১২ ফেব্রুয়ারী জয়পুরহাটে ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী ৩ মাথা মোড়ে জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কে বস্তা বস্তা আলু ফেলে আলু চাষীরা ১ ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। ফেলে দেওয়া আলুর উপর শুয়ে জানায় তাদের আহাজারী ও কষ্টের কথা। মহাজন বা এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নিজের সামান্য জমিতে অথবা বর্গা জমিতে আলু চাষ করে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেন উত্তর বঙ্গের অনেক কৃষক। উদায়স্ত রক্তজল করা শ্রম দেন। বাম্পার ফলনও হয়। দারিদ্র্যের পীড়ন তবু কমে না কিছুতেই। বরং বাম্পার ফলন চাষীদের জীবনে দুঃখই নিয়ে আসে কেবল। কয়েক বছর ধরে নিয়মিতই ঘটছে এ ঘটনা। অনেক কষ্ট করে ধার-দেনায় আলু চাষ করে উৎপাদনের খরচ তুলতে পারছেন না আলু চাষীরা। সর্বশান্ত আলু চাষীরা বারবার সরকারের কাছে প্রতিকার চাইলেও কোন সুরাহা হয়নি। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচার তাগিদে তারা রাস্তায় নেমে আসে। গড়ে তুলেছেন আলু চাষী সংগ্রাম পরিষদ। অবরোধ চলাকালে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নেতা বাসদ, কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি, জয়পুরহাট জেলা শাখার সংগ্রামী সমন্বয়ক কৃষিবিদ ওবায়দুল্লাহ্ মুসা, কমরেড শাহাজামান তালুকদার, সিদ্দিকুর রহমান, একরামুল হক, ইয়াকুব আলী, তাজিউল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা দাবী করেন সরকারি উদ্যোগে উৎপাদন খরচের সাথে ৩৫% মূল্য সহায়তা দিয়ে চাষীদের কাছ থেকে আলু সবজি ক্রয়, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোল্ডস্টোরেজে প্রকৃত চাষীদের আলু সংরক্ষণ, বস্তা প্রতি কোল্ডস্টোরেজের ভাড়া ১৫০ টাকা নির্ধারণ, আলু ও সবজি সংরক্ষণের জন্য সরকারি উদ্দ্যোগে পর্যাপ্ত কোল্ডস্টোরেজ নির্মণ, বেসরকারী কোল্ডস্টোরেজের ক্ষেত্রে সরকারী নীতিমালা প্রণয়ন, বিএডিসি কে সচল ও সার-বীজ-কীটনাশক সরবরাহ করে আলু চাষের এলাকায় আলুভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা, কোল্ডস্টোরেজে সংরক্ষিত আলু পঁচে গেলে/ক্ষতি হলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবিতে সংগঠিত হচ্ছে আলুচাষীরা। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত কৃষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আলুচাষী বাচাঁও – কৃষক বাচাঁও || বগুড়া ও জয়পুরহাটে আলুচাষীদের আন্দোলন
RELATED ARTICLES