বাংলার নবজাগরণের পথিকৃৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১২৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলার আয়োজনে সংগঠন কার্যালয়ে ২৯ জুলাই ২০১৫ এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ইনচার্জ ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য সোমা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব কমরেড অপু দাশ গুপ্ত ও সদস্য কমরেড শফিউদ্দীন কবির আবিদ। সভা পরিচালনা করেন চারণ সংগঠক মেজবাহ উদ্দিন।
সভায় বক্তারা বলেন, মহান সমাজ সংস্কারক, সেক্যুলার মানবতাবাদী সমাজ চিন্তক, বাংলার নবজাগরণের পথিকৃৎ বিদ্যাসাগরের আজ ১২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। উনবিংশ শতকে ভারতবর্ষ তথা বাংলায় চিন্তায়, মননে, শিক্ষায়, সমাজে যে পরিবর্তনের সূচনা হয় তার যথার্থ রূপকার ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এই উপমহাদেশ তখন ছিল কুসংস্কার, কুপমন্ডুকতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি দ্বারা আচ্ছন্ন। এর বিরুদ্ধে প্রথম লড়াই করেন রাজা রামমোহন রায়। কিন্তু সেই লড়াই পরিপূর্ণ রূপ দিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর। তখনকার সমাজ যে অশিক্ষা, অজ্ঞানতায় ছিল তার বিপরীতে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারে তাঁর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। নারী সমাজের যে করুণ পরিস্থিতি তার বিরুদ্ধে বহুবিবাহ রোধ, বিধবা বিবাহ প্রচলনে গড়ে তুলেছিলেন সামাজিক আন্দোলন। নারী শিক্ষার প্রসারে রেখেছিলেন বড় ভূমিকা। শুধুমাত্র সমাজসংস্কারে নয় বাংলা ভাষার বিকাশেও তাঁর অবদান ছিল অনন্য।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, বিদ্যাসাগরের পুরো জীবনটা ছিল সংগ্রামময়। ছেলেবেলা থেকেই ছিলেন পরদুঃখে ছিলেন কাতর। নিজের জন্য যৎসামান্য রেখে দিয়ে দিয়েছেন অপরকে। দরিদ্র মানুষের ছিলেন পরম বন্ধু। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়িয়েছেন সবসময়। আজকের দিনেও এধরণের চরিত্র বিরল।
সভায় বক্তারা বলেন, আজকের দিনে আমাদের বিদ্যাসাগরের কর্মমুখর জীবন থেকে শিক্ষা নিতে হবে। পিছিয়ে পড়া সমাজের বিরুদ্ধে লড়বার যে তেজ তিনি দেখিয়েছেন তার থেকে শিখতে হবে। বক্তারা আজকের দিনে সমাজের যে অসংগতি, অজ্ঞানতা, অন্ধতা, কুসংস্কার রয়েছে এবং নারী সমাজ যে লাঞ্চনা, অবমাননা, অত্যাচারের শিকার হচ্ছে তার বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগরের চরিত্র থেকে শিক্ষা নিয়ে লড়াই করার আহবান জানান।