সাম্যবাদ প্রতিবেদক
আওয়ামী নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের জবরদস্তিমূলক শাসনের প্রথম বাজেট প্রণীত হয়েছে। এ বাজেট শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় গড়ে ওঠা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক মুষ্টিমেয় ধনকুবের শিল্পপতি-ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর লাগামহীন দুর্নীতি ও শোষণ-লুণ্ঠনেরই ব্যবস্থাপত্র। জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা পূরণের পরিবর্তে এ বাজেটে মূল্য ও ভ্যাট-করের বোঝা চাপানো হয়েছে। ফলে এ ধরনের গণবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের শক্তি গড়ে তুলতে সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে ২০১৪-‘১৫ অর্থবছরের বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় ৬ জুন বিকাল সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাজেট সম্পর্কে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন ও স্টক মার্কেটগুলোর নেতৃবৃন্দের উচ্ছসিত প্রসংশা সাধারণ মানুষকে শঙ্কিত করে তোলে। অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষ নিজেদের উপর মূল্যবৃদ্ধি, ট্যাক্স-কর-ভ্যাটের খড়গ ঝুলতে দেখে। তিনি বলেন, বিভিন্ন মহলের অব্যাহত প্রতিবাদ উপেক্ষা করে কালোটাকা সাদা করার বিধান অত্যন্ত চতুরতার সাথে বহাল রাখা হয়েছে। অথচ এই কালোটাকার মালিকদের দাপটে দেশের অর্থনীতি ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত নৈরাজ্য বিরাজ করছে। এমনকি খোদ আইনের রক্ষকদের বিরুদ্ধে বেআইনি খুন-খারাবিসহ গুম-খুন-অপহরণ-ডাকাতি-ছিনতাইয়ে লিপ্ত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য প্রকাশিত হচ্ছে। এসব বাহিনী আসলে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালানোর প্রশিক্ষিত ও সংগঠিত মাস্তান বাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়। অথচ এসব বাহিনীর জন্যেই দিনের পর দিন বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তিনি এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কমরেডস শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, মানস নন্দী ও জহিরুল ইসলাম। সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল গুলিস্তান, হাইকোর্ট, বায়তুল মোকাররমসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন সংসদে উপস্থাপিত বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর কোনো প্রচেষ্টা নেই। নতুন শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের কোনো পরিকল্পনা নেই। দেশের বেশিরভাগ মানুষ কৃষক ও কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের কোনো পরিকল্পনা নেই। দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয়কারী গার্মেন্ট শ্রমিকসহ দেশের শ্রমজীবী জনগণের জন্য বাজেটে কোনো বরাদ্দ নেই। সর্বোপরি শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়েনি। ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার বাজেটে যে ৮৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে তা অপ্রতুল।