দেশব্যাপী লোমহর্ষক কায়দায় শিশু হত্যার প্রতিবাদে ৯ আগস্ট বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টু, দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী।
বক্তরা বলেন, ‘রাজন, রাকিব, রবিউল ও সামিউল হত্যাকান্ড সারা দেশের বিবেকবান মানুষদের স্তম্ভিত করেছে। শিশুরা আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। তারা পড়ালেখা করে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে আনন্দের সাথে বড় হবে এটাই প্রত্যাশা। কিন্তু আজ কী হচ্ছে আমাদের চারপাশে? পাশবিক ও অমানবিক কায়দায় শিশুদের হত্যা, ধর্ষণসহ নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। মানুষ যেন ক্রমেই বিবেক হারিয়ে পাশবিকতার চর্চা করছে। এই ঘটনাগুলো আমাদের সমাজের রুগ্ন চেহারাটিকেই বিকটভাবে প্রকাশ করছে। কিন্তু কেন আজকে দেশের এই অবস্থা? এদেশের মানুষ তো এমন অমানবিক ছিল না। আসলে দেশের শাসন ব্যবস্থায় এবং অর্থনীতিতে যে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে, যে ফ্যাসিস্ট সংস্কৃতির চর্চা চলছে, যে লুটপাটতন্ত্রের চর্চা চলছে — তারই ছবি আমরা সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। চরম পাশবিকতা-নৃশংসতা চালিয়েও আনন্দ পাবার সংস্কৃতি আজ সমাজ মননের অনেক গভীরে প্রোথিত হয়েছে। দোষীরা এমন ঘটনা ঘটার সাহস পাচ্ছে কেননা যে কোনো কিছু করেও শুধু ক্ষমতা, টাকা থাকলে এখানে পার পাওয়া যায়। এমন উদাহরণ আজ হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে।
বক্তরা আরও বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটলে আমরা দেখি, সরকার হয় ঘটনা ধামাচাপা দিতে চায় অথবা লোক দেখানো কিছু উদ্যোগ নেয়। এবারও তারা তাই করেছে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। সমাজ অভ্যন্তরে পরমতসহিষ্ণুতা, গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে না পারলে এ পরিস্থিতি থেকে বাঁচার কোনো পথ নেই। কিন্তু এমন পরিবেশের আজ ভয়াবহ সংকট। আজ ব্লগার, নাস্তিক আখ্যা দিয়ে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো একের পর মানুষ খুন করছে। এই পরিস্থিতি একটি সুস্থ ও গণতান্ত্রিক দেশে কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’ বক্তরা অবিলম্বে নারী-শিশু নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।