পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বাড়ছে, বাড়িভাড়া-গাড়িভাড়া লাফিয়ে বাড়ছে। বাড়ছে না জনগণের আয়। এ অসহনীয় পরিস্থিতিতে গত ১৪ জানুয়ারি রেলমন্ত্রী রেলের যাত্রী ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। যা প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কার্যকর করা হবে। ৭.৮% থেকে সর্বোচ্চ ১৫% (দূরত্ব অনুসারে) ভাড়া বাড়বে। এখানেই শেষ নয়, রেলমন্ত্রী বলেছেন এখন থেকে প্রতি বছর ভাড়া বাড়বে। রেল কর্মকর্তারা বলেছেন, সড়কপথের সাথে সঙ্গতি রাখতে ভাড়া বাড়ানো দরকার।
গত ২০১২ সালেও যাত্রীসেবা বৃদ্ধি ও লোকসান কমানোর কথা বলে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু যাত্রীসেবার মান বাড়েনি, লোকসানও কমেনি। ২০১২ সালে রেলের লোকসানের পরিমাণ ছিল বার্ষিক ৮০০ কোটি টাকা। ভাড়া বাড়ানোর পরও বর্তমানে লোকসান হচ্ছে বার্ষিক ৯০০ কোটি টাকা। তাহলে আবারো ভাড়াবৃদ্ধি কি লোকসান কমাবে, নাকি সাবেক রেলমন্ত্রীর কথিত রেলে ‘দুর্নীতির কালো বিড়াল’ ধরা দরকার আগে?
বলা হচ্ছে, ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয় বলে ভাড়া বাড়াতে হচ্ছে। অথচ আমরা দেখি কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের জন্য জনগণের ট্যাক্সের টাকায় অল্প কয়েকজন ব্যবসায়ীকে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। সাংসদদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানিতে হাজার হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স ছাড় দেওয়া হয়েছে। অথচ সাধারণ মানুষের জন্য কোন ছাড় নেই। পাঁচ কোটি মানুষের যাতায়াতের জন্য ভাড়া না বাড়িয়ে এ টাকা কি সরকার ভর্তুকি দিতে পারতো না? সবকিছুর দাম বাড়ছে ফলে রেলের ভাড়াও বাড়াতে হবে — এ যুক্তিতে রেলের ভাড়াবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্প আয়ের মানুষ বাঁচবে কীভাবে?
পরিবেশ, অর্থনীতি, জনসেবা, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, করপ্রদান, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে রেলওয়ের অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনা করলে দেখা যাবে, রেল কখনোই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল না। কর প্রদানের বিনিময়ে জনগণ রাষ্ট্রের কাছ থেকে সেবা পাওয়ার কথা। রেলে বরাদ্দ জনগণকে সেবা প্রদানের জন্য ও দেশের উন্নয়নে এক ধরনের বিনিয়োগ। রেলওয়ে কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। পৃথিবীর অনেক দেশেই রেল ভর্তুকি দিয়ে চলে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। জনগণের করের টাকায় এই গণপরিবহন খাতটি পরিচালিত হয়। পরিবেশবান্ধব, সস্তা, আরামদায়ক, নিরাপদ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী হিসেবে সড়কের তুলনায় রেলব্যবস্থার বিস্তৃতি ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অথচ বাংলাদেশ রেলওয়ে উল্টোপথে হাঁটছে। চাহিদা ও সম্ভাবনা থাকলেও একসময়ের লাভজনক রেলখাত গত ৪৩ বছরে কেন সংকুচিত ও লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হলো?
রেলখাত : পরিকল্পিত অবহেলার শিকার
সারাবিশ্বে রেলপথের বিস্তৃতি ঘটলেও আমাদের দেশে রেলখাতকে চরম অবহেলা করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর গত ৪৩ বছরে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও বাড়েনি রেলপথ। ১৯৪০ সালে রেলপথ ছিল ২৮৫৮ কি.মি., বর্তমানে তা ২৮৩৫ কি.মি.। অন্যদিকে ব্যয়বহুল সড়ক যোগাযোগকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অথচ সড়ক যোগাযোগের তুলনায় রেলে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন সাশ্রয়ী ও নিরাপদ। ১টি মালবাহী ট্রেন ২১০টি পাঁচটনি ট্রাকের সমান মালামাল পরিবহনে সক্ষম। রেলের দক্ষ জনবল গড়ে তোলার বদলে একের পর এক শ্রমিক ও দক্ষ কারিগর ছাঁটাই করা হয়েছে। ’৭০ সালে রেলের জনবল ছিল ৬৫,২৪৫ জন, এখন তা কমে হয়েছে ২৫,৯৮৭ জন। জনবল হ্রাসের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১৬৪টি স্টেশন। রেলের আধুনিকায়নে নেয়া হয়নি কার্যকর কোনো উদ্যোগ। ইঞ্জিন, কোচ, রেললাইনের জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে বেড়েছে রেল দুর্ঘটনা, বাড়ছে সিডিঊল বিপর্যয়। এই কারণে ‘৯টার ট্রেন কয়টায় আসে’ — কথাটা প্রবাদবাক্যে পরিণত হয়েছে। রেলের ২৯৩টি ইঞ্জিনের মধ্যে ১৮৪টিরই আয়ুষ্কাল ইতোমধ্যে শেষ। আর বর্তমানে ৯২০০টি বগির মধ্যে ৮৮৭৬টিরই মেয়াদ শেষ। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কোচের অভাবে যাত্রী পরিবহন করতে পারছে না রেল। ট্রেন চালানোর মতো পর্যাপ্ত চালক নেই। নোংরা টয়লেট, অপরিচ্ছন্ন বসার আসন ও কোচ, ছারপোকা ও মশার উৎপাত, ভাঙ্গা দরজা-জানালা, টিকেট নিয়ে কালোবাজারি ও হয়রানি Ñ সব মিলিয়ে যাত্রীসেবার মান ক্রমাগত নিম্নমুখী। প্রশ্ন হলো রেলের প্রতি এই অবহেলার কারণ কি? কেন সম্ভাবনাময় রেলখাতকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো?
এডিবি-বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থার বেসরকারিকরণের প্রেসক্রিপশানই রেলের সংকটের জন্য দায়ী
রেলের এই দুর্দশা ও লোকসান কৃত্রিম। গত ৪৫ বছরে ক্ষমতাসীন দলগুলোর সদিচ্ছার অভাব, দুর্নীতি-লুটপাট, বিশ্বব্যাংক-এডিবিসহ দাতা সংস্থাগুলোর প্রেসক্রিপশনে বেসরকারিকরণ নীতিই এর জন্য দায়ী। আশির দশক হতেই শুরু হয় রেলের উপর ঋণদাতা এডিবি-বিশ্বব্যাংকের হস্তক্ষেপ। ১৯৮২ সালের পর ৫ সদস্য বিশিষ্ট রেলওয়ে বোর্ডকে ভেঙে রেলকে পূর্ব ও পশ্চিম দুটি জোনে ভাগ করে, মাথাভারী প্রশাসন সৃষ্টি করে রেলের ব্যয় দ্বিগুণ করা হয়। ব্রিটিশ আমলে যেখানে একজন জিএম চট্টগ্রামে বসে সফলভাবে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে পরিচালনা করতো, সেখানে প্রায় এক ডজন জিএম সমতুল্য পদ সৃষ্টি করা হয়। অন্যদিকে ব্যয় সংকোচনের নামে এডিবি-র ঋণের শর্ত হিসেবে ২৩০০০ দক্ষ শ্রমিক ও কারিগর ছাঁটাই করা হয়। রেলের সব কারখানায় কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। নানা অপচয়মূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ১৯৯১, ৯৪ ও ২০০২ সালে রেলওয়ের পুনর্গঠন, কাঠামোগত সংস্কার, বাজারমুখী করা, কর্পোরেশনে পরিণত করা — এডিবি-বিশ্বব্যাংকের এসব প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নের শর্তে প্রদত্ত ঋণের অর্থে রেলকে সংকুচিত ও বেসরকারিকরণের চক্রান্ত অব্যাহত থাকে। এর ফলাফল হলো ইতোমধ্যে ১৬০টি স্টেশন, নয়টি শাখা লাইন বন্ধ, ৬৫টি মেইল ও লোকাল ট্রেন বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ঋণের অর্থ নানা অপচয়মূলক প্রকল্পে খরচ করা হলেও রেলের উন্নয়নে সে অর্থ ব্যয় করা হয়নি। ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত সৈয়দপুর রেল কারখানার কোচ ও ওয়াগন তৈরির ক্ষমতা থাকলেও আজ পর্যন্ত তার আধুনিকায়ন করা হয়নি, সেখানে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ না দিয়ে বিদেশ থেকে চড়া দামে কোচ আমদানি করা হয়েছে। এ কারখানায় একটি কোচ তৈরীতে খরচ হয় মাত্র ৮০ লাখ টাকা, বিপরীতে ১টি কোচ আমদানিতে খরচ হয় ৪ কোটি টাকার বেশি। পার্বতীপুরে ইঞ্জিন তৈরির কারখানা থাকলেও আজ পর্যন্ত সেখানে ইঞ্জিন তৈরির কোনো উদ্যোগ সরকার নেয়নি। সুনামগঞ্জের ছাতকে কংক্রিট স্লিপার ফ্যাক্টরীতে প্রতিদিন ১৬০০টি স্লিপার তৈরির ক্ষমতা থাকলেও স্লিপার বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। দাতা সংস্থাগুলো স্টেশন রি-মডেলিং এর জন্য ঋণ দেয়, কিন্তু রেলের কারখানার উন্নয়নে ঋণ দেয় না।
রেলের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে সংকট কাটবে কি?
বর্তমান মহাজোট সরকার পৃথক রেল মন্ত্রণালয় করেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশবাসী এ মন্ত্রণালয়ের চারজন মন্ত্রীর গালভরা বুলি শুনেছে। সাবেক রেলমন্ত্রী ‘লোকসানের কালো বিড়াল’ খুঁজে বের করার ঘোষণার পর নিজেই দুর্নীতির কারণে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। মন্ত্রী এবং রেল কর্মকর্তারা কথায় কথায় রেলের উন্নয়ন ও রেলকে ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দিচ্ছেন। একই সাথে চলছে ব্যাপক দুর্নীতি-লুটপাট। ২০১৩ সালে চীন থেকে আমাদের দেশের জন্য অনুপযোগী ২০ সেট ডেমু ট্রেন আমদানি করে ৬৬৪ কোটি টাকা লোকসান দেয়া সত্ত্বেও সম্প্রতি আবারও ২০২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০ সেট ডেমু আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সরকার সম্প্রতি ২০ বছর মেয়াদী একটি রেলওয়ে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছে। সেখানে ২৩৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এই মাস্টার প্ল্যানের মধ্যে নতুন রেললাইন নির্মাণ, ইঞ্জিন ও বগি সংগ্রহ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রেল নেটওয়ার্ক বিস্তৃতি, কয়েকটি জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করা ইত্যাদি। এই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে বড় অংকের ঋণ দেবে এডিবি। ঋণের শর্ত হলো প্রতিবছর রেলের ভাড়া বাড়ানো, রেলকে বাণিজ্যমুখী করা ইত্যাদি।
এই মাস্টারপ্ল্যানের ৩৮ হাজার কোটি টাকার বেশ কিছু প্রকল্পে ব্যয়ও হয়েছে। স্টেশনগুলো রি-মডেলিং যার অন্যতম। মাস্টার প্ল্যানের লক্ষকোটি টাকা থেকে সৈয়দপুর রেল কারখানার আধুনিকায়নে ১২২ কোটি ২২ লক্ষ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেও বাস্তবায়ন করা হয়নি। নতুন নতুন রুট তৈরি হচ্ছে এটা নিঃসন্দেহে প্রয়োজনীয়। কিন্তু পুরোনো রুটগুলোতে প্রয়োজনীয় মাত্রায় ইঞ্জিন, বগি, ওয়াগন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে নতুন রুট করা মানে এ রুটের জন্য ইঞ্জিন, বগি আমদানি করা হবে। ইতোমধ্যে এডিবির ঋণ নিয়ে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ২৭০টি বগি কেনা হয়েছে। অথচ সৈয়দপুর রেল কারখানাতেই কম খরচে তা নির্মাণ করা যেত। ইতোমধ্যে খরচ হয়ে যাওয়া ৩৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রেলওয়ের তিনটি কারখানাতে এক হাজার করে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা গেলে তা দিয়ে প্রয়োজনীয় জনবল, কাঁচামাল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ পূর্বক বিপুল সংখ্যক ইঞ্জিন, কোচ, ওয়াগন মেরামতের পাশাপাশি বিদেশি রপ্তানি করা সম্ভব। ফলে দাতা সংস্থার প্রেসক্রিপশনে রেলওয়ে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন রেলের লোকসানের বোঝা আরো বাড়াবে।
রেলের শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার কেড়ে নেয়া হবে
২২ বছর পর আবার রেলে জনবল ছাঁটাইয়ের চাপ দিচ্ছে এডিবি। এর পূর্বে ১৯৯২ সালে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির চাপে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে হাজার হাজার শ্রমিককে চাকরি থেকে বিদায় দেওয়া হয়েছিল। এবার এডিবি ঋণের শর্ত হিসেবে পদ ছাঁটাই করে প্রয়োজনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য চাপ দিচ্ছে। রেলওয়ে বর্তমানে ১০টি স্কুল, ১০টি হাসপাতাল, ১টি বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, ৩২টি ঔষধের দোকান সরাসরি পরিচালনা করে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি জনগণও সেবা পায়। অথচ এডিবি ঋণের শর্ত হিসেবে এসব স্কুল ও হাসপাতালকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
রেলের ভাড়া বাড়ানো ও দাতাদের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই রেলকে লাভজনক করা সম্ভব
দাতা সংস্থার প্রেসক্রিপশন ছাড়াই প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে রেলকে লাভজনক করা সম্ভব। এর প্রমাণ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। প্রায় ১৪ লক্ষ কর্মী ও ১১ লক্ষ পেনশনভোগী নিয়ে বিশাল ভারতীয় রেল যথাযথ পরিকল্পনা ও অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে লোকসানি প্রতিষ্ঠান থেকে আজ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের মতো ভারতের ক্ষেত্রেও বিশ্বব্যাংক আইএমএফসহ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা বেসরকারিকরণ-যাত্রীভাড়া বৃদ্ধি-লোকবল ছাঁটাইয়ের বহুল প্রচলিত প্রেসক্রিপশন দেয়। কিন্তু তা অনুসরণ না করে ভারত সরকার উল্টো সরকারি বিনিয়োগে রেলের ইঞ্জিন-চাকা-বগি তৈরির কারখানা স্থাপন করে, যাত্রীভাড়া হ্রাস করে, হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ দেয়, ২০০৫-’০৮ সাল এ তিন বছরে নতুন দেড় হাজার যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করে। যার ফলে অতীতের-লোকসানি ভারতীয় রেল আজ লাভজনক প্রতিষ্ঠান। বর্তমান মহাজোট সরকার কথায় কথায় ভারতের বন্ধুত্বের দৃষ্টান্ত টেনে আনে, অথচ ভারতীয় রেলের উন্নয়নের মডেল দৃষ্টান্ত হিসেবে অনুসরণ করে না কেন? মাথাভারী প্রশাসন কমানো, দক্ষ কর্মচারী ও কারিগর নিয়োগ, রেল কারখানার আধুনিকায়ন, দাতা সংস্থার অপচয়মূলক প্রকল্প বাদ দেয়া হলে কোটি কোটি টাকা অপচয় কমবে। ২৩ মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কাছে রেলের বকেয়া পাওনা ১২,৬১০ কোটি টাকা। রেলের ১২,১০০ একর জমি অবৈধ দখলদারদের হাতে। এ বকেয়া পাওনা ও দখলকৃত জমি উদ্ধার করে রেলের উন্নয়নে ব্যয় করলে, রেল কর্মকর্তা-মন্ত্রী-আমলাদের দুর্নীতি-লুটপাট রোধ করতে পারলে, দাতাসংস্থার কাছে হাত পাতার দরকার নেই, যাত্রি ভাড়া বৃদ্ধিরও প্রয়োজন নেই।