উত্তরবঙ্গে আন্দোলনরত আলুচাষী সংগ্রাম পরিষদের ৭ দফা দাবির সমর্থনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে এক সংহতি সমাবেশ আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক অধ্যাপক আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সাইফুল হক, মোশরেফা মিশু, মানস নন্দী, মোশাররফ হোসেন নান্নু, হামিদুল হক। সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এবছর দেশের আলুচাষীরা আলু উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। অথচ তারা আলু বিক্রি করতে গিয়ে মহাসংকটে পড়েছে। এক একর জমির আলু বিক্রি করে কৃষকদের ৪৮ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান
গুণতে হচ্ছে। প্রান্তিক চাষীদের এটা জীবন-মরণ সমস্যা হলেও সরকার নির্বিকার। সরকারের যেন কোনো দায় নেই। প্রতি বছরই মৌসুমে ফসল বিক্রি করতে গিয়ে সরকারের দায়িত্বহীনতা এবং ইজারাদার-ফড়িয়া-মধ্যসত্ত্বভোগী-ব্যবসায়ী চক্রের মুনাফার শিকারে পরিণত হচ্ছে চাষী। কৃষকদের স্বার্থে কোনো কৃষিনীতি নেই। বরং দেশি-বিদেশি লুটরা ধনিকগোষ্ঠীর স্বার্থে প্রণীত সরকারের কৃষিনীতির ফলেই বিএডিসি-কে সংকুচিত করা হয়েছে। কৃষি বিপণন ব্যবস্থাসহ চাষের সকল উপকরণ, সার-বীজ-কীটনাশক-সেচ সবকিছুই বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাই কৃষি উৎপাদনে বাম্পার ফলন হলে তা কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ না হয়ে গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়ায়। বক্তাগণ আলুচাষীদের ড়্গতির পরিমাণ নির্ধারণ করে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, কৃষি ফসলে ৩৫% মূল্য সহায়তা প্রদান, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি উদ্যোগে কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণ, বিদেশে আলু রপ্তানীর কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, কোল্ডস্টোরেজে প্রতিবস্তা আলুর ভাড়া ১৫০ টাকা নির্ধারণ, বিএডিসি-কে সচল করাসহ সার-বীজ-সেচ-ডিজেল-বিদ্যুৎ ও চাষের যন্ত্রপাতিতে সরাসরি কৃষকদের ৫০% ভর্তুকি প্রদানের দাবি জানান।
বক্তাগণ চলতি বোরো মৌসুমে ১ মার্চ ’১৪ থেকে সরকারের বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করেন। বক্তাগণ বলেন, মহাজোট সরকারের ভুল নীতি এবং বিদ্যুৎখাতে রেন্টাল-কুইক রেন্টালের নামে তাদের লুটপাটের অর্থ যোগানোর অংশ হিসাবে এই মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। সমাবেশ থেকে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির তৎপরতা বন্ধের জোর দাবি জানানো হয়।