বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের দাবি
রৌমারীতে সাংসদ ঘেরাও
দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এবছরের বন্যার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে পানি অবস্থান করছে। ফলে ক্ষেতের সকল ফসল নষ্ট হয়েছে। গত ইরি-বোরো মওসুমে চাষীরা ফসলের ন্যায্যমূল্য পায়নি। এবার আমন ফসলও নষ্ট হয়ে গেছে। ভয়াবহ এক বিপদের মধ্যে কৃষক-ক্ষেতমজুররা দিনযাপন করছে। মৎস্য চাষীরা মাছ ধরে রাখতে পারেনি, বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খামারীরা পথে বসার মতো অবস্থা। নদী ভাঙনে ভিটে-মাটি হারিয়েছে অনেক মানুষ। এদের জন্য বর্তমান সময় পর্যন্ত সরকারের যে বরাদ্দ তা খুবই সামান্য।
অবিলম্বে দেশের উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন জেলায় বন্যা কবলিত অঞ্চলগুলোকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি ত্রাণ-পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী) এবং সমজাতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এছাড়া কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসককে ঘেরাও করেছে।
রৌমারী : রৌমারীসহ বন্যার্ত অঞ্চলকে বন্যা দুর্গত এলাকা ঘোষণা, দাতভাংগা ডিসি রাস্তার ভাঙন মেরামত, ফসলের ক্ষতিপূরণ ও বানভাসি মানুষের ত্রাণের দাবিতে ১২ সেপ্টেম্বর সহস্রাধিক বন্যার্ত মানুষ স্থানীয় সংসদ সদস্য, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক, রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘেরাও করে রাখে এবং পরে স্মারকলিপি পেশ করে। ঘেরাওকারীরা ঘোষণা করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি মানা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা এখান থেকে সরবে না। পরে জেলা প্রশাসক ও সংসদ সদস্য মাইকে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য যে, দাতভাংগা ডিসি রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কারণে গত তিন বছর ধরে খঞ্জনমারা স্লুইসগেটের আওতাধীন মানুষের বাড়ি-ঘর জমি বন্যার পানিতে ডুবে যায়। ওই অঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ফলে মানুষ কোনো ফসল ঘরে তুলতে পারে না। মৎস্য সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। কারণ যে পরিমাণ পানি প্রবেশ করে সেই পরিমাণ পানি স্লুইসগেট দিয়ে বের হতে পারে না। এসব দাবি নিয়ে বাসদ (মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে গত ৭ দিন ধরে এলাকার হাটে হাটে প্রচার, মিছিল ও হাটসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমপি ও জেলা প্রশাসক পরিদর্শনে আসবেন শুনে বাসদ (মার্কসবাদী) স্থানীয় জনগণকে সংগঠিত করে বিক্ষোভের আয়োজন করে।
ঢাকা : গত ১০ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় বাসদ (মার্কসবাদী) ঢাকা নগর শাখার উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টি কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য মানস নন্দী, উজ্জ্বল রায় ও ফখরুদ্দিন কবির আতিক।
সিলেট : বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখা ১০ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। দলের সিলেট জেলা শাখার সদস্য এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েবের সভাপতিত্বে এবং সুশান্ত সিনহার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন মোখলেছুর রহমান, রেজাউর রহমান রানা, অপু কুমার দাশ প্রমুখ। এছাড়া সিলেট শহরে ত্রাণ সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়।
গাইবান্ধা : এ দিন সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে পৌর শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলা শাখার আহবায়ক কমরেড আহসানুল হাবীব সাঈদ, সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু, কাজী আবু রাহেন শফিউল্যাহ খোকন, নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী প্রমুখ।
বক্তাগণ সোনাইল বাঁধ ভেঙে হাজার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য দায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিসহ বন্যা পরবর্তী চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান। সমাবেশ থেকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে না পারায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
রংপুর : ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের উদ্যোগে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সংগঠক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পলাশ কান্তি নাগ, কৃষক ফ্রন্টের সংগঠক বাবু মিয়া, হবিবর রহমান প্রমুখ। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
ন্যায্য ছাত্র আন্দোলনের বিজয়
ভ্যাট প্রত্যাহারে বাধ্য হল সরকার
ছাত্রদের টানা আন্দোলনের মুখে অবশেষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেলের ছাত্রছাত্রীদের টিউশন ফি’র ওপর আরোপ করা ভ্যাট প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হল সরকার। এ বছরের বাজেট ঘোষণার সময় প্রথমে ১০% ভ্যাট ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদের প্রাথমিক প্রতিবাদের মুখে সরকার ৭.৫% ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের মুখে সরকার ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য হল।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন এবং সাধারণ সম্পাদক ¯েœহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু এক যুক্ত বিবৃতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট বাতিলের আন্দোলনে বিজয়ী লড়াকু ছাত্রসমাজকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এক বার্তায় তাঁরা বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রদের সংঘবদ্ধ শক্তি যদি মাথা তুলে দাঁড়ায়, সেই নৈতিক অবস্থানকে পর্যদুস্ত করা সম্ভব নয় — এ অমোঘ সত্যটি যেন আরেকবার প্রমাণিত হলো। শিক্ষা পণ্য নয়, অধিকার — এই চেতনাকে মুছে ফেলার যে অপচেষ্টা শাসকরা করে আসছে, এই আন্দোলন তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধকে একধাপ এগিয়ে দিল।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এ আন্দোলন থেকে এও প্রমাণিত হলো যে গণবিরোধী সরকারের কাছে যে-কোনো ন্যায্য দাবিই কেবল ন্যায্যতার জোরে প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এজন্য দৃঢ় অবস্থানে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে হবে। বার্তায় বলা হয়, ছাত্রদের এ বিজয় তাঁদের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাতারেই কেবল শামিল করেনি, ভবিষ্যতে শিক্ষাসহ গণমানুষের যে-কোনো অধিকার হরণের বিরুদ্ধে তাদেরকে লড়াইয়ের পথ দেখাবে।
বাস-অটোরিক্সা ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে
গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ : ১৩ সেপ্টেম্বর জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বাড়িয়ে সরকার জনগণের উপর নতুন দুর্ভোগ চাপিয়ে দিয়েছে। বাস-সিএনজি অটোরিক্সার ভাড়া বাড়িয়ে কষ্টে থাকা মানুষকে তারা দুর্গতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। এর ফলে স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের জীবনে হঠাৎ করে প্রচণ্ড চাপে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় ইতিমধ্যে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাসাভাড়া থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে। তারা বলেন, জ্বালানি খাতে সরকারের ভুল নীতি, দুর্নীতি ও লুটপাটের দায় জনগণ কেন নেবে? নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং বাস-সিএনজির ভাড়া বৃদ্ধির হঠকারী সিদ্ধান্ত পরিহার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সচিবালয়ের সম্মুখে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম মোর্চার সমন্বয়ক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতা গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউসিএল এর কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুর রহমান, বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা মনিরুদ্দীন পাপ্পু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের কামরুল আলম সবুজ, নজরুল ইসলাম। প্রেসক্লাবের সম্মুখে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড, পুরানা পল্টন হয়ে সচিবালয় সম্মুখে পুলিশী বাধার সম্মুখীন হয়।
বাসদ (মার্কসবাদী) : বাসদ (মার্কসবাদী)-র ডাকে ২৮ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দলের ঢাকা মহানগর সংগঠক ফখ্রুদ্দিন কবির আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বেলাল চৌধুরী, কল্যাণ দত্ত, স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু প্রমুখ। সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের পকেট কেটে দেশি-বিদেশি লুটপাটকারীদের স্বার্থ রক্ষার নীতি বাস্তবায়ন করতেই বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পাশাপাশি বেসরকারীকরণ-বাণিজ্যিকীকরণ নীতির বিরুদ্ধে জোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
‘দাবি সপ্তাহ’ পালন : গ্যাস-বিদ্যুতের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী) ১২-১৯ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী পদযাত্রা-পথসভা-প্রচারপত্র বিতরণ এবং ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ও সারাদেশে জেলা-উপজেলায় সমাবেশ-মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
গাইবান্ধা : বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে ১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল এবং মিছিলপূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আহবায়ক আহসানুল হাবীব সাঈদ, মনজুর আলম মিঠু।
সিলেট : ২৮ আগস্ট বিকাল ৫টায় নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। মিছিলটি সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েবের সভাপতিত্বে এবং সুশান্ত সিনহার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মোখলেছুর রহমান, রেজাউর রহমান রানা, অপু কুমার দাশ প্রমুখ। ১১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় টিলাগড় পয়েন্টে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব এবং সুশান্ত সিনহা।
১৩ সেপ্টেম্বর বিকালে নগরীর রিকাবীবাজার পয়েন্টে এবং ওসমানী মেডিকেল এলাকায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দাবি সপ্তাহ পালনের অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এড. উজ্জ্বল রায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুশান্ত সিনহা, মোখলেসুর রহমান, এবং লিপন আহমেদ।
চট্টগ্রাম : বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা শাখা ২৯ আগস্ট বিকাল ৪টায় মিছিল ও সমাবেশ করেছে। মিছিলটি দোস্ত বিল্ডিংস্থ দলের কার্যালয়ের নিচ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউ মার্কেট মোড়ে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টি নেতা অপু দাশগুপ্ত, শফিউদ্দিন কবির আবিদ ও রফিকুল হাসান।
রংপুর : ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শেষে জাহাজ কোম্পানী মোড়ে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আনোয়ার হোসেন বাবলু, পলাশ কান্তি নাগ।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার জাতীয় কনভেনশনের আহ্বান
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় ফ্যাসিবাদবিরোধী গণসংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান
৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আহুত জাতীয় কনভেনশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে নেতৃবৃন্দ দেশে ফ্যাসিবাদের বিপদ মোকাবেলায় বাম গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ গণসংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তারা বলেন, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে এই একবিংশ শতাব্দীতে টেকসই উন্নয়নের কোনো সুযোগ নেই। গণতন্ত্র বিপদগ্রস্ত হলে একদিকে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের রাস্তা তৈরী হয়, অন্যদিকে জঙ্গিবাদি-মৌলবাদী অপতৎপরতার জমিন প্রশস্ত হয়। তারা ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ এখন জনগণের ভোটাধিকারকেই ভয় পাচ্ছে। তারা বলেন, দুর্নীতি, ব্যাংক লোপাট, অর্থপাচার ও জবরদখল, সন্ত্রাস, গুম-খুনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আড়াল করতেই সরকার বিশ্বব্যাংক প্রদত্ত নিম্নমধ্য আয়ের সার্টিফিকেট ফেরী করছে। জনপ্রতিনিধিত্বহীন এই সরকার স্বেচ্ছাচারী পন্থায় অন্যায় ও অযৌক্তিক ভাবে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের মতো এই সরকারের শাসনে দেশের কোনো গণতান্ত্রিক
ভবিষ্যত নেই, জানমালের নিরাপত্তা নেই, জাতীয় সম্পদ ও জাতীয় স্বার্থ নিরাপদ নয়। নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ও বিএনপি-জামায়াত জোটের অপরাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে জনগণের নিজস্ব শক্তি সমাবেশ জোরদার করার আহ্বান জানান।
বাম মোর্চার সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনভেনশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, তেল-গ্যাস-জাতীয় সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, প্রকৌশলী বিডি রহমতুল্লাহ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক এড. আবদুস সালাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মাহবুব) এর ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ইয়াসিন মিয়া, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
উদ্বোধনী অধিবেশনের শুরুতেই কনভেনশনের ঘোষণা ও আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি প্রস্তাবনা আকারে পেশ করেন মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হক। দেশের ৫৫টি জেলা থেকে প্রায় ৫৫০ জন প্রতিনিধি কনভেনশনে অংশগ্রহণ করেছেন। কনভেনশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়–য়া, এড. তাসমিন বীনা, নাগরিক ঐক্যের ইফতেখার আহমেদ বাবু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কনভেনশন থেকে ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসাবে সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবিতে আগামী ১৬-১৮ অক্টোবর ঢাকা-সুন্দরবন রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
ভারত কর্তৃক আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
ভারত জুড়ে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের যে মহাপরিকল্পনা রয়েছে তারই অংশ হিসেবে আসাম-পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহার রাজ্যের ‘মানস-সংকোষ-তিস্তা-গঙ্গা’ নদী সংযোগ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে বলে দেশটির পানিসম্পদ মন্ত্রীর বক্তব্য দিয়ে গত ১৩ জুলাই ভারতের পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। মানস ও সংকোষ হল ব্রহ্মপুত্রের দুটি উপনদী যার পানি সরিয়ে নেয়ার অর্থ হল ব্রহ্মপুত্রে পানিপ্রবাহ কমে যাওয়া। দেশের প্রায় ৬০/৭০ ভাগ পানি ব্রহ্মপুত্র দিয়ে প্রবাহিত হয। এই নদের পানি উজানে প্রত্যাহার হলে বাংলাদেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। কারণ ইতোমধ্যে পদ্মার উজানে ফারাক্কা এবং তিস্তার উজানে গজলডোবা বাধের কারণে বাংলাদেশ মরুকরণের ঝুঁকিতে আছে।
অথচ, মহাজোট সরকার তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ভারতের অন্যায় পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে না। উল্টো ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং যাওয়ার স্বার্থে ভারতের শাসকশ্রেণীকে তোয়াজ করছে। দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ফেলে ভারতকে ট্রানজিট দিচ্ছে, বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী ভারতের এ ভয়াবহ পরিকল্পনার প্রতিবাদে বাসদ (মার্কসবাদী) দেশপ্রেমিক জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।
দিনাজপুর : ভারত কর্তৃক আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রক্ষপুত্র নদের পানি প্রত্যাহারের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বাসদ (মার্কসবাদী) দিনাজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ২ আগস্ট বিকাল ৫টায় বিক্ষোভ মিছিল ও দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) দিনাজপুর জেলা সমন্বয়ক রেজাউল ইসলাম সবুজ, এ এস.এম মনিরুজ্জামান, সুকুমার রায় সৌরভ।
নীলফামারী : আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের প্রতিবাদে বাসদ (মার্কসবাদী) নীলফামারী জেলার উদ্যোগে ২ আগস্ট সকাল ১১টায় শহীদ মিনারের সামনে থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় চৌরঙ্গী মোড়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) নীলফামারী জেলা সংগঠক ও ডিমলা উপজেলা সমন্বয়ক ডা. রবীন্দ্রনাথ রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা নেতা আব্বাস উদ্দিন, ডোমার উপজেলা সমন্বয়ক ইয়াসিন আদনান রাজিব, রফিকুল ইসলাম, আহসানুল আরেফিন তিতু।
গাইবান্ধা : একই দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে ২ আগস্ট সকাল ১১টায় প্রেসক্লাব সংলগ্ন ডিবি রোডে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন জেলা বাসদ আহবায়ক আহসানুল হাবীব সাঈদ, মনজুর আলম মিঠু, নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, কাজী আবু রাহেন শফিউল্যাহ প্রমুখ।
নাগরিক অধিকার আদায়ে রংপুরে নাগরিক কমিটি গঠিত
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে অধ্যাপক মোজাহার আলীকে আহবায়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা আনোয়ার হোসেন বাবলুকে সদস্য সচিব করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট মহানগর নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ২৯ আগষ্ট বিকেল ৫টায় স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোজাহার আলীর সভাপতিত্বে এবং রাজনীতিবিদ কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু’র সঞ্চালনায় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ কমরেড শাহাদৎ হোসেন, অধ্যাপক আব্দুস সোবহান, মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর হোসেন চাঁদ, আকবর হোসেন, শিক্ষাবিদ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু, রাজনীতিক তৌহিদুর রহমান, পলাশ কান্তি নাগ, ব্যবসায়ী দেবদাস ঘোষ দেবু, মোখলেছুর রহমান, সাংস্কৃতিক কর্মী জি.এম নজু, সমাজকর্মী আলোক নাথ, বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে রংপুরের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিক ও ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা গত ৪ আগস্ট বিকেল ৫টায় রাজা রামমোহন রায় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই কমিটি গঠিত হয়েছে। মতবিনিময় সভায় উপরোল্লিখিতরা ছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন কারমাইকেল কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ সাহারা ফেরদৌস, মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু, শিক্ষক বনমালি পাল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডা. তুহিন ওয়াদুদ, ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ সরকার প্রমুখ।
সভাগুলোতে বক্তাগণ বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন যাত্রার আড়াই বছরে নাগরিক সেবার মান বাড়েনি, কর্পোরেশনের বিস্তীর্ণ এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি, নাগরিক সুবিধা কী তারা জানে না। কিন্তু প্রতিনিয়ত বাড়ছে কর-ট্যাক্সের বোঝা। লাগামহীন কর-ট্যাক্স বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবন দুঃসহ হয়ে উঠেছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কর্মকা-ে মানুষ হতাশ ও বিক্ষুব্ধ। সিটি কর্পোরেশনে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে। সেক্ষেত্রে নাগরিক হিসেবে আমরা নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারি না। নাগরিক নেতৃবৃন্দ বলেন, এখানকার নাগরিক সেবার ব্যয় যেমন : নাগরিক ও চারিত্রিক সনদপত্র পৌরসভা থাকাকালীন ছিল ৫ টাকা, কিন্তু এখন তা ২০ টাকা। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ ছিল ১০ টাকা, এখন ৭০ টাকা। ভূমি জরিপ ফি ছিল ৫০০ টাকা, এখন তা ৩,৫০০ টাকা। ওয়ারিশন সনদ ছিল ৫০ টাকা, এখন ২৫০ টাকা। এভাবে বাড়ছে ফি। বাণিজ্যিক ট্রেড লাইসেন্স, ভূমি ট্যাক্স এবং পানির বিল ইত্যাদিও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এডিপি, এমজিএসপি, জাইকার কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ লুটপাট হচ্ছে। নগরীর প্রাণকেন্দ্রের রাস্তাঘাট, ড্রেন-কালভার্ট ইত্যাদির সংস্কার হয়নি, বিস্তীর্ণ এলাকায়তো অনেক পরের কথা। সম্প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগেও অনিয়ম স্বজনপ্রীতি হয়েছে ব্যাপকভাবে। নাগরিক নেতৃবৃন্দ রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে এবং অনিয়ম-দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধে সর্বস্তরের নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
২৪ আগস্ট ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ পালিত
নারী-শিশু নির্যাতনকারীদের বিচার ও পর্নোগ্রাফি-মাদক-জুয়া বন্ধের দাবি
২৪ আগস্ট ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয়ভাবে বিক্ষোভ মিছিল, তথ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশসহ সমাবেশ করেছে। ঢাকায় প্রেসক্লাবের সামনে বিকাল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় । এই বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্ত। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য জহিরুল ইসলাম, নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুলতানা আক্তার রুবি, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি রিন্টু, ঢাকা নগর শাখা ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল চৌধুরী। সভা পরিচালনা করেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন।
বক্তারা বলেন, ১৯৯৫ সালের এদিনে পুলিশ কর্তৃক ১৪ বছর বয়সী কিশোরী ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে দিনাজপুরের সাধারণ মানুষ বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছিল, প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। শাসকগোষ্ঠীর দমনের মুখে পুলিশের গুলিতে সাতজন শহীদ হয়েছিল। ইয়াসমিন হত্যার দাবীতে সেদিনের আন্দোলন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু আজ শত শত নারী ধর্ষণ-গণধর্ষণ-হত্যা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। পুরো সমাজ দুর্বৃত্তদের হাতে জিম্মি। মাদারীপরে দু’জন স্কুল ছাত্রীর নৃশংস হত্যাকা-, শিশু রাজন-রাকিব-রবিউলের হত্যাকান্ডের বিচার এখনও হয়নি। শাসকশ্রেণী ও পুলিশ প্রশাসনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে হত্যাকারীরা নিরাপদে ঘুরছে। আর সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। দিনাজপুরবাসী যেমন করে সেদিন পুলিশ প্রশাসন ও শাসকশ্রেণীর বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, আজো নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সকল বিবেকবান মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
সমাবেশে দাবি জানানো হয় — শিশু রাজন-রাকিব-রবিউল এবং বর্ষবরণে যৌন নিপীড়নসহ সারা দেশে নারী নির্যাতনকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, পর্নোগ্রাফি-মাদক-জুয়া বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনে নারী দেহের অশ্লীল উপস্থাপনা বন্ধ করতে হবে, মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা-ফতোয়াবাজ এবং ধর্মীয় কূপমন্ডুকতা-কুসংস্কার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় ইউনিফরম সিভিল কোড চালু এবং সিডও সনদের পূর্ণ স্বীকৃতি ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
সিলেট : নারীমুক্তি কেন্দ্র, সিলেট জেলা ও ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার উদ্যোগে ২৪ আগস্ট বিকাল ৪টায় মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি কোর্ট পয়েন্টে এসে শেষ হয়। মিছিল পরবর্তী সমাবেশে নারীমুক্তি কেন্দ্র নেত্রী তামান্না আহমেদ-এর সভাপতিত্বে এবং ছাত্র ফ্রন্ট নেতা লিপন আহমেদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়, ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সভাপতি রেজাউর রহমান রানা, নারীমুক্তি কেন্দ্রের সংগঠক ইশরাত রাহী রিশতা।
রংপুর : ঘরে-বাইরে-কর্মক্ষেত্রে নারী ও শিশু নির্যাতন, অপসংস্কৃতি, যাত্রার নামে অশ্লীলতা, পর্নো পত্রিকা, ব্লু-ফিল্ম, পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধের দাবিতে নারীমুক্তি কেন্দ্র রংপুর জেলা শাখা উদ্যোগে সকাল ১০টায় বাংলাদেশ বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কামরুন্নাহার খানম শিখার সভাপতিত্বে কাচারী বাজার চত্বরে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা পলাশ কান্তি নাগ, ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি আহসানুল আরেফিন তিতু, নারীমুক্তি কেন্দ্র নেত্রী আলো বেগম, নন্দিনী দাস। পরে নারী-শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও অপসংস্কৃতি, যাত্রার নামে অশ্লীলতা, পর্নো পত্রিকা, ব্লু-ফ্লিম, পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এর পূর্বে ১৭ আগস্ট বিকেল ৫টায় নারীমুক্তি কেন্দ্র-এর উদ্যোগে নগরীর লালবাগ কেডিসি রোডে সমাবেশ এবং ২০ আগস্ট মুলাটোল আমতলা বাজার ও কেরানী পাড়া মোড়ে নারী ও শিশু নির্যাতন বিরোধী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
গাইবান্ধা : নারীমুক্তি কেন্দ্র গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে অপসংস্কৃতি, অশ্লীলতা, মাদক-জুয়া, পর্নো পত্রিকা, ব্লু-ফিল্ম ও পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধের দাবিতে ২৪ আগষ্ট সোমবার সকাল ১১টায় পৌর শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ পরবর্তী বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। সংগঠনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক রোকেয়া খাতুনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু, নারী মুক্তিকেন্দ্র জেলা সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান এবং সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অভিভাবক আফরুজা বেগম লিলি, সাংবাদিক হেদায়েতুল ইসলাম বাবু।
দিনাজপুর : সকাল ১১টায় নারীমুক্তি কেন্দ্র ও ছাত্র ফ্রন্ট দিনাজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে একটি মিছিল তথ্যমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডিসি অফিসে গিয়ে শেষ হয়। প্রেসক্লাবে চলাকালীন সমাবেশে ছাত্র ফ্রন্ট নেতা গোবিন্দ চন্দ্র রায় এর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) দিনাজপুর জেলার সমন্বয়ক রেজাউল ইসলাম সবুজ, নারীমুক্তি কেন্দ্রের সংগঠক রোহানি তাসনিম, আরজুনা হক। বক্তব্য শেষে একটি মিছিল ডিসি অফিসে যায় এবং সেখানে স্মারকলিপি পাঠ করে শোনান ছাত্র ফ্রন্ট দিনাজপুর জেলা শাখার আহবায়ক এএসএম মনিরুজ্জামান মনির। এরপর ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করে।
কিশোরগঞ্জ : নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে কিশোরগঞ্জে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সমাবেশ ও র্যালি করেছে। ২৮ আগস্ট শুক্রবার বিকালে শহরের ইসলামিয়া সুপার মার্কেট চত্বরের সমাবেশ স্থল থেকে একটি সুসজ্জিত র্যালি বের হয়ে সারা শহর প্রদক্ষিণ করে। এরপর ছাত্র ফ্রন্ট জেলা শাখার সভাপতি চন্দন সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনি দীপা ভট্টাচার্য, ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক সেঁজুতি চৌধুরী, জেলা বাসদ সংগঠক আলাল মিয়া, ছাত্র ফ্রন্টের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চৌধুরী, হোসেনপুরের সংগঠক সোহেল প্রমুখ।
নোয়াখালি : ছাত্র ফ্রন্ট ও নারীমুক্তি কেন্দ্র নোয়াখালী জেলা শাখার উদ্যোগে ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধে চাই গণতান্ত্রিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা ৭ আগস্ট বিকেল ৪টায় নোয়াখালী আইনজীবি সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় ছাত্র ফ্রন্ট জেলা আহবায়ক বিটুল তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোবারক করিমের পরিচালনায় আলোচনা করেন বাসদ (মার্কসবাদী) নোয়াখালী জেলা আহবায়ক দলিলের রহমান দুলাল, নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রিয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য সোমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাসদ(মার্কসবাদী) নেতা তারকেশ্বর দেবনাথ নান্টু, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য মাসুদ রেজা এবং নারীমুক্তি কেন্দ্র জেলা সংগঠক স্বর্ণালী আচার্য্য প্রমুখ।
সর্বহারার মহান নেতা ফ্রেডরিক এঙ্গেলস ও শিবদাস ঘোষের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
ঢাকা : বিশ্ব সাম্যবাদী আন্দোলনের মহান নেতা কমরেড ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের ১২০তম এবং কমরেড শিবদাস ঘোষের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাসদ (মার্কসবাদী) ঢাকা নগর শাখার উদ্যোগে এদিন বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে দুই মহান নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনজুরা হক নীলা ও জহিরুল ইসলাম।
সিলেট : ৫ আগস্ট বিকাল ৪টায় বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আয়োজনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণসভার পূর্বে দুই মহান নেতার প্রতিকৃতিতে একে একে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পর উপস্থিত সকলে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন এবং রেড স্যাল্যুট প্রদান করেন। সুশান্ত সিনহার সভাপতিত্বে এবং মুখলেছুর রহমানের পরিচালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, রেজাউর রহমান রানা প্রমুখ। সবশেষে কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক গাওয়ার মাধ্যমে স্মরণ সভার কাজ শেষ হয়।
লাক্কাতুরা চা বাগানে আন্দোলনের বিজয়
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন, লাক্কাতুরা চা বাগান শাখার উদ্যোগে ৪ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে বিজয় অর্জিত হয়েছে। প্রতি কেজি ঠিকাপাতি (ওভারটাইম) ৫ টাকা মজুরি নির্ধারণ, স্থায়ী এমবিবিএস ডাক্তার নিয়োগসহ ৪ দফা দাবিতে গত ৭ আগস্ট থেকে আন্দোলন শুরু হয়। ওইদিন লাক্কাতুরা চা বাগানের রেস্ট ক্যাম্প বাজারে অনুষ্ঠিত মিছিল পরবর্তী সমাবেশ থেকে আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হয়। চা শ্রমিক ফেডারেশনের এই আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে চূড়ান্ত স্বৈরাচারী কায়দায় আন্দোলনের নেতা বীরেন সিং, লাংকাট লোহার, রাজর্স্বী দাশ শেলী ও দেলোয়ার হোসেন (আমেনা বেগমের পুত্র)-কে কাজ থেকে বাতিল করে বাগান কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসন নেতৃবৃন্দকে কাজে নিযুক্ত করেনি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠন ২১ আগস্ট পুনরায় রেস্ট ক্যাম্প বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে ২২ আগস্ট লাক্কাতুরা চা বাগান অফিসের সম্মুখে অবস্থান কর্মসূচিসহ ধারাবাহিক আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হয়। সকাল ৮টা থেকে পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির এক পর্যায়ে বাগান মালিক কর্তৃপক্ষের প্ররোচনায় পুলিশ বাহিনী কর্মসূচি বানচাল করতে তৎপর হয়ে ওঠে। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে শ্রমিকরা কর্মসূচি চালিয়ে যান। চা শ্রমিকদের এই সংগ্রামী ভূমিকায় পুলিশ পিছু হঠে, বাগান কর্তৃপক্ষও বাধ্য হয়ে চা শ্রমিক ফেডারেশন এর সাথে আলোচনায় বসে। কর্তৃপক্ষ নেতৃবৃন্দকে কাজে পুনর্বহাল ও কাজ বন্ধ থাকাকালীন সময়ের মজুরি প্রদান এবং ক্রমান্বয়ে অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন। কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে সকাল ১০টায় নেতৃবৃন্দ কাজে যোগদান করেন এবং আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেন। অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার সভাপতি সুশান্ত সিনহা ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হৃদেশ মুদি। পরবর্তীতে ঠিকাপাতি মজুরি সাড়ে ৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা দেয়া হচ্ছে।
কমিটি গঠন : বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন লাক্কাতুরা ও মালনীছড়া বাগান শাখার এক যৌথ সভা গত ২৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠন সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক বীরেন সিং এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক উজ্জল রায়, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন জেলা সভাপতি সুশান্ত সিনহা, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক হৃদেশ মুদি। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে লাংকাট লোহারকে আহবায়ক ও রাজর্স্বী দাশ শেলীকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট লাক্কাতুরা শাখা কমিটি এবং সন্তোষ বাড়াইককে আহবায়ক ও অজিত রায়কে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট মালনীছড়া চা বাগানে সংগঠনের কমিটি গঠন করা হয়।
ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট-এর বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ
কাজ-খাদ্য-রেশন ও কৃষি ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি
সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের উদ্যোগে ১৪ আগস্ট বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্ষেতমজুরদের সারা বছর কাজ নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত টিআর-কাবিখা ও বছরে ন্যূনতম ১২০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প চালু, সরকারি সাহায্য বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ করা, আর্মি রেটে গ্রামীণ রেশনিং প্রচলন, কৃষি ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগে খোদ কৃষকের কাছ থেকে ফসল ক্রয়-কোল্ডস্টোরেজ-খাদ্যগুদাম নির্মাণ, মাদক-জুয়া-অপসংস্কৃতি ও নারী-শিশু নির্যাতন বন্ধ করাসহ অন্যান্য দাবিতে এ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। কৃষক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, কৃষক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম মিঠু, কৃষক নেতা আহসানুল হাবীব সাঈদ, হাসিনুর রহমান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের কৃষির সঙ্গে যুক্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষেতমজুরদের বছরে ৩ মাস কাজ থাকে, বাকী ৯ মাস কোন কাজ থাকে না। এসময় ক্ষেতমজুররা মানবেতর জীবনযাপন করে। ক্ষেতমজুরদের রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত টিআর-কাবিখা ও বছরে ন্যূনতম ১২০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প চালু এবং এক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, কৃষক বাম্পার ফলন ফলায়, অথচ ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় না। এজন্য হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে খোদ কৃষকের কাছ থেকে উৎপাদন খরচের সাথে ৩৩% লাভ যুক্ত করে ফসল কিনতে হবে।
অন্যান্য বক্তাগণ বলেন, বহুজাতিক কোম্পানির বীজের ওপর কৃষিকে নির্ভরশীল করা হয়েছে। সার ও বীজে ভেজাল এবং জিএম-টারমিনেটর সীড, আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পসহ অভিন্ন নদীর পানি ভারত কর্তৃক একতরফা প্রত্যাহার কৃষিতে বিপর্যয় নামিয়ে আনবে। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল পল্টন এলাকার রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।
গাইবান্ধা : কৃষির সঙ্গে যুক্ত বিশাল সংখ্যক ক্ষেতমজুর ও শ্রমজীবিদের জন্য কাজ, খাদ্য ও আর্মি রেটে রেশন সরবরাহের দাবিতে ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে ২৭ জুলাই সকাল ১১টায় পৌর শহীদ মিনার চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয। জেলা বাসদ (মার্কসবাদী) আহবায়ক কমরেড আহসানুল হাবীব সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু, কৃষক ফ্রন্ট নেতা জাহেদুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান খোকা, ডা. জোব্বার, মোজাহেদুল ইসলাম রানু প্রমুখ। বক্তারা এনজিও ও মহাজনী সুদী কারবার আইন কর নিষিদ্ধ করাসহ কৃষক ক্ষেতমজুরদের জন্য সহজশর্তে অল্প সুদে ব্যাংক ঋণ চালু এবং অবিলম্বে সকল সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার করার দাবী জানান। তারা সরকারী স্কুল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর মান উন্নয়ন, পর্যাপ্ত শিক্ষক ও এমবিবিএস ডাক্তার নিয়োগ করে বিনা পয়সায় শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার দাবিসহ শিক্ষা চিকিৎসার বাণিজ্য বন্ধ করার দাবি জানান।
মদন মোহন কলেজকে সরকারিকরণের দাবিতে আন্দোলন
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মদন মোহন কলেজ শাখার উদ্যোগে কলেজকে সরকারিকরণের দাবিতে ৩০ আগস্ট দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কলেজের শিক্ষার্থীরা লামাবাজার ক্যাম্পাস থেকে মিছিলটি শুরু করে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশ শেষে একদল প্রতিনিধি গিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর সহস্রাধিক স্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি পেশ করেন। এছাড়া স্মারকলিপির অনুলিপি শিক্ষামন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বরাবর পেশ করা হয়।
স্মারকলিপি পেশের পূর্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কলেজ শাখার আহবায়ক লিপন আহমেদ এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রুবেল মিয়া। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর শাখার সভাপতি রেজাউর রহমান রানা, ইমরান আলী সোহান, পলাশ কান্ত দাশ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার অন্যতম প্রতীক হচ্ছে মদন মোহন কলেজ। তৎকালে এ অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ যেন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেই উদ্দেশ্য থেকেই কলেজের প্রতিষ্ঠা। অথচ প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছরে পদার্পণ করার পরেও সিলেট বিভাগের অন্যতম বিদ্যাপীঠ এখনও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত। এ কারণে কলেজ পরিচালনার জন্যে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে ছাত্র বেতন। ছাত্র ফ্রন্ট ২০০৭ সাল থেকে কলেজকে সরকারিকরণের দাবিতে মানববন্ধন, মিছিল-সমাবেশ, স্মারকলিপি পেশসহ ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছি। এর আগে ১০আগস্ট অধ্যক্ষ বরাবরে স্মারকলিপি পেশ এবং ১১ আগস্ট থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি পালিত হয়।
শিশুদের বিকাশের উপযোগী মানবিক সমাজ চাই
শিশু হত্যা ও নির্যাতনের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
শিশু কিশোর মেলা : অব্যাহত শিশু নির্যাতন-হত্যা বন্ধ, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও শিশুশ্রম বন্ধের দাবিতে শিশু কিশোর মেলার উদ্যোগে ১৩ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। শিশু কিশোর মেলা’র ঢাকা নগর সংগঠক ছায়েদুল হক নিশানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তৃতা করেন নাঈমা খালেদ মনিকা, ভজন বিশ্বাস ও জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী।
বক্তারা বলেন, “একের পর এক শিশু নির্যাতন, হত্যার নৃশংসতায় আমরা শিউরে উঠছি। এ কেমন সমাজ যেখানে শিশুদের নিরাপত্তা নেই, মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই। আমাদের এমন সমাজ গড়তে হবে যেখানে শিশুর প্রতি মানবিকতা, সমাজের প্রতি দায়বোধ থাকবে। বর্তমানে ভোগবাদিতা ও মুনাফার লালসা মানুষের সুকুমার বৃত্তি ধ্বংস করছে। যার ফলাফল এদের মৃত্যু। আসুন এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে। সব শিশুর বিদ্যালয় প্রবেশ ও তাদের সুস্থ-নিরাপদ শৈশব, প্রাণবন্ত কৈশোর নিশ্চিত করতে হবে।”
নারীমুক্তি কেন্দ্র ও ছাত্র ফ্রন্ট : দেশব্যাপী লোমহর্ষক কায়দায় শিশু হত্যার প্রতিবাদে নারীমুক্তি কেন্দ্র ও ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে ৯ আগস্ট বিকেল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন, ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টু, দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী। বক্তারা বলেন, দেশের শাসন ব্যবস্থায় এবং অর্থনীতিতে যে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে, যে ফ্যাসিস্ট সংস্কৃতির চর্চা চলছে, যে লুটপাটতন্ত্রের চর্চা চলছে Ñ তারই ছবি আমরা সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। চরম পাশবিকতা-নৃশংসতা চালিয়েও আনন্দ পাবার সংস্কৃতি আজ সমাজ মননের অনেক গভীরে প্রোথিত হয়েছে। দোষীরা এমন ঘটনা ঘটার সাহস পাচ্ছে কেন না যে কোনো কিছু করেও শুধু ক্ষমতা, টাকা থাকলে এখানে পার পাওয়া যায়।
সিলেট : রাজন ও রাকীবের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে ১১ আগস্ট বিকাল ৫টায় মিছিল-সমাবেশ করে শিশু কিশোর মেলা সিলেট জেলা। মিছিলটি জিন্দাবাজার থেকে শুরু হয়ে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। শিশু কিশোর মেলা সিলেট জেলার সংগঠক লিপন আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবশে বক্তব্য রাখেন রুবাইয়াৎ আহমেদ, ফাহিম আহমেদ চৌধুরী, ইয়াছিন আলী ইমন প্রমুখ।
রংপুর : রাজন, রবিউল, রাকিবসহ সারাদেশে শিশু ও ব্লগার নিলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নীল হত্যার বিচার, নারী নির্যাতন বন্ধ এবং মুক্ত চিন্তার মানুষদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার দাবিতে ছাত্র ফ্রন্ট, নারীমুক্তি কেন্দ্র ও শিশু কিশোর মেলা রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ১১ আগস্ট সকাল ১১টায় প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আহসানুল আরেফীন তিতুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, রোকনুজ্জামান রোকন, কামরুন্নাহার খানম শিখা, শিশু কিশোর মেলা সংগঠক ইমরান সরকার।
গাইবান্ধা : সারাদেশে একের পর এক শিশু হত্যা, নারী নির্যাতন, মুক্ত চিন্তার মানুষদের হত্যার প্রতিবাদে এবং দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নারীমুক্তি কেন্দ্র, শিশু কিশোর মেলা ও ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে গাইবান্ধা ১নং রেলগেটে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন অভিভাবক আফরুজা বেগম লিলি, নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, বজলুর রহমান, মাহবুব আলম মিলন, শিশু কিশোর মেলা সংগঠক আবু সায়েম শান্ত।
বীরকন্যা প্রীতিলতার স্মৃতি রক্ষার দাবি
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের সংগ্রামী স্মৃতি বিজড়িত পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রশাসনিক প্রয়োজনে সংস্কারের নামে ঐতিহ্য ধ্বংস করার যে পাঁয়তারা চলছে তা বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, সামজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা শাখা ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় প্রীতিলতা ভাস্কর্য প্রাঙ্গনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। নারীমুক্তি কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি পপি চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল চিকিৎসক ফোরামের আহবায়ক ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার নেতা রফিকুল হাসান, বীরকন্যা প্রীতিলতার ৮০তম আত্মহুতি দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব নারীমুক্তি কেন্দ্রের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদাউস পপি, এড. বিশুময় দেব, শিক্ষক অধ্যক্ষ নাসিমা সিরাজী, ছাত্র ফ্রন্টের নগর সভাপতি তাজ নাহার রিপন, চারণ সংগঠক মেজবাহ উদ্দিন এবং ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ স¤পাদক আরিফ মঈনুদ্দীন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মাস্টারদা সূর্যসেনের নির্দেশে বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা পাহাড়তলীস্থ ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করেন এবং আক্রমণ শেষে প্রীতিলতা ক্লাবের সম্মুখে শহীদি আত্মোৎসর্গ করেন। প্রীতিলতা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ। পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব এই কারণে আমাদের সংগ্রামী ইতিহাসের অংশ। অথচ দুঃখজনক বিষয়, জাতির এই ঐহিত্য সংরক্ষণ না করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন এটি বিভাগীয় প্রকৌশলী কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করছে। নারীমুক্তি কেন্দ্র, ছাত্র ফ্রন্ট ও চারণ-সহ চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবকে স্মৃতি জাদুঘর হিসাবে সংরক্ষণ করা হোক। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে তৎকালীন রেলওয়ের জি.এম. প্রতিশ্রুতি দেন, ইউরোপীয়ান ক্লাবকে স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেবে। অথচ এখন প্রশাসনিক প্রয়োজনে সংস্কারের নামে ইউরোপিয়ান ক্লাব ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছে।” নেতৃবৃন্দ বলেন, অবিলম্বে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই অপতৎপরতা বন্ধ না করলে চট্টগ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন করা হবে। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ইউরোপিয়ান ক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
দেশব্যাপী গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ
ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন
রংপুর : গত ৬ আগস্ট রংপুরের পায়রা চত্ত্বরে আয়োজিত জনসভায় বামমোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সরকার দেশে আজ কবরের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যে কোনোভাবে বিরোধী দলের আন্দোলনকে নির্মূল করতে তৎপর। কোনো যৌক্তিক ন্যায্য সমালোচনা তার সহ্য করতে পারে না। ভোটাধিকারসহ সকল গণতান্ত্রিক অধিকার তারা একে একে কেড়ে নিতে তারা তৎপর। সরকারের এসব অপতৎপরতার লক্ষ্য হচ্ছে দেশে দীর্ঘস্থায়ী ফ্যাসিবাদী শাসন জোরদার করা। তারা নির্বাচন কমিশনসহ সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে বিদ্যমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন সরকারের ব্যর্থতার কারণে মহাসড়কে তিন চাকার যান নিয়ে নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। শিশু হত্যা ও শিশু নির্যাতন ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্নীতি-লুটপাট, ব্যাংক লোপাট, অর্থ পাচার মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা বলেন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের মতো এই সরকারের কাছেও দেশ জনগণ ও দেশের কোনো গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত নেই। নেতৃবৃন্দ এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি ও দেশ প্রেমিক জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলে গণসংগ্রাম জোরদারের আহবান জানান।
ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ রংপুর জেলা নেতা আশরাফুজ্জামান মতিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বামমোর্চার কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহম্মেদ, বাসদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ইয়াছিন মিয়া, স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা শাখার সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের রংপুর জেলা ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক তৌহিদুর রহমান এবং সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা শাখার সদস্য পলাশ কান্তি নাগ।
চট্টগ্রাম : ভোটাধিকার সহ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম বেগবান করার আহ্বান জানিয়ে ১০ আগস্ট গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা চট্টগ্রাম জেলা শাখার একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বিকাল ৫টায় হাসান মারুফ রুমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ(মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য উজ্জ্বল রায়, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, বাসদ কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ইয়াসিন মিঞা, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির জেলা সভাপতি চিত্তরঞ্জন বড়ুয়া, বাসদ (মার্কসবাদী), জেলা সদস্য সচিব অপু দাশ গুপ্ত, শফি উদ্দিন কবির আবিদ, মো. হানিফ প্রমুখ। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ব্লগার হত্যা, অব্যাহত নৃশংস শিশুহত্যা, নারী ধর্ষণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “যখন রাষ্ট্র ফ্যাসিবাদী কায়দায় শাসন চালায়, সরকার সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে ও গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে ও টিকে থাকার তৎপরতা চালায়, আইনের শাসন থাকে না, একের পর এক হত্যাকান্ডের বিচার না হওয়ায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি রাষ্ট্র কতৃক ন্যায্যতা পায়, তখন দেশে অগণতান্ত্রিক শক্তি উত্থানের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সমাজে নীতি-নৈতিকতা-মূল্যবোধের ব্যাপক ধ্বস ঘটে। যার নজির সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনায় ¯পষ্ট। এর দায় বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকেই নিতে হবে। এ অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আজ গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “সরকার একের পর এক জনগণের অধিকার হরণ করছে। দ্রব্যমূল্য বাড়ছেই। কৃষক ধান সহ ফসলের ন্যায্যমূল্য হতে বঞ্চিত। উন্নয়নের নামে পুঁজিপতিদের স্বার্থে কৃষিজমি ধ্বংস করা হচ্ছে। মানবপাচারকারী গডফাদাররা সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নিরাপদ। এত মানুষ হত্যার কোনো বিচার হল না। দেশবাসীর বিরোধিতা উপেক্ষা করে ভারতের সাথে নানা চুক্তি হল, ভারতকে একতরফা সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হল অথচ তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, সীমান্তে হত্যা বন্ধ সহ নানা অমিমাংসীত বিষয় নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হল না। তাই অতীতের বিএনপি-জামাতের জোট সরকারের মত এই সরকারের কাছেও যেমন দেশের জনগণ ও গণতন্ত্রের কোনো ভবিষ্যত নেই, তেমনি জাতীয় সম্পদ-স্বার্থও নিরাপদ নয়।” নেতৃবৃন্দ বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া মহাসড়কে অটোরিক্সা-থ্রি হুইলার বন্ধের নিন্দা জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সিলেটে মুক্তিযুদ্ধের ‘স্মৃতিসৌধ’ নির্মাণের দাবি
সিলেটে মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘরসহ স্বাধীনতার স্মৃতিস্মারক ‘স্মৃতিসৌধ’ নির্মাণের দাবিতে ২৮ জুলাই জেলা প্রশাসকের কাছে ১০ সহ¯্রাধিক গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি প্রদান করেছে শিশু কিশোর মেলা সিলেট জেলা শাখা। স্মারকলিপি পেশের পূর্বে একটি র্যালি সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সংহতি সমাবেশে মিলিত হয়। র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা ‘সিলেটে স্মৃতিসৌধ চাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে চাই’-সহ নানা দাবি সম্বলিত ফেস্টুন বহন করে। প্রখর রোদের মধ্যে শতশত স্কুল শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল র্যালি, দাবির পক্ষে প্রাণ উজাড় করা স্লোগান শুনে অবাক বিস্ময়ে থমকে দাঁড়ায় অনেক পথচারী, দোকান ফেলে দেখতে আসেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় রাস্তার পাশে দাঁড়ানো অনেকেই করতালির মাধ্যমে শিশু কিশোর মেলার বন্ধুদের উৎসাহ দেন।
সিলেটে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবিতে স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে নগরীর পাড়ায়-মহল্লায়, দোকানপাটে, অফিসআদালতে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসাধিককাল ধরে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
শিশু কিশোর মেলার সংগঠক রুবাইয়াৎ আহমেদের সভাপতিত্বে এবং লিপন আহমেদের পরিচালনায় র্যালি পরবর্তী সংহতি সমাবেশে সংহতি বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্রপাল, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়, খেলাঘর সিলেট বিভাগীয় সম্পাদক তাজুল ইসলাম বাঙ্গালী প্রমুখ। সংহতি বক্তব্যে বক্তারা শিশু কিশোর মেলার দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে বলেন, “সিলেটের কারাগার অতি দ্রুত স্থানান্তরিত হতে যাচ্ছে। এ স্থানটি হতে পারে সিলেটের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনসহ বাঙালিজাতির গৌরবগাঁথা মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর এবং স্বাধীনতার স্মৃতিস্মারক ‘স্মৃতিসৌধ’। ৩০ লক্ষ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং আগামী প্রজন্মের কাছে অতীতের সংগ্রামী ইতিহাস তুলে ধরতে হলে সিলেটে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ খুবই যৌক্তিক।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সম্মেলন ও নবীনবরণ
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় : উচ্চশিক্ষা ধ্বংসের ইউজিসি’র ২০ বছর মেয়াদী কৌশলপত্র বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্যিক কোর্স এবং অব্যাহত ফি বৃদ্ধি বন্ধ, অবিলম্বে হল চালু সহ ৯ দফা দাবিকে সামনে রেখে ছাত্র ফ্রন্ট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ আগস্ট বিকেল ৫টায় ক্যাম্পাসের স্বাধীনতার ভাস্কর্য চত্বরে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফ্রন্টের আহবায়ক মনোয়ার হোসেন। বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কাজী রেজোয়ান সরকার, ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি আহসানুল আরেফিন তিতু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন।
গাইবান্ধা সরকারি কলেজ : ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার ১২তম সম্মেলন ও নবীনবরণ গত ১৯ আগস্ট কলেজ চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণ্যাঢ্য র্যালি কলেজ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে ১৬ নং কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ শাখার সভাপতি পরমানন্দ দাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলা শাখার সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন, শামীম আরা মিনা, মাহবুব আলম মিলন। বক্তাগণ অবিলম্বে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের লাইব্রেরি-সেমিনারে পর্যাপ্ত বই, জলাবদ্ধতা নিরসনে মাঠ ভরাট করা, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আহবান জানান। আলোচনা সভা শেষে পরমানন্দ দাসকে সভাপতি, রাহেলা সিদ্দিকাকে সহ-সভাপতি, মাহবুব আলম মিলনকে সাধারণ সম্পাদক, শাহীন আলমকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার ১৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি পরিচয় করে দেয়া হয় এবং নবীনদের নানা আয়োজনে বরণ করে নেয়া হয়।
শাবিপ্রবিতে শিক্ষকদের উপর ছাত্রলীগের হামলার বিচার দাবি
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন এবং সাধারণ সম্পাদক ¯েœহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু এক যুক্ত বিবৃতিতে ৩০ আগস্ট সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করেছেন। তাঁরা বলেন, ‘শিক্ষাঙ্গণে সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব কোথায় পৌঁছেছে তা এ ঘটনার মাধ্যমে পুনরায় স্পষ্ট হলো। শিক্ষকসমাজের সম্মানের আসনটুকওু তারা ভূলুণ্ঠিত করেছে। গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার যে সংস্কৃতি সারাদেশব্যাপী তৈরি করেছে সরকার, ছাত্রলীগের এই ঘটনা তারই ধারাবাহিকতা।’
ব্লগার নিলয় নীল-এর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি
বাসদ (মার্কসবাদী) : বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ৭ আগস্ট এক বিবৃতিতে ব্লগার ও অনলাইন একটিভিস্ট নিলয় নীলকে ঢাকা খিলগাঁওস্থ নিজ বাসায় ঢুকে নৃশংসভাবে হত্যাকারী খুনীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন। বিবৃতিতে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, পরিকল্পিতভাবে একই কায়দায় পরপর কয়েকজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে, একটি ঘটনায় জনতা খুনীদের হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিয়েছে। অথচ, পুলিশ-গোয়েন্দা সংস্থা-প্রশাসন তথা সরকার এই খুনী চক্রের হোতাদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করেনি। ফলে সরকার এ হত্যাকা-ের দায় এড়াতে পারে না। সরকারের নিস্ক্রিয়তার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক — এই অপারগতা কি দায়িত্ব পালনে গাফিলতাজনিত নাকি খুনী চক্রের পরিচয় উদঘাটন করে তাদের গ্রেপ্তারের তাগিদ বা ইচ্ছা সরকারের এখনো নেই?
তিনি আরো বলেন, এ ধরণের ধারাবাহিক হত্যাকান্ড বিনা বাধায় চলতে দেয়ার মাধ্যমে দেশে এমন এক নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে যেখানে মানুষ স্বাধীন মত প্রকাশ করতে ভয় পাবে। কারো মতামত সঠিক মনে না হলে বা আপত্তিকর মনে হলে তাকে যদি হত্যা করা হয় — তাহলে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা আইনের শাসন বলতে কিছু থাকবে না। এই অসহিষ্ণুতা দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেবে। ধর্মের নামে যারা মানুষ হত্যা করে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং খুনীদের গ্রেপ্তার ও বিচারে সরকারকে বাধ্য করতে আন্দোলনে সামিল হতে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী জনসাধারণের প্রতি আবেদন জানান।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট : ৯ আগস্ট বেলা সাড়ে ১২ টায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে ব্লগার নিলয় হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল শুরু হয়ে কলাভবন, বাণিজ্য অনুষদ, অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ হয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু বলেন, একের পর এক ব্লগার হত্যাকান্ডের দায় সরকারকেই নিতে হবে। আমরা এর আগে দেখেছি কেউ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুক-ইমেইলে কিছু বললে বা লিখলে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হয়। কিন্তু একের পর এক ব্লগারদের ফেসবুকে, ইমেইলে হত্যার হুমকি দেওয়ার পর প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। সন্ত্রাসী-গোষ্ঠিদের গ্রেফতার না করা বা গ্রেফতার করে ছেড়ে দেওয়া এবং অসংখ্য খুনের বিচার না হওয়া ও বিচার প্রক্রিয়াকে ঝুলিয়ে রেখে হত্যাকারীদের বাঁচানোর অপচেষ্টা — অপরাধের পথকে প্রশস্ততর করছে। সরকার সকল ক্ষেত্রে স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ শাসন করছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে মাদ্রাসা শিক্ষাকে উৎসাহিত করে জঙ্গী তৎপরতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করছে।
একই দাবিতে কেন্দ্রীয় প্রগতিশীল ছাত্র জোটের উদ্যোগে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হল নির্মাণের দাবিতে সমাবেশ
অবিলম্বে আবাসিক হল নির্মাণ এবং অভ্যন্তরীণ আয়ের নামে নাইটকোর্স চালু ও ফি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে ২৬ আগষ্ট বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ভাস্কর্য চত্বরে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জবি শাখার সভাপতি মাসুদ রানা, বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ¯েœহাদ্রী চক্রবর্তী রিন্টু, কিশোর কুমার সরকার, কৃষ্ণ বর্মন, তিথি চক্রবর্তী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষিত বাজেটে ছাত্রদের দীর্ঘদিনের দাবি আবাসিক হল নির্মাণে বিশেষ কোনো বরাদ্দ নেই। শিক্ষা গবেষণা ও ছাত্র কল্যাণে সরকারি কোন বরাদ্দ নেই। এসব খাতের উৎস হচ্ছে অভ্যন্তরীণ আয়। অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি মানেই বাড়বে ছাত্র বেতন ফি, বিভাগগুলোতে চালু করা হবে বাণিজ্যিকভাবে সান্ধ্যকালীন কোর্স। নেতৃবৃন্দ আবাসিক হল নির্মাণে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া, অভ্যন্তরীণ আয়ের নামে ছাত্র বেতন ফি বৃদ্ধি বন্ধ, বাণিজ্যিকভাবে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু বন্ধ করাসহ শিক্ষা গবেষণায় বাজেট বাড়ানোর দাবিতে সবাইকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন
রংপুর : কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পক্ষকালব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর পীরগাছা জে এন উচ্চ বিদ্যালয়ে সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আবু রায়হান বকসির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আহসানুল আরেফিন তিতু, বিদ্যালয়ের সহ-প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান খন্দকার, শিক্ষক তাপস কুমার সাহা, পীযুষ কান্তি বর্মন। আলোচনা সভা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়া ৬ সেপ্টেম্বর ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলার উদ্যোগে দর্শনার নাজিরদিগর উচ্চ বিদ্যালয় ও শিশু কিশোর মেলার উদ্যোগে পীরগাছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এম সি কলেজ : ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট এমসি কলেজ শাখার উদ্যোগে ১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় কলেজ ক্যাম্পাসে ‘ভাজপত্র’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। সাদিয়া নোশিন তাসনিমের সঞ্চালনায় ক্যাম্পাসের ছাত্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘মোড়ক উন্মোচন’ পূর্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শামসুদ্দিন, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা, এড. উজ্জ্বল রায়, আল-আমিন প্রমুখ।