ভারত কর্তৃক তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে উত্তর বঙ্গকে মরুভূমি বানানোর চক্রান্ত- বন্ধ এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বাসদ রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে রবিবার ৩০ মার্চ রংপুর তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচী পালিত হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর প্রেসক্লাব চত্ত্বরে উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বাসদ সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু‘র সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাসদ কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কৃষিবিদ কমরেড ওবায়েদুল্লাহ মুসা, কমরেড মঞ্জুর আলম মিঠু, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ,বাসদ রংপুর জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলা সভাপতি আহসানুল আরফিন তিতু।
পথিমধ্যে পাগলাপীর,গঞ্জিপুর, চন্দনেরহাট, অবিলের বাজার, বড়ভিটা ও জলঢাকায় পথসভা অনুষ্ঠিত। পথে পথে এসব সমাবেশে মানুষের ব্যাপক সাড়া ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহন ছিল লক্ষ্যনীয়। ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিস্তা নদী রক্ষার প্রত্যয়ে এই রোডমার্চের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অভিনন্দন ও অকুণ্ঠ সমর্থন জানান।
পরে তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন দোয়ানী বাজারে রোডমার্চের সমাপণী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসব সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাসদ গাইবান্ধা জেলা আহবায়ক কমরেড আহসানুল হাবীব সাঈদ, পঞ্চগড় জেলা সমন্বয়ক অধ্যাপক তরিকুল আলম, বগুড়া জেলা সমন্বয়ক কৃষ্ণ কমল, দিনাজপুর জেলা সমন্বয়ক রেজাউল ইসলাম সবুজ, ঠাকুরগাও জেলা সমন্বয়ক মাহাবুব আলম রুবেল, নীলফামারী জেলা সংগঠক ইয়াসিন আদনান রাজীব প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন ভারত আন্তর্জাতিক নদী আইন অমান্য করে একতরফাভাবে একের পর এক নদীতে বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশে মরুকরণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে চলাছে। ভারত কর্তৃক তিস্তার পানি প্রত্যাহারের ফলে তিস্তা নদী শুকিয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। তিস্তায় এখন স্মরণকালের ভয়াবহ পানি সংকট চলছে। পানি না থাকায় হাজার হাজার একর জমিতে বোরো ধানের চারা শুকিয়ে যেতে বসছে। ঐতিহাসিকভাবে শীত মৌসুমে তিস্তা নদীতে ১৪ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত হতো। বর্তমানে খরা পরিস্থিতিতে এই প্রবাহ কমে ৩০০-৫০০ কিউসেকে এস দাড়িয়েছে। ভারত কর্তৃকতিস্তার পানি প্রত্যাহারের ফলে উৎপাদন একদিকে যেমন এই অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন বিপন্ন, অন্যদিকে মৎস্য সম্পদ, গাছপালা, প্রাণী-পাখী অর্থাৎ গোটা পরিবেশই ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ৪২ বছরে শাসক গোষ্ঠীর ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের প্রতি নতজানু নীতি ও জনস্বার্থ বিরোধী অবস্থানের কারণে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি। নেতৃবৃন্দ, উত্তরবঙ্গকে মরুভুমির কবল থেকে রক্ষা ও তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান। একইসাথে ভারতীয় শাসক শ্রেণির আধিপত্যবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে সেই দেশের শোষিত জনগনকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।