্মেলনে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার প্রমুখ।
সভাপতির ভাষণে মাসুদ রানা বলেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষার বেসরকারিকরণ-বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক স্তরে শৈশব ধ্বংসকারী পিইসি, জেএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ৩য় শ্রেণি থেকে পরীক্ষা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কোনো প্রকার আলাপ-আলোচনা ছাড়া এ সিদ্ধান্ত বাস্তবে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ঘটাবে।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা, অগ্নি দুর্ঘটনা, দুর্নীতি, লুটপাট, ধর্ষণ-খুন ইত্যাদি যে হারে বেড়ে চলেছে, সেখানে এই সম্মেলনের তাৎপর্য শুধু শিক্ষার অধিকারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকার জনগণের কোনো রকম মতাতের তোয়াক্কা না করে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বাড়িয়ে জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস তুলেছে। একের পর এক দেশবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে সুন্দরবনসহ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদকে দীর্ঘস্থায়ী হুমকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। শিক্ষা, চিকিৎসা এখন ব্যবসার ক্ষেত্রে পরিণত হয়ে গেছে। এই সরকার শিক্ষা-চিকিৎসার ব্যবসাকে আরও সুবিধা করে দিচ্ছে। ফলে আমাদের আর বসে থাকার সময় নেই। এসমস্ত গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে। এখানে যারা তরুণ, তাদের কাছে আমার আহ্বান, আসুন, আমরা এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।
রাশেদ শাহরিয়ার তাঁর বক্তব্যে বলেন, শুধু প্রাথমিক স্তরে নয় কলেজগুলোতেও চলছে শিক্ষা ব্যবসা। ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এর ভয়াবহতা ব্যাপক। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সেশনজট, ক্লাসরুম-শিক্ষক সংকট, ক্রাশ প্রোগ্রামসহ আবাসন ও পরিবহন সংকটে জর্জরিত। অপরদিকে একই সংকটে ভুগছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ৭ কলেজ। শুধু উপর্যুক্ত সংকটই নয় এই ৭ কলেজে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ফলাফল বিপর্যয়ের মতো ঘটনা, যা শিক্ষার্থীদের জীবনকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে দ্রুত শিক্ষাজীবন শেষ করার লক্ষ্যে বাবা-মায়ের সর্বস্ব বিক্রি করে তারা ভর্তি হচ্ছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেও ফি বৃদ্ধি ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।
আলোচনা সভা শেষে সংশপ্তক ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয় ।
শিক্ষার অধিকার আদায়ের জন্যে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে সম্মেলনে নগর শাখার ১৩ তম কমিটি ঘোষিত হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নব-নির্বাচিত কমিটিকে সকলের সামনে পরিচয় করিয়ে দেন।
নব -নির্বাচিত কমিটি
সভাপতি: রাফিকুজ্জামান ফরিদ
সহ-সভাপতি: সায়েদুল হক নিশান
সাধারণ সম্পাদক: অরূপ দাস শ্যাম
সাংগঠনিক সম্পাদক: সায়মা আফরোজ
দপ্তর সম্পাদক: নওশিন মুশতারী সাথী
অর্থ সম্পাদক: শাহিনুর আক্তার সুমি
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: সজীব চৌহান
স্কুল বিষয়ক সম্পাদক: তানজিনা নিপা
পাঠাগার সম্পাদক: অতনু মুখার্জী
সদস্য:
১. রাসেল সরদার
২. হাসিব মামুন
৩. যুননুন হাসান মারুফ
৪. রাবেয়া আক্তার কণিকা
৫. নাফিসা আনজুম
৬. অভিজিত ভদ্র