গণদুর্ভোগ বাড়িয়ে লুটেরা-দুর্নীতিবাজদের পকেট ভারী করার সরকারি নীতির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সরকারি পরিকল্পনা বাতিল, রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নামে লুটপাট বন্ধ ও রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র মেরামত-নতুন প্ল্যান্ট নির্মাণ করে স্বল্পমূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বিদেশি কোম্পনির সাথে অসম গ্যাস উৎপাদন-বণ্টন চুক্তি বাতিল করার দাবিতে বাসদ, ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে আজ ৩ মার্চ সোমবার বিকাল সাড়ে চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ মহানগর শাখার নেতা ফখ্রুদ্দিন কবির আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জহিরুল ইসলাম, সাইফুজ্জামান সাকন, বেলাল চৌধুরী, কল্যাণ দত্ত প্রমুখ। সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন-বায়তুল মোকাররম-গুলিস্তান এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসা এ সরকার অতীতের ধারাবাহিকতায় আগামীতেও যে গণবিরোধী শাসন চালাবে তার লক্ষণ ফুটে উঠেছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে। বিদ্যুৎখাতে বিপুল লোকসানের জন্য দায়ী বেসরকারি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো বন্ধ করার পরিবর্তে এদের কাছ থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই প্ল্যান্টগুলোর মালিক বিদ্যুৎব্যবসায়ীদের মুনাফা যোগাতে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বাড়ায় দাম বাড়াতে হচ্ছে, অথচ কেন উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে তা বললেন না। বরং তিনি জনগণের সাথে নিষ্ঠুর বিদ্রুপ করে উপদেশ দিয়েছেন যে বিদ্যুৎ অপচয় কমালে দাম বাড়লেও তাদের খরচ বাড়বে না। অন্যদিকে, গ্যাসখাতে লোকসান হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির সাথে চুক্তির শর্তমতে তাদের কাছ থেকে বেশি দামে গ্যাস কেনার কারণে। এসব অসম চুক্তি বাতিল করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে গ্যাস উত্তোলনের পরিবর্তে শেখ হাসিনা সরকার নতুন করে আরো কঠিন শর্তে ভারতীয় কোম্পানিকে বঙ্গোপসাগরে দুটি গ্যাসব্লক বরাদ্দ দিয়েছেন। ফলে বিদ্যুৎ-গ্যাসখাতে দুর্নীতি-লুটপাট ও বেসরকারিকরণ নীতির কারণেই এসব অত্যাবশ্যকীয় গণপণ্যের দাম বাড়ছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকার অস্ত্র ক্রয়, ৫০০০০ নতুন পুলিশ নিয়োগ, সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনা ইত্যাদি খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করছে, মন্ত্রী-এমপিদের হলফনামায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, অথচ জনস্বার্থে বিদ্যুৎ-গ্যাসে ভর্তুকি দেয়ার ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে ‘টাকা নেই’। সমাবেশ থেকে দাবি জানানো হয়, দ্রুত পুরনো রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো মেরামত ও নবায়ন এবং সরকারিখাতে নতুন বৃহদাকার কম্বাই- সাইকেল প্ল্যান্ট স্থাপন করে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে। একইসাথে বিদেশি কোম্পানিগলোর সাথে অসম চুক্তি বাতিল করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় ও উদ্যোগে গ্যাস উত্তোলন বাড়াতে হবে। মধ্যবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসখাতে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে হবে। বক্তারা মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ও এইসকল দাবিতে শক্তিশালী গণআন্দোলন গড়ে তুলতে দেশবাসী ও বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতি আহ্বান জানান।