বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনা প্রতিহত করুন
পুনরায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর সরকারী পরিকল্পনা অবিলম্বে বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড আলমগীর হোসেন দুলাল-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমরেড্স মানস নন্দী, উজ্জ্বল রায়, ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক, সাইফুজ্জামান সাকন প্রমুখ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, মহাজোট সরকার আরেক দফা বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণের জীবনে নতুন দুর্ভোগ নামিয়ে আনছে। ভর্তুকি কমানোর নাম করে এই মূল্যবৃদ্ধি করা হচ্ছে, অথচ গ্যাস খাতে যা কিছু ভর্তুকি তার মূল কারণ বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে বেশি দামে গ্যাস কেনা। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্যাস তুললে এই ভর্তুকির প্রয়োজন হত না। বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও ভর্তুকির প্রধান কারণ দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর নামে তেলভিত্তিক রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সরকারী নীতি। এইভাবে জনগণের অর্থ দিয়ে দেশি-বিদেশি লুটপাটকারীদের পকেট ভরানোর নীতি বাস্তবায়ন করতেই বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। মহাজোট সরকারসহ আমাদের শাসক দলগুলো বিদ্যুৎ-গ্যাস-জ্বালানি তেল-পানি-শিক্ষা-চিকিৎসাসহ সবকিছুকে পণ্যে পরিণত করতে চায়। পুঁজিপতিদের মুনাফা লোটার সুযোগ করে দিতেই তাই তারা দফায় দফায় এসব সেবার দাম বাড়ায়। শক্তিশালী গণআন্দোলনের চাপে মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করতে সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
চট্টগ্রাম : বাসদ (মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে ২ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টায় শহরের নিউমার্কেট মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সদস্য সচিব অপু দাশ গুপ্ত-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শফিউদ্দীন কবির আবিদ, নিজাম উদ্দীন, জান্নাতুল ফেরদাউস পপি প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সমাবেশের বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
রংপুর : ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পুনরায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর সরকারী পরিকল্পনা অবিলম্বে বাতিলের দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জাহাজ কোম্পানী মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। পলাশ কান্তি নাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আহসানুল আরেফিন তিতু।
দিনাজপুর : ২ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় বাসদ(মার্কসবাদী) দিনাজপুর জেলা শাখার পক্ষ থেকে সরকারের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল এর আয়োজন করা হয়। দিনাজপুর প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট : বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ২ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েবের সভাপতিত্বে এবং সংগঠক মুখলেছুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার সদস্য রেজাউর রহমান রানা, বাংলাদেশ চা- শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার আহ্বায় বীরেন সিং, ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রুবাইয়াৎ আহমেদ, শাবিপ্রবি শাখার আহ্বায়ক অনীক ধর প্রমুখ।
নবীগঞ্জ : বাসদ (মার্কসবাদী) নবীগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় নবীগঞ্জ কার্যালয়ে এক কর্মীসভার আয়োজন করা হয়। কর্মীসভায় বাসদ (মার্কসবাদী) নবীগঞ্জ উপজেলার সংগঠক ও সাম্যবাদ পাঠক ফোরামের সমন্বয়ক ডাঃ সুব্রত চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ জেলা সংগঠক শফিকুল ইসলাম, নবীগঞ্জ উপজেলার নেতা নরেন্দ্র পাল, দিপু দাস, কাঞ্চন চক্রবর্তী, তমাল ভট্টাচার্য, অসিত দাশ প্রমুখ। সভায় বক্তাগণ পুজিপতিদের স্বার্থে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সরকারী চক্রান্ত বন্ধ করার আহ্বান জানান। সভার শুরুতে বাসদ নবীগঞ্জ উপজেলার সাবেক সমন্বয়ক মহসিন আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সংগ্রামের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
বগুড়া : ২ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় বাসদ (মার্কসবাদী) বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে স্থানীয় সাতমাথায় বাসদ (মার্কসবাদী) বগুড়া জেলা শাখার সমন্বয়ক সামছুল আলম দুলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রঞ্জন দে, আমিনুল ইসলাম, শীতল সাহা।
গাইবান্ধা : গ্যাস এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলা শাখা। ২ ডিসেম্বর বিকেলে মিছিল পূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বাসদ আহ্বায়ক আহসানুল হাবিব সাঈদ, সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু, কাজী আবু রাহেন শফিউল্লাহ খোকন, নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী।
এ সময় নেতৃবৃন্দ গাইবান্ধা জেলার সর্বত্রে যাত্রার নামে অশ্লীল নৃত্য, মাদক-জুয়া বন্ধে কার্যকর প্রশাসনিক উদ্যোগেরও দাবি জানান। তারা ফুলবাড়ী থেকে প্রতারক এশিয়া এনার্জিকে প্রত্যাহার করাসহ উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের অপচেষ্টা বন্ধ করার জোর দাবি জানান।
গাজীপুর : ৫ ডিসেম্বর বিকেলে গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা সমন্বয়ক তরুণ কান্তি বর্মণ, মসিউর রহমান খোকন, নাইস পারভীন।
ময়মনসিংহ : ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে রেলস্টেশন চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা সমন্বয়ক শেখর রায়, অজিত দাস।
নোয়াখালী : গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারার প্রতিবাদে বাসদ (মার্কসবাদী) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ২ ডিসেম্বর সকালে জেলা শহরের মাইজদীর টাউন হল মোড়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচিতে জেলা আহ্বায়ক অধ্যাপক মতিনউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নোয়াখালী জেলা আহ্বায়ক আ ন ম জাহের উদ্দীন, জেলার সদস্য সচিব দলিলুর রহমান দুলাল, সদস্য মুক্তিযোদ্ধা তারকেশ্বর দেবনাথ নান্টু, বিটুল তালুকদার ও মোবারক হোসেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
চাঁদপুর : বাসদ (মার্কসবাদী) চাঁদপুর শহর শাখার উদ্যোগে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয। ২ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় জেলার শপথ চত্বরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা শাখার সদস্য আজিজুর রহমান, জিএম বাদশাহ, বিধূ ভূষন নাথ, সাদ্দাম হোসেন। পরে একটি মিছিল নতুন বাজার মোড়ে এসে শেষ হয়।
ঢাকা : পুনরায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর সরকারি পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে ৫ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় মিরপুর ১২ নম্বর থেকে মিছিল শুরু হয়ে পল্লবী, মিরপুর-১১ ঘুরে পূরবী সিনেমা হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পথসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড সাইফুজ্জামান সাকন, কল্যাণ দত্ত।
এছাড়া ঢাকার সূত্রাপুর, লালবাগ ও মোহাম্মদপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষীদের আন্দোলনের বিজয়
ঠাকুরগাঁয়ে ভেজাল আলুবীজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষীরা আন্দোলন চালিয়ে বিজয় অর্জন করেছে। আন্দোলনের মুখে বীজ কোম্পানি সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়েছে।
চলতি মৌসুমে কেমিস্ট এগ্রো ক্রপ কেয়ার লি. নামের একটি কোম্পানি থেকে বীজ কিনে প্রায় ২০ একর জমিতে চাষীরা আলুচাষ করে। কিন্তু বীজগুলো ভাইরাস আক্রান্ত থাকায় ৯৫ ভাগ চারা মরে যায়। আলুচাষী রাধারাম সুগারমিলের ৩ একর জমি লিজ নিয়ে স্থানীয় একটি এনজিও-র কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আলুচাষ করেছিল। বিধবা লক্ষ্মীরানী তার সমস্ত সঞ্চয় প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করে আলুচাষ করেছিল ৩ একর জমিতে। এমনিভাবে সমস্ত আলুচাষী দেউলিয়া হয়ে যাবার উপক্রম হয়।
বীজ কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়, চাষীরা যেহেতু অর্ধেক দাম পরিশোধ করে বীজ নিয়েছে, তাই তাদের আর বাকি দাম দিতে হবে না। কিন্তু চাষীরা এ প্রস্তাবে রাজি না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। তারা ফসলের দামের সমান ক্ষতিপূরণ দাবি করে। ক্ষতিপূরণের দাবিতে আলুচাষীরা গত ১০ ডিসেম্বর শহরে মানববন্ধন করে। আলুচাষীদের প্রতিবাদের মুখে স্থানীয় উপ-কৃষি কর্মকর্তা মাঠ পরিদর্শন করেন। এরপর বিএডিসির বিডি চাষীদের সাথে দেখা করে তাদের ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেয়ার আশ্বাস দেন।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে শিক্ষার নৈতিক ভিত্তি ধ্বংসের চক্রান্ত রুখে দাঁড়ান
পিএসসি’র প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রতিবাদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ২৬ নভেম্বর বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন, সাধারণ সম্পাদক ¯েœহাদ্রী চক্রবর্ত্তী রিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস, অর্থ সম্পাদক মলয় সরকার প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে সাইফুজ্জামান সাকন বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা মোটেও নতুন নয়। গত বছর একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটলেও সরকার প্রথমে নির্বিকার থেকেছে। পরবর্তীতে পত্রপত্রিকার প্রমাণ এবং সারাদেশের অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী মহলের প্রতিবাদে সরকার লোক দেখানো কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আজ পর্যন্ত অভিযুক্তদের কোন শাস্তি বা তদন্তও দিনের আলোতে আসেনি। শিক্ষার নৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়ার মত এত বড় ঘটনায় প্রশাসনের এই উদাসীনতা প্রমাণ করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার সাথে সরকারের রাঘব বোয়ালরা যুক্ত। তিনি আরো বলেন, যে সরকারি নীতি শিক্ষাকে পুরোপুরি বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করেছে – প্রশ্নপত্র ফাঁস তারই ফলাফল। মনুষ্যত্ব, জ্ঞান অর্জন আজ শিক্ষার উদ্দেশ্য নয়। যেনতেনভাবে পাশ আর সার্টিফিকেট নেয়াকে শিক্ষার উদ্দেশ্য করে তোলা হয়েছে।‘টাকা যার শিক্ষা তার’ এই রাষ্ট্রীয় নীতির কারণে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষাপ্রশাসন দলীয়করণের পঙ্কে নিমজ্জিত।
বক্তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষাবিদ-শিক্ষানুরাগী সবাইকে শিক্ষার নৈতিক ভিত্তি ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
দিনাজপুর : বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে শিক্ষার নৈতিক ভিত্তি ধ্বংসের চক্রান্তের প্রতিবাদে ছাত্র ফ্রন্ট দিনাজপুর জেলা শাখার পক্ষ থেকে ৪ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী চলমান মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন জেলা সভাপতি এএসএম মনিরুজ্জামান, দিনাজপুর সরকারি কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, পরিচালনা করেন জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রানা।
চাঁদপুর : ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। মানববন্ধন পরবর্তী সমাবেশে সাদ্দাম হোসেনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন শিশির মাহমুদ সাদ্দাম, বাদল চন্দ্র দাস এবং সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রহিমা আক্তার কলি।
রংপুর : প্রশ্নফাঁসের প্রতিবাদে ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলা কমিটির উদ্যোগে ৪ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে ছাত্র ফ্রন্ট জেলা কমিটির সভাপতি আহসানুল আরেফিন তিতুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন, ছাত্র ফ্রন্ট কারমাইকেল কলেজ শাখার সভাপতি আবু রায়হান বকসী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আহবায়ক মনোয়ার হোসেন।
এছাড়া নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, বগুড়া, যশোর সহ বিভিন্ন জেলায় কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
রোকেয়া দিবস পালিত
নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার ১৩৪তম জন্ম ও ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে ৯ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় র্যালিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল প্রাঙ্গনে অবিস্থত রোকেয়ার ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এড. সুলতানা আক্তার রুবি, সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন। রোকেয়ার ভাস্কর্য চত্বরে নারীমুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে রোকেয়ার উদ্ধৃতি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ৯ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে অবস্থিত বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
সিলেট : নারী মুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে সংগঠনের কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আহবায়ক ডা. ফাতেমা ইয়াছমিন ইমা এবং পরিচালনা করেন তামান্না আহমদ। বক্তব্য রাখেন এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, সুশান্ত সিন্হা সুমন, রুবাইয়াৎ আহমদ, মিতা সিং, আজিরুন বেগম, শেলী দাস প্রমুখ।
বগুড়া : বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে সকাল ১১টায় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালি শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নুরজাহান রেখার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্ত।
গাইবান্ধা : জেলা শাখার উদ্যোগে বিকাল ৩টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলার সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু।
চট্টগ্রাম : নারীমুক্তি কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে ৯ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় নিউ মার্কেট চত্বরে। সংগঠনের সভাপতি পপি চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সদস্য সচিব অপু দাশগুপ্ত। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন মনিদীপা ভট্টাচার্য।
রংপুর : নারীমুক্তি কেন্দ্র রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে সাম্যবাদ কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের রংপুর জেলার সদস্য আলো বেগমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মাকর্সবাদী) রংপুর জেলা কমিটির সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, পলাশ কান্তি নাগ, নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সদস্য ইয়াসমিন হক, রোকনুজ্জামান রোকন, কামরুন্নাহার খানম শিখা।
কারমাইকেল কলেজ : ছাত্র ফ্রন্ট কারমাইকেল কলেজ শাখার উদ্যোগে রোকেয়া দিবস উপলক্ষে কারমাইকেলে ২ দিন ব্যাপি কর্মসূচি পালন করা হয়। ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া ম্যুরালে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও ১০ ডিসেম্বর কুইজ-রচনা প্রতিযোগিতার পুরুস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুইদিন ব্যাপি কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম মওলা খান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে সকাল ৯টায় ব্যাজ ধারণ, সকাল ১১টায় রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মুক্তিযুদ্ধ স্মারক ভাস্কর্য চত্বরে কোটেশন প্রর্দশনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। চারণ সংগঠক তিথি চক্রবর্তীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী, চারণ সংগঠক সমিত ভৌমিক।
ইডেন কলেজ : ছাত্র ফ্রন্ট ইডেন কলেজ শাখার উদ্যোগে সকাল ১১টায় কলেজ ক্যাম্পাসে বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং প্রবন্ধ রচনা ও সাধারণজ্ঞান প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া রোকেয়ার উপর দেয়ালিকা প্রকাশিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা সুস্মিতা রায় সুপ্তি, ইডেন কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক তৌফিকা দেওয়ান লিজা, সায়মা আফরোজ, লুবাইনা আক্তার আন্নি, তামান্না হীরা।
বাসদ (মার্কসবাদী) চৌগাছা থানা কমিটি গঠিত
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) চৌগাছা থানার এক কর্মী সভা ৭ ডিসেম্বর মশিউরনগর বাজারে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমরেড হারুন-অর-রশিদ। সভায় আলোচনা করেন বাসদ যশোর জেলার সমন্বয়ক কমরেড হাসিনুর রহমান, প্রবির মিত্র, ছাত্র নেতা ইমরান খান। সভায় কমরেড হারুন-অর রশিদকে সমন্বয়ক করে ৮ সদস্যবিশিষ্ট পাঠচক্র কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন প্রবির মিত্র, সহিদুর রহমান, মো: আজিজুর রহমান, মশিয়ার রহমান, আবদুল্লাহ, ইমরান হোসেন, গোলাম হোসেন ও রবিউল ইসলাম।
সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনের যোদ্ধা বিচারপতি আইয়ারের মৃত্যুতে শোক
প্রখ্যাত আইনবিদ, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এবং অল ইন্ডিয়া অ্যান্টি ইমপিরিয়ালিস্ট ফোরামের সভাপতি ভি আর কৃষ্ণ আইয়ার কেরালার কোচিতে ৪ ডিসেম্বর শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। বিচারপতি আইয়ার সামাজিক ন্যায়বিচারের একজন বলিষ্ঠ প্রবক্তা ছিলেন এবং আজীবন তিনি সাধারণ মানুষের স্বার্থে লড়াই করে গেছেন। কেরালায় যখন তিনি আইনমন্ত্রী ছিলেন, সাধারণ মানুষের স্বার্থে একাধিক আইনের খসড়া তিনি রচনা করেছিলেন। পরবর্তীকালে কেরালা বিধানসভায় সেগুলি পাস হয়ে আইনে পরিণত হয়। তাঁর বক্তব্য ছিল, আইনি ব্যবস্থাকে অবশ্যই সমাজের বঞ্চিত ও সুযোগসুবিধাহীন অংশের মানুষের সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই কাজ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবেও তিনি একাধিক দৃষ্টান্তমূলক রায় প্রদান করেন। তাঁর দেওয়া এই রায়গুলি সর্বদাই আইনের শাসন ও সাংবিধানিক অধিকারের ধারণাকে তুলে ধরে। সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকদের প্রতি তাঁর দরদি মনটি এইসব রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে। মানবাধিকারের প্রশ্নেও বিচারপতি আইয়ার ছিলেন একজন নিরলস যোদ্ধা। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার দাবিতে সাধারণ মানুষের সংগ্রামকে তিনি শুধু সমর্থন জানিয়েই থেমে থাকেননি, সক্রিয়ভাবে তাতে অংশগ্রহণও করেছেন। শাসকশ্রেণীর সমালোচনার প্রশ্নেও তিনি কখনোই পিছিয়ে থাকেননি।
সাম্রাজ্যবাদেরও তিনি ছিলেন একজন নির্ভীক সমালোচক। বিভিন্ন দেশের উপর মার্কিন নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদে নেমে আসতেও তিনি কখনও দ্বিধা করেননি। এস ইউ সি আই (সি) দলের উদ্যোগে গঠিত অল ইন্ডিয়া অ্যান্টি ইমপিরিয়ালিস্ট ফোরামের প্রতিষ্ঠা কনভেনশনেই তিনি ওই সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন। আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ফোরাম আয়োজিত বিভিন্ন সভায় তাঁর প্রাণবন্ত উপস্থিতি প্রেরণাময় হয়ে উঠেছিল। তাঁর মৃত্যু সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি।
বাসদ (মার্কসবাদী) কার্য পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বিচারপতি আইয়ারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের এই সাহসী যোদ্ধার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।