পানিবন্টন, বাণিজ্য বৈষম্য, সীমান্ত হত্যার সমাধান না করে সমমর্যাদার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না
হামলা গ্রেফতারের প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে ৬ জুন সকাল থেকে বামমোর্চার বর্তমান সমন্বয়ক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশুকে গৃহবন্দী করে রাখা, তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া, বামমোর্চাভুক্ত দলগুলোর কার্যালয় পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা এবং কার্যালয়ে প্রবেশ অথবা সমাবেশের চেষ্টা মাত্র গ্রেফতারে মাধ্যমে বর্তমান সরকার যে চরম দমন-পীড়নের রাজত্ব সর্বশেষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তার তীব্র নিন্দা জানান।
উল্লেখ যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফর উপলক্ষে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বন্টন, ট্রানজিট, বাণিজ্য ঘাটতি, সীমান্ত হত্যাসহ বাংলাদেশ-ভারত অমীমাংসিত সমস্যাগুলো সমাধানের দাবিতে আজ ৬ জুন বিকেল সাড়ে চারটায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। এই সমাবেশ না হতে দেয়ার জন্য আজ সকাল থেকে কলাবাগান থানার পুলিশ মোশরেফা মিশুকে তার বাড়িতে আটক করে রাখে, তার মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নেয়। সকাল থেকেই তোপখানা রোডস্থ গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী) ও গণতান্ত্রিক বামমোর্চার কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে। বিকাল চারটায় বাদস(মার্কসবাদী) কার্যালয়ে প্রবেশে সময়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নগর সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা তমা রায় ও বদরুন্নেসা কলেজ শাখার নেতা সায়মা হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এছাড়া পুলিশ জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল ও নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার বেশ কয়েকজন কর্মীকে গ্রেফতার করে।
গণতান্ত্রিক বামমোর্চার পক্ষ থেকে বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য শহীদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহবায়ক হামিদুল হক, বাসদ (মাহবুব) আহবায়ক ইয়াসিন মিয়া এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে বলেন, ভারতের সাথে রাষ্ট্র হিসেবে সমমর্যাদা দাবি করা, অমীমাংসিত সমস্যার ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক সমাধান দাবি করাকেও রুদ্ধ করতে চায় আওয়ামী সরকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে এরচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা আর কিছু হতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ নিজ দেশের সরকারের কাছে দেশের স্বাথ রক্ষার দাবি করবে, এটাই স্বাভাবিক। বিশ্বব্যাপী এটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অংশ হিসেবেই স্বীকৃত। কিন্তু অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার সেই অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়ে, জনগণের মুখ বন্ধ করার যে তৎপরতা দেখালো, তা থেকে এটা পরিস্কার যে, বর্তমান সরকার দেশের স্বার্থ রক্ষা নয়, ভারতের কাছে নতজানু আত্মসমর্পণেরই নীতিরই পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনে বেশি আগ্রহী।
আগামী কর্মসূচি
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বন্ধ করা, কার্যালয় ঘেরাও, গৃহবন্দী রাখা, কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং ভারতের সাথে মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা তার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
৮ মে সোমবার সংবাদ সম্মেলন, সকাল ১১.৩০, ২৩/২ তোপখানা রোড (নিচতলা) বাম মোর্চার অস্থায়ী কার্যালয় ।
৯ মে মঙ্গলবার, সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। ঢাকার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বিকেল ৪.৩০ টায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে।