গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ‘আবাদি জমি ও বাস্তুভিটা রক্ষা সংগ্রাম কমিটি’-র উপদেষ্টা, বাসদ(মার্কসবাদী) সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শাখার আহ্বায়ক বীরেন চন্দ্র শীলসহ গ্রেপ্তারকৃত ১০জন আন্দোলনকারীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে ৯মে বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন দুলাল, মানস নন্দী, উজ্জ্বল রায়, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, সাইফুজ্জামান সাকন। নেতৃবৃন্দ জবরদস্তি ও জালিয়াতি বন্ধ করে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে তাদের সম্মতি নিয়ে অকৃষি জমিতে প্রস্তাবিত সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “দেশের শীর্ষ ঋণখেলাপি ও শেয়ারবাজার জালিয়াতিতে অভিযুক্ত সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো কোম্পানী সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ইউনিয়নে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ‘তিস্তা সোলার প্ল্যান্ট’ নামে একটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। চুক্তির শর্তানুযায়ি বাস্তুভিটা ও আবাদি জমি নষ্ট করে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থান হবে লাঠশালার চরে। অথচ শর্ত ভঙ্গ করে কোম্পানী নানা ষড়যন্ত্র এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকার মানুষকে তাদের বাপ-দাদার বসতভিটা ও আবাদি জমি থেকে উচ্ছেদ করছে। এমনকি তারা পার্শ্ববর্তী মৌজা চর খোর্দ্দার মানুষকেও উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র করছে, যেটি একটি জনবহুল ও উর্বর কৃষি জমির এলাকা। কোম্পানীর বে-আইনী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ‘বাস্তুভিটা ও আবাদি জমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি’র ব্যানারে প্রতিবাদ করে আসছিল। তারা ইউএনও, জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে। কিন্তু প্রশাসন লুটেরা সালমান এফ রহমানের কোম্পানীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো প্রতিবাদ করার কারণে পুলিশ সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালিয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছে ১০ জন। পুলিশ এবং কোম্পানী কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের নামে ৩টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যে মামলাগুলোতে নাম উল্লেখ করে শতাধিক এবং অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ২শ জনকে আসামী করা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় আদালতে জামিন নিতে গেলে গত সোমবার বাসদ মাকর্সবাদী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার আহবায়ক বীরেন চন্দ্রশীলসহ আন্দোলনকারী রুপিয়া বেগম, আরজিনা বেগম, মুক্তি বেগম, শরফুন্নেছা, রেজাউল, রাজ্জাক, বাদশা, শাহজাহান, আকরাম মন্ডলকে জামিন না দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এদের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী, ৪ জন মহিলা, একজন মহিলার সংগে ৬ মাসের শিশু,অন্যজনের সংগে ১ বছরের শিশু।”
বক্তারা গাইবান্ধার সিভিল প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকা ও পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক বেক্সিমকো কোম্পানীর লাঠিয়াল হিসেবে ভূমিকা পালন করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।