বাঁধাই শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা (রোজ) কাজের মজুরি কমপক্ষে ২৫০ টাকা, সবেতন সাপ্তাহিক ছুটি, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সূত্রাপুর থানা শাখার উদ্যোগে ২৫ ডিসেম্বর শুক্রবার, বিকাল ৪টায় পুরান ঢাকার লক্ষীবাজারস্থ বাহাদুর শাহ্ পার্কের সামনে সমাবেশ এবং পরবর্তীতে শ্যামবাজার, সূত্রাপুর, লক্ষীবাজার, বাংলাবাজারে শ্রমিকদের এক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে ৬৫, প্যারীদাস রোডস্থ বাংলাদেশ পুস্তক বাঁধাই ব্যবসায়ী সমিতি কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কচি। সমাবেশে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সূত্রাপুর থানা শাখার সংগঠক রাজীব চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড আ ক ম জহিরুল ইসলাম, ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক, ছাত্রনেতা মাসুদ রানা ও বাঁধাই শ্রমিক নেতা জামিল হোসেন, মানিক হোসেন, শাহিদুল ইসলাম, মনির হোসেন, যাদু মিয়া প্রমুখ।
শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, ১ জানুয়ারির মধ্যে সকল স্কুলে বই পৌঁছাতে রাত দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে যে শ্রমিকরা, তাদের সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পরিশ্রমের করেও বাঁচার মতো মজুরি পাচ্ছে না। বর্তমানে বাড়ী ভাড়া, গাড়ী ভাড়া, গ্যাস বিদ্যুতের যেভাবে মূল্য বেড়েছে, চাল ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির সময়ে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করে এক রোজ মাত্র ১৫০-১৭০ টাকা মজুরিতে কীভাবে চলে এই শ্রমিকের সংসার? নারী শ্রমিকরা সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পায় মাত্র ১০০- ১২০ টাকা আর শিশু শ্রমিকরা সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করে পায় তিন বেলা খাবার ও মাস শেষে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। নেই কোন সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসে সরকারি ছুটি। এমনকি গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসেও কাজ করতে হয়েছে সব শ্রমিককে।
শ্রমিকরা আরো বলেন, আমরা সারা জীবন বাঁধাই কারখানায় কাজ করলেও পুরাতন কাটিং মেশিনের ত্রুটিতে আমাদের হাত কেটে পড়ে গেলে মালিকরা আজীবন সহযোগিতার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে, দু’মাস পরে কোন টাকা না দিয়ে তাড়িয়ে দেয় দুর্ঘটনা কবলিত শ্রমিককে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের নীতিমালা আজ প্রয়োজন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, “বাঁধাই শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা (রোজ) কাজের মজুরি ২৫০ টাকা, সবেতন সাপ্তাহিক ছুটি, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের নীতিমালার দাবি আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করতে হবে। শ্রমজীবি মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া এই সমাজে বেঁচে থাকার আর কোনো বিকল্প রাস্তা নেই। সেই দাবিতে সকলকে একসাথে লড়াইয়ে নামতে হবে।”