Saturday, November 23, 2024
Homeফিচারসরকারের ‘উন্নয়নে’ বিপর্যস্ত জনগণ : এ উন্নয়ন কার?

সরকারের ‘উন্নয়নে’ বিপর্যস্ত জনগণ : এ উন্নয়ন কার?

SPB_15.10.14-4সাম্যবাদ প্রতিবেদক
মহাজোট সরকার তাদের ভাষায় একের পর এক ‘সাফল্য’ অর্জন ও ‘কৃতিত্ব’ প্রদর্শন করে চলেছেন। সম্প্রতি মন্ত্রীসভার বৈঠকে উপস্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের রিপোর্টে গত এক বছরে সরকারের অর্জন তুলে ধরে দেশের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে গত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ১০৪৪ ডলার থেকে বেড়ে ১১৯০ ডলার হয়েছে, রপ্তানি আয় ১১.৬৯% বেড়েছে, রাজস্ব আয় বেড়েছে ৮.৩৫%, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০.৪৪% বেড়েছে, মূল্যস্ফীতি ৮.০৬% থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৯৭%। প্রশ্ন হলো, দৃশ্যতঃ এত অগ্রগতির পরও সাধারণ মানুষের অবস্থা কি? সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্ট সদস্যদের আন্তর্জাতিক দুটি সংগঠনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রার্থীরা। ৫ জানুয়ারির ‘নির্বাচন’-এর মাধ্যমে গঠিত বর্তমান সংসদ ও সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি-সমর্থনের ফলেই এই বিজয় বলে সরকার উচ্চস্বরে দাবি করে চলেছে। বিদেশ থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে আসা হচ্ছে, কিন্তু দেশের মানুষ ওই নির্বাচন ও সংসদকে কি দৃষ্টিতে দেখে? সরকারি মহলের অনেকে পরোক্ষে বলছেন, “গণতন্ত্র কিছু কম থাকলে ক্ষতি কি, দেশে উন্নয়ন তো হচ্ছে”। সত্যিই কি দেশ খুব ভালো চলছে?
মহাজোট সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এতে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের বিল দ্বিগুণেরও বেশি বাড়বে। ডিজেল-কেরোসিন ও বিদ্যুতের দামও আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। এর ফলে বেশি বিল দেয়ার পাশাপাশি জিনিসপত্রের দাম, বাড়িভাড়া-গাড়িভাড়াসহ জীবনযাত্রার ব্যয় আরেক দফা বাড়বে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন, সীমিত আয়ের সাথে বর্ধিত ব্যয়ের হিসেব কি করে মিলবে? গ্যাস খাতে কোন লোকসান ছিল না, লাভজনক এই সেক্টরে মূল্যবৃদ্ধির একমাত্র উদ্দেশ্য সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো। সেই বর্ধিত আয়ের বেশিরভাগই জনকল্যাণে কাজে লাগবে না, বরং লুটপাট-দুর্নীতি-অপচয়ের মাধ্যমে সরকারের সুবিধাভোগী লোকজনের পকেট ভারি হবে। নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামায় মন্ত্রী-এমপিরা তাদের সম্পত্তির যেটুকু হিসাব দিয়েছেন তা থেকেই পরিষ্কার – গত ৫ বছরে তারা বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। লতিফ সিদ্দিকীকে কেন্দ্র করে যেসব তথ্য সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেশের মানুষ দেখেছে মন্ত্রী থাকাকালে তিনি একাই কি পরিমাণ দুর্নীতি-অনিয়ম-ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। সুইস ব্যাংকে, মালেশিয়ার সেকে- হোম প্রকল্পে, কানাডায় ইমিগ্রেশনের সুযোগে বাংলাদেশ থেকে কত কালো টাকা পাচার হয়েছে তার হিসাব গণমাধ্যমে এসেছে। অথচ দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতির প্রমাণ খুঁজে পাচ্ছে না, অভিযুক্ত সরকারি দলের লোক হলে তাদের নিরপরাধ ঘোষণা করে দায়মুক্তি দিচ্ছে।
অন্যদিকে দেশে খুন-অপরাধ-অপহরণ বাড়ছে, মানুষের জীবনে নিরাপত্তা ও স্বস্তি নেই। সরকারি দলের আশ্রিত গডফাদার-সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ-টে-ারবাজরা বেপরোয়া, আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে চলছে খুনোখুনি। র‌্যাব-পুলিশ-ডিবি বন্দুকযুদ্ধ-এনকাউন্টার-ক্রসফায়ারের নাম দিয়ে অবাধে মানুষ হত্যা করছে। এমনকি টাকার বিনিময়ে বা ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় ব্যবহার করে খুন-জখম করা হচ্ছে। প্রায়দিনই বেওয়ারিশ লাশ মিলছে বিভিন্ন স্থানে। পারিবারিক-দাম্পত্য কলহের জের ধরেও ঘটছে নৃশংস হত্যাকা-। নারী নির্যাতন-ধর্ষণ ভয়াবহভাবে বাড়ছে। শিশু-কিশোরীদের ওপর যৌন নিপীড়ন, ব্ল্যাকমেইলিং, পরিণামে হত্যা-আত্মহত্যার অনেক ঘটনা পত্রপত্রিকায় এসেছে। দেশে সহিংসতা-বিচারহীনতার সংস্কৃতি, অসহিষ্ণুতা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অবক্ষয়, মাদক-পর্ণোগ্রাফির বিস্তার, নীতি-নৈতিকতা-মূল্যবোধহীন ভোগসর্বস্ব জীবনদর্শনের পৃষ্ঠপোষকতা এসব কিছুই সমাজকে অমানবিক করে তুলছে।
সম্প্রতি নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩ জনের মৃত্যু, লঞ্চডুবিতে মৃত্যুর মিছিল আবারো দেখিয়ে দিল এদেশে সাধারণ মানষের জীবন কত মূল্যহীন। মালিকদের মুনাফার লোভে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই, বাস-ট্রাক ড্রাইভারদের মাসিক বেতনের পরিবর্তে ট্রিপ সংখ্যা অনুসারে পাওনা প্রদান, চালকদের প্রশিক্ষণ-বিশ্রামের ব্যবস্থা না করা ইত্যাদি কারণে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। রানা প্লাজা ধস ও তাজরিন গার্মেন্টসে আগুনের ঘটনায় দায়ী মালিকদের বিচার এখনো হয়নি, নিহত শ্রমিকদের সবাই এখনো ক্ষতিপূরণ পাননি।
সরকার পাসের হার বেশি দেখিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্যের কৃতিত্ব দাবি করলেও তাতে মানসম্মত শিক্ষা কতটুকু হয়েছে সে প্রশ্ন সচেতন মহলে উঠেছে। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষায় পাস নম্বর পেতে ব্যর্থ হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষাব্যবসা ও বেসরকারিকরণকে উৎসাহিত করার ফলে শিক্ষার খরচ দিনদিন বাড়ছে, গরিব মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ বাতিল করে উচ্চশিক্ষায় সংকোচন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এর ফলে একদিকে শিক্ষাক্ষেত্রে ধনী-গরিব বৈষম্য তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে শিক্ষার মূল্যবোধ ও জ্ঞানচর্চার পরিবেশ ধ্বংস হয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ দুর্নীতি ছেয়ে ফেলছে শিক্ষাঙ্গনকে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে সরকারি প্রশ্রয়ে দলীয়করণ-সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব। শিক্ষার মাধ্যমে কারিগরি দক্ষতা কিছুটা অর্জিত হলেও মানবিক মূল্যবোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতাসম্পন্ন চিন্তাশীল বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ তৈরির পরিবর্তে আত্মকেন্দ্রিক, ভোগবাদী ও অন্ধত্ব-যুক্তিহীন ভাবমানসের বিস্তার ঘটছে।
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার যতটুকু অবশেষ দেশে ছিল তা-ও ধ্বংস করতে উদ্যত হয়েছে। পুনরায় ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রহসনমূলক একটি নির্বাচন করে জনগণের ন্যূনতম ভোটাধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাচনেও ফলাফল নিজেদের পক্ষে রাখতে ভোট ডাকাতি চালিয়েছে। এখন সম্প্রচার নীতি, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়া ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচারমাধ্যম ও বিচারবিভাগকে নিজেদের পূর্ণ দলীয় কর্তৃত্বে আনতে চাইছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের ব্যবহার করে বলপ্রয়োগে বিরোধীদের দমন করা হচ্ছে। সরকার নিজেদের ক্ষমতা জায়েজ করতে একদিকে মৌলবাদ-জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় যুদ্ধংদেহী ভাবের অভিনয় করছে, অন্যদিকে আবার তাদের সাথেই গোপন সমঝোতা করে গদি নির্বিঘœ করতে চাইছে। মীরপুরের বিহারী ক্যাম্প, যশোর অভয়নগর, রামু, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা ও তাদের জমি-সম্পত্তি দখলের সাথে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’র ধ্বজাধারী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরাও যুক্ত, কিন্তু তার কোনো বিচার হয়নি। পাহাড় ও সমতলে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে জমি দখল করা হচ্ছে, পাহাড়ে অঘোষিত সামরিক সামন চলছে, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে সমস্ত ধরনের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। শাসক দলের নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বে বেপরোয়া লুটপাট, দখল, চাঁদাবাজি সীমা ছাড়িয়েছে। কোরবানির গরুর হাট ও পশু চামড়ার ব্যবসাও তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে হবার উপায় নেই।
‘উন্নয়ন’-এর নানা চটকদার প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হলেও এবারের বন্যায় ও নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষের পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের বিষয়ে সরকারের মাথাব্যথা নেই। গত ৪৩ বছরের পুঁজিবাদী ‘উন্নয়নের জোয়ার’-এ দেশের অর্থনীতির তথাকথিত প্রবৃদ্ধি হয়েছে, মহাজোট সরকার তাদের ঘোষিত ‘মধ্য আয়ের দেশ’ বানানোর লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। ধনকুবের শিল্পপতি-ব্যবসায়ী, বুর্জোয়া রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, অসৎ সামরিক-বেসামরিক আমলা ও তাদের সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত ধনিকগোষ্ঠীর সম্পদ বাড়ছে। কিন্তু শ্রমিক-কৃষক গরিব-মধ্যবিত্ত বিপুল জনসাধারণ মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, অভাব-অনটনে হাঁসফাঁস করছে। এদেশের সম্পদ সৃষ্টিতে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি সেই গার্মেন্টস শ্রমিক হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটেও মানুষের মতো বাঁচার উপযোগী মজুরি পায় না, কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত, প্রবাসী শ্রমিকরা প্রায় দাসের মত জীবনযাপন করে, মধ্যবিত্ত শিক্ষিত শ্রমশক্তি অনিশ্চয়তাপূর্ণ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, ছিন্নমূল বস্তিবাসীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মুষ্টিমেয় ধনকুবের গোষ্ঠী এদেশের জমি-কারখানা-উৎপাদন যন্ত্রসহ সবকিছুর মালিক, তাদের স্বার্থেই অর্থনীতি-রাজনীতি-সমাজ পরিচালিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি-জামাত এসব দল এই ব্যবস্থাকেই টিকিয়ে রেখে তার সুবিধা ভোগ করতে চায়। ব্যক্তিমালিকানাভিত্তিক এই পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণেই উদয়াস্ত পরিশ্রম করেও গরিবের দুর্দশা কাটে না, অন্যদিকে মালিকরা টাকার পাহাড় গড়ে।
বাংলাদেশে এই পুঁজিবাদী উন্নয়নের গতি আরো বাড়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চীন-ভারত-রাশিয়াসহ পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো এদেশে পুঁজি বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাড়াতে চায়। বাংলাদেশের সস্তা শ্রম, প্রাকৃতিক সম্পদ ও অবকাঠামো খাতে লুণ্ঠনের সুযোগ তাদের প্রধান আকর্ষণ। এ দেশে আপেক্ষিক অর্থে শক্তিশালী যে ধনকুবের গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে তারাও তাদের পুঁজির ক্ষমতা, এদেশের বিপুল শ্রমশক্তি ও বিশাল বাজারকে কাজে লাগিয়ে আরো বেশি লুণ্ঠন ও মুনাফার সুযোগ চায়। দেশি-বিদেশি এই লুটেরারা তাদের স্বার্থে এমন সরকার চায় যারা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, জনগণের আন্দোলন-বিক্ষোভ বিশেষ করে শ্রমিক অসন্তোষ দমন করে মালিকদের অবাধ শোষণের সুযোগ করে দেবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ শক্ত হাতে এ ধরণের কর্তৃত্বমূলক শাসনব্যবস্থা পরিচালনার উপযোগী অধিকতর সংগঠিত শক্তি। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সমর্থকগোষ্ঠী রয়েছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার ক্ষমতাও অনেক বেশি। ফলে যতক্ষণ পর্যন্ত বর্তমান সরকার পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারবে ততক্ষণ জনগণের চোখে অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী দুঃশাসন হলেও তাকে মদদ দিয়ে যাবে দেশের ধনিকগোষ্ঠী। দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা যাই থাকুক, এ কারণেই বর্তমান সরকারের পেছনে দেশের বুর্জোয়া রাষ্ট্রব্যবস্থার বিভিন্ন অঙ্গ আমলাতন্ত্র, সামরিক বাহিনী, বিচারবিভাগ, প্রচারমাধ্যমের বড় অংশ সমর্থন দিয়ে চলেছে। পুঁজিবাদী উন্নয়নের ফলে ধনিকগোষ্ঠীর সম্পদবৃদ্ধির কিছুটা ভাগ মধ্যবিত্তদের একাংশ পাচ্ছে, ফলে তাদের মধ্যেও ‘যে-কোনোভাবে উন্নয়ন হলেই হল’ – এই মনোভাব বাড়ছে। এই অবস্থা গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণ পদদলিত করে দেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েমের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
কিন্তু পুঁজিবাদী শোষণমূলক ব্যবস্থার অনিবার্য পরিণতিতে বৈষম্য, বঞ্চনা, জনজীবনের সংকট বাড়তে থাকবে। এর বিরুদ্ধে জনমনে অসন্তোষ বাড়বে, নানা দাবিতে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ হতে থাকবে। এদেশের মানুষের গণতন্ত্রের আকাঙ্খা ও সংগ্রামের ঐতিহ্য শাসকগোষ্ঠীর পরিকল্পনার পথে প্রতিবন্ধক। জনজীবনের সংকট নিরসন, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা ও শ্রমিক-কৃষক-গরিব মানুষের দাবিতে একের পর এক আন্দোলন গড়ে তুলে বামপন্থীদের নেতৃত্বে জনগণের সংগঠিত, সচেতন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে পারলেই বর্তমান পরিস্থিতির সত্যিকার পরিবর্তন সম্ভব।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments