বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার উদ্দ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আজ ০৪.০৩.১৬ তারিখ, শুক্রবার বিকাল ৩.০০ টায় দাবী দিবস পালন করা হয়। দাবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মিছিলটি সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি সুশান্ত সিনহা সুমন এর সভাপতিতে এবং সাধারণ সম্পাদক মুখলেছুর রহমান এর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার সদস্য এডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলার আহ্বায়ক বিরেন সিং।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী জন্য নতুন পে-স্কেল ঘোষিত হয়েছে, বেতন বাড়ানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী-এমপিদের। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন আসে, শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরী কাঠামো ঘোষিত হবে না কেন? সরকার দাবি করছে বাংলাদেশে ‘অপ্রতিরোধ্য গতিতে উন্নয়ন’ হ”্ছ,ে অচিরেই ‘মধ্য আয়ের দেশ’ এ উন্নীত হতে যাচ্ছে তাহলে তার নমুনা কি এই, যাদের শ্রমের বিনিময়ে এই সমাজ, সভ্যতা নির্মান হচ্ছে সে শ্রমিকরাই ন্যূনতম বেচে থাকার মজুরীও পাচ্ছে না অথচ বিশ্বব্যংকের মাপকাঠিতে দারিদ্র সীমার উপরে উঠতে দৈনিক অন্তত ২ ডলার আয় দরকার অর্থাৎ ৪ সদস্যর ১টি পরিবারের মাসে অন্ততঃ ১৯,২০০ টাকা আয় থাকলে তাকে দারিদ্রসীমার ওপরে বলা যায়। এই সবকিছু বিবেচনায় আমরা সর্বনি¤œ মোট মজুরী ১৬ হাজার টাকা দাবী তুলেছি।
দেশে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে, ধনী আরও ধনী হচ্ছে, শিল্পপতি-ব্যবসায়ী-মালিকশ্রেণীর ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ, অবস্থা হচ্ছে। অন্যদিকে কৃষকরা ফসলের নায্য মূল্য পায়না বেকার যুবকরা বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে সাগরে ডুবে বা গণকবরে মরে। আরেকদিক থেকে যদি দেখা যায়, শ্রমিকদের ওপর চলছে তীব্র শোষণ। তারা কোনমতে খেয়ে পরে বেচেঁ আছে, তাদের সংগঠন করার কোন অধিকার নেই, নিয়োগপত্র-চাকুরীর নিরাপত্তার নেই, ওভারটাইম, বোনাস, পেনশন ইত্যাদির নিশ্চয়তা নেই। আরও ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে, সংশোধিত শ্রম আইন ২০১৩-এ নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে বলা হয়েছে, কারখানার মোট শ্রমিকদের ৩০ শতাংশ সদস্য নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং ট্রেড ইউনিয়নের অনুপস্থিতিতে ক্ষমতাহীন মালিক শ্রমিক সহযোগিতা কমিটি, শ্রমিকদের বাইরে কেউ ট্রেড ইউনিয়ন এর সদস্য হতে পারবে না। ফলে এ থেকে বুঝা যায়, এই সংশোধনীর মাধ্যমে মালিক পক্ষকে বিভিন্ন সুবিধা দেয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন দায়-দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন এই অবস্থায় সংগঠিত হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায় করতে পারবে না।
তাই সুবিধা আদায়ের অপরাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিজ দায়িত্বে নীতি আদর্শের ভিত্তিতে লড়াকু সংগঠন ও নেতৃত্ব গড়ে তোলার আহ্বান করেন সকল স্তরের শ্রমিক ও জনগণকে।
সিলেটে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের দাবী দিবস পালন
RELATED ARTICLES