সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ বিকাল ৩ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সম্প্রতি ছাত্ররাজনীতি বন্ধের আলোচনার প্রেক্ষিতে ‘বুর্জোয়া ছাত্রসংগঠনগুলোর সন্ত্রাসের দায় ছাত্ররাজনীতির নয়’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন। সভার শুরুতে আলোচ্য বিষয়ের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টু।
বৈঠকে আলোচনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক অজয় রায়, মাসিক শিক্ষা বার্তার সম্পাদক এ এন রাশেদা, দৈনিক সমকালের ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অধ্যাপক এ কে মনোয়ার উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আকমল হোসেন , অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, সহযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান; প্রাবন্ধিক ও গবেষক অধ্যাপক মোরশেদ শফিউল হাসান, ডাকসুর সাবেক জি এস ডা. মুশতাক হোসেন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আ ক ম জহিরুল ইসলাম, বেলাল চৌধুরী প্রমুখ। গোল টেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী।
অধ্যাপক অজয় রায় তাঁর আলোচনায় বলেন, এ দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রসমাজের রয়েছে সংগ্রামী ভূমিকা। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার মধ্য দিয়ে সেটাকে অস্বীকার করা হবে। বর্তমান সময়েও শিক্ষার আন্দোলন সহ সমস্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রসমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। রাজনীতি মানুষের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার। এ অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারেনা।
এ এন রাশেদা বলেন, সন্ত্রাস আর ছাত্ররাজনীতি এক কথা নয়। সন্ত্রাস করছে সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনগুলো। এর দায় ছাত্রসমাজের উপর চাঁপানো যাবেনা। আসলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার নামে সরকার ছাত্রদের পক্ষের রাজনীতিকে বন্ধ করতে চায়। কারণ সরকারের শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ও সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে বাম প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোই লড়াই করছে।
সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তখন তার ছাত্রসংগঠনগুলো ক্যাম্পাসগুলোকে সন্ত্রাসের আখড়ায় পরিণত করে। এর জন্য আমাদের দেশের বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শহীনতাই দায়ী। তারাই পালাক্রমে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার অনুপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। হল দখল, সিট দখল , টেন্ডারবাজী, ভর্তি বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সংঘর্ষ, হানাহানি, হত্যা-খুনের মতো ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। কিন্তু এসব দেখিয়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত হবে অন্যায়, অগণতান্ত্রিক।
অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, রাজনীতি বন্ধ করে সন্ত্রাস বন্ধ করা যাবেনা। এতে করে শুধু ছাত্রদের পক্ষের প্রতিবাদের রাজনীতিকে বন্ধ করা হবে। সরকার সেটাই চান। কারণ শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণের বহুমূখী পরিকল্পনা সরকারের আছে। সরকার সেটা নির্বিঘ্নে করতেই তার দলীয় উপাচার্যদের দ্বারা এমন আলোচনা তুলেছেন। এত করে সরকারি ছাত্রসংগঠন আরো বেশি করে সন্ত্রাস-অপকর্ম করার সুযোগ পাবে।