Sunday, November 24, 2024
Homeছাত্র ফ্রন্টজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনের দাবিতে রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাও

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনের দাবিতে রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাও

SSF Pic -1 copy

১৩ জানুয়ারি বুধবার সমাজতান্ত্রি ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর বিভাগের উদ্যোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল সাড়ে ১১টায় রংপুর প্রেসক্লাব থেকে মিছিল শুরু হয়ে আঞ্চলিক কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করে। আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাওকালে পরিচালকের কাছে ৬ দফা দাবি সম্মলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়। মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী। পরিচালনা করেন রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কারমাইকেল কলেজ সভাপতি আবু রায়হান বকশি, গাইবান্ধা কলেজ সভাপতি পরমানন্দ দাস, দিনাজপুর কলেজ সভাপতি গোবিন্দ রায়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ সভাপতি স্বপন রায়, ঠাকুরগাঁ সরকারি কলেজ সভাপতি জাকির হোসেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সংকট মুক্ত করে একটা প্রকৃত মানসম্পন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে স্বতন্ত্র পরীক্ষা হল ও ক্লাসরুম নির্মাণ, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় আয়োজন সম্পন্ন করে ২১০ দিন নিশ্চিত করা, ৪ বছরের সমন্বিত কারিকুলাম নির্ধারণ, সিলেবাস সংক্ষিপ্ত (ক্লাসে যতটুকু পড়ানো হয়) করা ,সিলেবাস প্রণেতা, পাঠদানকারী শিক্ষক, প্রশ্নকর্তা ও উত্তরপত্র মূল্যায়নকারীর সমন্বয়। মার্স্টাস ভর্তির নতুন নিয়ম বাতিল করে পুরাতন নিয়ম বহাল রেখে শিক্ষা জীবন রক্ষা করা, আবাসন সংকট নিরসনে নতুন হল নির্মাণ, লাইব্রেরি সেমিনারে পর্যাপ্ত বই, পরিবহন সংকট নিরসনে নতুন বাস ক্রয় ও নতুন রুটে বাস চালু করা। ক্যাম্পাসগুলোতে স্থায়ী ব্যাংক শাখা চালু ও প্রয়োজনীয় ঔষধ, সার্বক্ষণিক ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু, যেসমস্ত কলেজে প্রিভিয়াস নেই অবিলম্বে (প্রিভিয়াস কোর্স) চালুসহ অনার্স ১ম বর্ষের রুটিনে প্রত্যেক পরীক্ষার মাঝে সময় বাড়িয়ে নতুন রুটিন দিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, উচ্চ শিক্ষায় চরম দায়িত্বহীনতার শিকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘ দুই যুগের অভিজ্ঞতায় দেখা যায় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে (ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক) কোন আলোচনা ছাড়াই ইচ্ছামত নানা ধরণের নিয়ম এক্সপেরিমেন্ট করছে কর্তৃপক্ষ। কলেজগুলোর পড়ানোর সমস্ত আয়োজন না করে এবং নতুন কোন আয়োজনের ব্যবস্থা না করে হঠাৎ করেই ‘‘অনার্স রেগুলেশন ২০১০’’ চালু হয় এবং সিলেবাসের কলেবর দ্বিগুন করা হয়। এই সৃজনশীল ব্যবস্থায় ২১০ দিন ক্লাসের বাধ্যবাধকতা থাকলেও কারমাইকেলের মত ঐতিহ্যবাহী বড় কলেজে গত ৩-৪ সেশনে বিভিন্ন বিভাগে গড়ে ৪০/৪৫ দিনের বেশি ক্লাস হয়নি। এ থেকে বোঝা যায় অন্য কলেজগুলোর অবস্থা কত করুন! আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছি সেশনজট নিরসন করতে পর্যাপ্ত শিক্ষক, ক্লাসরুম, স্বতন্ত্র পরীক্ষাহলসহ প্রয়োজনীয় আয়োজন সম্পন্ন করতে কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসবের তোয়াক্কা না করে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করেছে। ফলে কলেজগুলোর পাঠদান প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে এবং এটি এখন শুধু পরীক্ষা গ্রহণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বেশিরভাগ সময় বাজারে বই আসার আগেই পরীক্ষার তারিখ ঘোষিত হচ্ছে। একইভাবে সাম্প্রতিক সময়ে মার্র্স্টাস ভর্তি নতুন নিয়ম শিক্ষার্থীদের উপর চাপানো হয়েছে। যাতে সারাদেশে ৪৬ হাজার শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল স্বত্বেও মার্স্টাসে ভর্তি হতে পারছে না। উপরের ঘটনাগুলোসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় প্রয়োজনীয় আয়োজন না থাকলে শুধু নতুন, আধুনিক নিয়ম আরোপ করলেই শিক্ষার উন্নতি ঘটবে না এবং তা সংকটকে আরো বাড়িয়ে তোলে। এসব সংকটের পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাসীনতায় অথবা পরোক্ষ মদদে কলেজগুলো বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয়, অকার্যকর খাতে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা আদায় করছে। ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সংকট নিরসনে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। আগামী ৭ দিনের মধ্যে মাস্টার্স ভর্তিতে পূর্বের নিয়ম বহাল রাখা না হলে এবং ১ম বর্ষের রুটিন ১৫ দিনের মধ্যে প্রতি ২ পরীক্ষার মাঝে পর্যাপ্ত বিরতি না দিলে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামী ৩০ মার্চ ঢাকায় বিশাল ছাত্র জমায়েতের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments