‘শিক্ষার সকল স্তরে ব্যয় বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলুন’ – এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মহান শিক্ষাদিবস উপলক্ষে আঞ্চলিক ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী। সমাবেশে ঢাকা নগর শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকার সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিক, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাসুদ রানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ইভা মজুমদার, ইডেন কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক তৌফিকা দেওয়ান লিজা। সমাবেশ পরিচালনা করেন সংগঠনের ঢাকা নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী। সমাবেশ শেষে দাবিনামা সম্বলিত প্লাকার্ড-ফেস্টুনসমেত একটি সুসজ্জিত মিছিল প্রেসক্লাব-হাইকোর্ট, পল্টন, দৈনিক বাংলা-বঙ্গভবন-গুলিস্তান প্রদক্ষিণ করে সংগঠন কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
প্রধান বক্তার আলোচনায় কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, “৬২-র শিক্ষা আন্দোলন করতে গিয়ে সে সময় এ দেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। সেদিন শিক্ষা হরণের বিপরীতে ছাত্ররা সর্বজনীন শিক্ষার দাবিতে লড়াই করেছিল। ৫৩ বছর পর আজ স্বাধীন দেশের সরকার শিক্ষায় ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ছাত্ররা তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করল। দেশ স্বাধীন হলেও ঔপনিবেশিক শাসকশ্রেণীর দৃষ্টিভঙ্গিতেই স্বাধীন দেশের সরকারগুলোও শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা করছে। পুঁজিবাদী সমাজে শিক্ষাকে মুনাফার পণ্যে রূপান্তর করেছে। ছাত্ররাই পারে আদর্শের উপরে দাঁড়িয়ে ন্যায্য অধিকার আদায় করতে।” তিনি আরো বলেন, “নানা ভোগবাদী অপসংস্কৃতির দ্বারা ছাত্রসমাজের চরিত্রও হরণ করা হচ্ছে। বড় মানুষদের চরিত্রের শিক্ষা নিয়ে পুঁজিবাদী সমাজ ভাঙার পরিপূরক শিক্ষা আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে নাঈমা খালেদ মনিকা বলেন, “স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সর্ব স্তরে শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির বিরুদ্ধে শিক্ষা দিবসের চেতনাকে ধারণ করে সংগঠন লড়াই করছে। গত বছরের শিক্ষা কনভেনশনের ধারাবাহিকতায় সেপ্টেম্বর মাস জুরে সারা দেশেই বিভাগীয়, আঞ্চলিক ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামীতে স্কুলে কোচিং, গাইডবই, প্রশ্ন পত্র ফাঁস বন্ধ, স্কুলকে শিক্ষার মূল কেন্দ্রে পরিণত করা; জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র পরীক্ষাহল নির্মাণ, ২১০ দিন ক্লাস নিশ্চিত করা; পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নাইটকোর্স বন্ধ করার দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।”