ভারত কর্তৃক তিস্তার পানি সরিয়ে নিয়ে উত্তরবঙ্গকে মরুভুমি বানানোর চক্রান্তের প্রতিবাদে ২৪ মার্চ বেলা ১২ টায় জেলা বাসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে রংপুর-তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি রংপুর জেলা শাখার সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ, ছাত্রনেতা এম নিয়াজ, লাবনী আক্তার লুনা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য বলা হয়- নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। নদী প্রবাহের সাথে মানুষের জীবন প্রবাহ জড়িত। সেই অর্থে নদী আমাদের জীবন। ভারত থেকে ৫৪টি এবং বার্মা থেকে ৩টি, মোট ৫৭টি নদী শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে বাংলাদেশের ভিতরে প্রবাহিত। বাইরে থেকে আসা ৫৭টি নদীর মধ্যে ভারত থেকে আসা ৫৪টি নদীর উজানেই আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ভারত একতরফাভাবে বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশে মরুকরণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে চলেছে। একসময় এদেশে ১২০০ নদীর নাম পাওয়া যেত। এখন ২৩০টি নামে থাকলেও বাস্তবে সবগুলো চলমান নেই। শীতকালে ৬০/৬৫টির বেশী নদী প্রবাহমান থাকে না। পদ্মার উজানে ফারাক্কা বাঁধের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া সবার জানা। এখন আবার, মেঘনার উৎসনদী সুরমা-কুশিয়ারার উজানে টিপাই বাঁধ ও ব্রহ্মপুত্র থেকে পানি সরিয়ে নেয়ার আন্ত:নদী সংযোগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের তোড়জোড় চলছে। তা সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিণত হওয়া ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর পরেই তিস্তা বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত চতুর্থ বৃহত্তম আন্তর্জাতিক নদী। তিস্তা নদীর পানি প্রধানত সেচ কাজে ব্যবহারের জন্য ভারত জলপাই গুড়িতে গজলডোবা এবং বাংলাদেশ লালমনিরহাটে তিস্তা ব্যারেজ নির্মাণ করে। উজানের দেশ হিসাবে ভারত আগেই ব্যারেজ ও সেচ খালের মাধ্যমে পানি সরিয়ে ফেলায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা ব্যারেজ অনেকাংশে অকার্যকর হয়ে পড়ে। আবার বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও নদীভাঙ্গন দেখা দেয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসেবে, ঐতিহাসিকভাবে শীত মৌসুমে তিস্তানদীতে ১৪ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত হতো। গজলডোবায় ব্যারেজে পানি প্রত্যাহারের পর বাংলাদেশ অংশে তা কমে ৪ হাজার কিউসেকে দাঁড়িয়েছে। খরা পরিস্থিতিতে এই প্রবাহ আরো কমে ১ হাজার কিউসেক হয়ে যায়। বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া এলাকার সেচ কাজ পরিচালনার জন্য ১৫ শত কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা ব্যারেজ নির্মাণ করা হয়। এই প্রকল্পের সেচ লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর হলেও সেচ সুবিধা দেয়া যাচ্ছে ১ লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়- তিস্তায় এখন স্মরণকালের ভয়াবহ পানি সংকট চলছে। পানির না থাকায় হাজার হাজার একর জমিতে বোরো ধানের চারা শুকিয়ে যেতে বসেছে। ফসলের জমি ফেটে চৌচির। পানির জন্য হাহাকার করছে কৃষক। পানির স্তর নেমে গেছে প্রায় ৪/৫ ফুট। যার পরিণামে আসের্নিক যুক্ত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। নদীতে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় সমুদ্রের লোনা পানি ভেতরে প্রবেশ করছে। নদীর পানিতে লবণাক্ততা সহনশীল মাত্রা ৩৪ ভাগ ছাড়িয়ে ক্রমাগত বাড়ছে। ফলে ধান, পাট, আখ, শাক-সবিজ সকল আবাদের ক্ষেত্রেই বিপর্যয় নামবে। ভারত কর্তৃক তিস্তার পানির প্রত্যাহারের ফলে একদিকে যেমন এই অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন বিপন্ন অন্যদিকে মৎস্য সম্পদ, গাছপালা, প্রাণী-পাখি অর্থাৎ গোটা পরিবেশই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যে নদীতে একসময় নৌ পরিবহন চলতো তা আজ ধু ধু মরুভূমির মত হতে চলেছে। তিস্তার পানির বন্টন নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে আলোচনা হয়েছে অনেকবার। কিন্তু কোন সরকারই তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে শাসক শ্রেণির ব্যর্থতা ও নতজানু ভূমিকা সমালোচনা করে তিস্তার পানি সরিয়ে নিয়ে উত্তরবঙ্গকে মরুভুমি বানানোর চক্রান্তের প্রতিবাদে আগামী ৩০ মার্চ রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চের কর্মসূচির ঘোষনা করা হয়। নেতৃবৃন্দ সকল সর্বস্তরের জনগণকে উক্ত কর্মসূচি সফল করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়- তিস্তায় এখন স্মরণকালের ভয়াবহ পানি সংকট চলছে। পানির না থাকায় হাজার হাজার একর জমিতে বোরো ধানের চারা শুকিয়ে যেতে বসেছে। ফসলের জমি ফেটে চৌচির। পানির জন্য হাহাকার করছে কৃষক। পানির স্তর নেমে গেছে প্রায় ৪/৫ ফুট। যার পরিণামে আসের্নিক যুক্ত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। নদীতে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় সমুদ্রের লোনা পানি ভেতরে প্রবেশ করছে। নদীর পানিতে লবণাক্ততা সহনশীল মাত্রা ৩৪ ভাগ ছাড়িয়ে ক্রমাগত বাড়ছে। ফলে ধান, পাট, আখ, শাক-সবিজ সকল আবাদের ক্ষেত্রেই বিপর্যয় নামবে। ভারত কর্তৃক তিস্তার পানির প্রত্যাহারের ফলে একদিকে যেমন এই অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন বিপন্ন অন্যদিকে মৎস্য সম্পদ, গাছপালা, প্রাণী-পাখি অর্থাৎ গোটা পরিবেশই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যে নদীতে একসময় নৌ পরিবহন চলতো তা আজ ধু ধু মরুভূমির মত হতে চলেছে। তিস্তার পানির বন্টন নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে আলোচনা হয়েছে অনেকবার। কিন্তু কোন সরকারই তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে শাসক শ্রেণির ব্যর্থতা ও নতজানু ভূমিকা সমালোচনা করে তিস্তার পানি সরিয়ে নিয়ে উত্তরবঙ্গকে মরুভুমি বানানোর চক্রান্তের প্রতিবাদে আগামী ৩০ মার্চ রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চের কর্মসূচির ঘোষনা করা হয়। নেতৃবৃন্দ সকল সর্বস্তরের জনগণকে উক্ত কর্মসূচি সফল করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।