সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম
কেন্দ্রীয় কমিটি
২২/২ তোপখানা রোড (৬ষ্ঠ তলা) ঢাকা-১০০০ । phone০১৭১১-৬৮০৪৮২
হেফাজতেরর নারী-বিদ্বেষী অগণতান্ত্রিক ১৩ দফা রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান
সাভারে ভবন ধসে শত শত শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ী ভবন ও গার্মেন্টস মালিকসহ দোষীদের গ্রেফতার-বিচার, নিহত-আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ক্ষতিপূরণের দাবীতে বিক্ষোভ
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সাভারে ভবন ধ্বসে শত শত গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যার বিচার ও দায়ী ভবন ও গামেন্টস মালিকসহ দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও সবোর্চ্চ শাস্তি প্রদান, নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসাসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে এবং হেফাজত ইসলামের নারী-বিদ্বেষী অগণতান্ত্রিক ১৩ দফা রুখে দাঁড়ানোর আহ্বানে ২৬ এপ্রিল ’১৩ শুক্রবার বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এড· সুলতানা আক্তার রুবি। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন, দপ্তর সম্পাদক তাসলিমা নাজনীন সুরভী, সদস্য আফসানা বেগম লুনা ও তাছলিমা আক্তার বিউটি, ইভা মজুমদার, ফারহিন ইসলাম সোমা প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ সাভারে ভবন ধসে দুই শতাধিক শ্রমিক হত্যার বিচার, দোষী মালিকসহ দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার-সবোর্চ্চ শাস্তি প্রদান এবং নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের চিকিৎসাসহ সকল দায়-দায়িত্ব সরকারকে বহন করার দাবি জানান। বক্তারা আরো বলেন, এক পরিসংখ্যান মতে ১৯৯০-২০১৩ সাল পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে, ভবন ধসে ও পদদলিত হয়ে প্রায় ১০০০ জনেরও বেশি শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, আহত হন হাজার হাজার শ্রমিক। মালিকদের অধিক মুনাফার লালসা ও দায়িত্বহীনতার কারণে শত শ্রমিক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত তাজরিন ফ্যাশনের মালিককে গ্রেফতার করা হয়নি, শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণও দেয়া হয়নি। বরং সরকার এই মালিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তাজরিন অগ্নিকাণ্ডের রক্তের দাগ শুকাতে না শুকাতে আবার রানা প্লাজার ভবন মালিক ও গার্মেন্টস মালিকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন শত শত শ্রমিক। বক্তারা এই মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড অভিহিত করেন। এসকল হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত মালিক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার কারণে এই হত্যাকাণ্ডের মিছিল বেড়েই চলেছে।
বক্তারা আরও বলেন, একদিকে এই পুঁজিপতিশ্রেণী, মালিকগোষ্ঠী তার মুনাফা লাভের জন্য নারীর সস্তা শ্রম কিনছে এবং নারীকে বাইরে নিয়ে আসছে আর অন্যদিকে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নারীকে অন্দর মহলে আটকে রাখার জন্য নারী-বিদ্বেষী অগণতান্ত্রিক ১৩ দফা দাবি তুলছে। এদের কারো কাছেই নারীর মানবিক মর্যাদা, সম্ভ্রম, কোনো কিছুর দাম নেই। হেফাজত ইসলাম যে ১৩ দফা উত্থাপন করেছে তার চতুর্থ দফায় “ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যাভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ” বন্ধের দাবি করেছে। হেফাজতের এই দাবি নারীর জন্য অপমানজনক, নারীকে শৃঙ্খলিত করে গোটা সমাজে মধ্যযুগে নিয়ে যাওয়ার শামিল। একই সাথে এই হেফাজত ইসলাম পুরুষের সমাবেশে নারী সাংবাদিক কেন, এই প্রশ্ন তুলে এক নারী সাংবাদিকের উপর চড়াও হন। বক্তারা হেফাজতের এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে মানুষকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান। একই সাথে যারা এই সাম্প্রদায়িক – মৌলবাদী গোষ্ঠীকে পৃষ্টপোষকতা করছেন তাদেরকেও পৃষ্টপোষকতা বন্ধের দাবি জানান।
বার্তা প্রেরক
তাসলিমা নাজনীন, দপ্তর সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি