বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ৫ জুন ২০১৫ এক বিবৃতিতে বাজেট সম্পর্কে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, উত্থাপিত বাজেটে স্বাস্থ্য-শিক্ষা-গবেষণা ও কৃষিখাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের ওপর বিভিন্ন কায়দায় ট্যাক্স-ভ্যাট-করের বোঝা চাপানো হয়েছে। অন্যদিকে একচেটিয়া বড় পুঁজির জন্য নতুন নতুন সুযোগ ও ছাড় দিয়ে জনগণের ওপর লুটপাটের মাত্রাকে আরও তীব্র করার পথ সুগম করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণের সম্পদ ধনীদের ঘরে কেন্দ্রীভবনের যে প্রক্রিয়া চলছে তা আরও প্রকট হবে। তিনি এ বাজেটের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য শ্রমজীবী-মেহনতী মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দুই লক্ষ আট হাজার চারশত তেতাল্লিশ কোটি টাকার ট্যাক্সের খাঁচার পুরে গরিব-মধ্যবিত্তকে তীব্র শোষণ করার পথ করা হয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত দ্রবের মূল্য বৃদ্ধির যাঁতাকলে মানুষ আটকে যাবে। অন্যদিকে গ্রাম-শহরের গরিব মানুষের জন্য রেশনিং, বেকারদের সারাবছর কাজের নিশ্চয়তা ও কমংসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন প্রকল্প, সমস্ত বয়স্ক ও অক্ষম নারী-পুরুষের বার্ধক্য ভাতা চালু করার দাবি সম্পূর্ণ উপক্ষো করা হয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট শিল্প বিকাশ ও কর্মসংস্থানের প্রশ্নে দিশাহীন। এ বাজেটে কৃষির ওপর নির্ভরশীল বিরাট সংখ্যক গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সামান্যতম রাষ্ট্রীয় সহায়তা নেই। সেচের ডিজেল-বিদ্যুৎ, সার-বীজের ওপর প্রত্যক্ষ ভর্তুকি নেই। উৎপন্ন ফসলের জন্য মূল্য সহায়তা নেই। একইভাবে দেশের শ্রমিক জনগোষ্ঠীর জন্য কোনো সহায়তা, কর্মপ্রত্যাশীদের জন্য কোনো পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি। পাচার হওয়া হাজার হাজার মানুষের জন্যও কোনো সহায়তার কথা বলা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকার ঘাটতির দায় পরোক্ষভাবে গরিব-মধ্যবিত্ত জনগণকেই টানতে হবে। এ হবে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো। অন্যদিকে এ বাজেটে কোনো ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স ছাড়া উচ্চমূল্যের বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির সুযোগ রাখা, কর্পোরেট পুঁজির জন্য নতুন নতুন সুবিধা প্রদান, ট্যাক্স হলিডে প্রদান, কালোটাকা সাদা করার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করা ইত্যাদির মাধ্যমে সরকার একচেটিয়া বড় পুঁজির স্বার্থ রক্ষার কাজই করেছে। তিনি এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।