বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ৭ এপ্রিল ২০১৭ সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে গতকাল ভূ-মধ্যসাগরে অবস্থিত মার্কিন রণতরী থেকে সিরিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “অপ্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে একতরফা এই হামলা সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সামরিক আগ্রাসন চালানোর মার্কিন পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, “সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে কয়েকদিন আগে রাসায়নিক গ্যাস আক্রমণের জন্য কারা দায়ী সে বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোন তথ্য-প্রমাণ-তদন্ত ছাড়াই জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে যেভাবে একতরফা হামলা চালানো হল, তা প্রমাণ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনো শক্তি প্রদর্শনের নীতিতে চলছে। এই নিদর্শন নতুন নয়। ২০০৩ সালে ইরাকে হামলার জন্য গণবিধ্বংসী অস্ত্রের মিথ্যা অজুহাত দেয়া হয়েছিল। ২০১৩ সালে সিরিয়াতেই ঘৌটা এলাকায় রাসায়নিক হামলার জন্য আসাদ সরকারকে দায়ী করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ার সামরিক অভিযানের প্রস্তাব আনা হয়েছিল। কিন্তু সেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, বরং বিদ্রোহীরাই অভিযুক্ত হয়েছিল। সেই ঘটনার পর ২০১৪ সালে রাশিয়ার সহযোগিতায় সিরিয়ান সরকার পরিত্যক্ত রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ ধ্বংস করে। ফলে তাদের হাতে রাসায়নিক অস্ত্র এখন নেই, থাকলেও বর্তমানে কোণঠাসা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সেই অস্ত্র ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন তার নেই বলে প্রতীয়মান হয়।”
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, “রাসায়নিক গ্যাসে ৭০-৮০ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুর জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা আজ মায়াকান্না কাঁদছে। অথচ ইরাকের মসুল শহরে মার্কিন বিমানহামলায় গত ১৭ মার্চ একদিনেই ২ শতাধিক বেসামরিক জনসাধারণ নিহত হয়েছেন, আন্তর্জাতিক চাপে যার দায় তারা স্বীকার করেছে। ইরাকে এভাবে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। সিরিয়ার সরকারবিরোধী মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র-অর্থ-প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক সমর্থন দিয়ে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ সৃষ্টির প্রধান দায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীদের। ইয়েমেনে চলমান সৌদি হামলায় হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুতে তারা নীরব। দুনিয়ার দেশে দেশে আগ্রাসন ও গণহত্যার রেকর্ড আমেরিকার বহু পুরনো। এ হেন মার্কিন সরকার যখন মানবতা রক্ষার নামে কোন দেশে হামলা চালায়, তখন বুঝতে হবে অপছন্দের শাসক পরিবর্তন ও দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠাই তার আসল উদ্দেশ্য।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুদ্ধচক্রান্তের প্রতিবাদে সচেতন ও সোচ্চার হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।