সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা এবং সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু এক যুক্ত বিবৃতিতে ৭ মার্চ সংগঠিত শাসকদলের নেতা-কর্মীদের ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘গতকাল ৭ মার্চ উপলক্ষে শাসকদল আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুরো ঢাকায় অচলাবস্থা সৃষ্টি করা হয়। পাবলিক ট্রান্সপোর্টগুলো সরকারি দলের জমায়েত আনা নেয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। সভা-সমাবেশে যোগ দেবার সাধারণ গণতান্ত্রিক অধিকারও এই সরকার রাখেনি। বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত বাড়ানোর জন্য নেতা-কর্মীদের অশ্লীল-অশ্রাব্য ব্যবহারের শিকার হয়েছে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ, এমনকি পথচারীরাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে জোর করে, হুমকি দিয়ে এমনকি গায়ে হাত তুলে ছেলে-মেয়েদের সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে নেয়া হয়েছে।
সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ব্যাপার ছিল ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নারী নিপীড়নের ঘটনা। এসব খবর প্রধান সারির সংবাদ মাধ্যমগুলোতে তেমন প্রকাশিত না হলেও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভুক্তভোগীরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা মোটর সহ আরও কয়েকটি জায়গায় শাসকদলের নেতা-কর্মীদের দ্বারা শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী। এই যৌন নির্যাতনের ঘটনার সাথে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত ছিল। এর মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদী সরকার আরেকটি কলঙ্কজনক ঘটনার জন্ম দিল।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ কেবল শাসনকার্যের সকল ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক ধারাকে বিনষ্ট করে না, মানুষ হবার প্রক্রিয়াকেও ধ্বংস করে। আজ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার কেবল চুরি-দুর্নীতি-লুটপাট করছে না, তার সাথে জনগণের যে অংশ যুক্ত তাদেরকেও চরম অনৈতিক, বর্বর আর নির্যাতকের ভূমিকায় গড়ে তুলছে। এরা জানে দেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। এখানে ক্ষমতার রাজনীতির সাথে থাকলে সব অন্যায়ই জায়েজ। তাই তারা সুযোগ পেলেই নিপীড়ন করে, জনগণের অসংগঠিত অবস্থার সুযোগ নেয়। গতকালের ঘটনা তারই একটি প্রমাণ।’
নেতৃবৃন্দ বলেন ‘আরেকটি একদলীয় নির্বাচনের দিকে দেশের মানুষকে নিয়ে যাবার পরিকল্পনা করছে সরকার। এ কারণে জনগণের মতামতের ন্যূনতম তোয়াক্কা না করে এমন ত্রাসের পরিস্থিতি কায়েম করেছে। এর বিরুদ্ধে সমাজের প্রতিটি গণতন্ত্র মানুষকে সকল ক্ষেত্রে তীব্র প্রতিবাদ-প্রতিরোধে শামিল হওয়া জরুরি দায়িত্ব।’