জনগণের পকেট কেটে মুনাফা লোটা বন্ধ কর
“জ্বালানি তেলের দাম কমানোর অত্যন্ত যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত জনদাবিকে মহাজোট সরকার যেভাবে গায়ের জোরে উপেক্ষা করে চলেছে তাতে এ সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক ও গণবিরোধী চরিত্রই ফুটে উঠেছে। কম দামের তেল বেশি দামে বিক্রি করার মাধ্যমে মানুষকে কষ্ট দিয়ে সরকার মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের মতো আচরণ করছে।” কৃষি ও পরিবহনে ব্যবহৃত ডিজেলসহ জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে অবিলম্বে কমানোর দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী এ কথা বলেন। বাসদ (মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে ২৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও পরবর্তীতে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) ঢাকা মহানগর শাখার সংগঠক ফখ্রুদ্দিন কবির আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, আলমগীর হোসেন দুলাল, মানস নন্দী, ওবায়দুল্লাহ মুসা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, “এ কথা সবাই জানেন ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি যখন দেশে সর্বশেষ তেলের দাম বাড়ানো হয় তখন আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেল প্রতি মূল্য ছিল ১২০ ডলার। এখন তা কমে হয়েছে ব্যারেল প্রতি গড়ে ৩০ ডলার। অথচ এখনো দেশে ৩ বছর আগের দামে তেল বিক্রি করা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও দফায় দফায় তেলের দাম কমানো হচ্ছে, অথচ মহাজোট সরকার সব মহলের দাবি সত্ত্বেও কর্ণপাত করছে না। উচ্চমূল্যে তেল বিক্রির মুনাফা থেকে বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ইতোমধ্যে তাদের সকল লোকসান ও দায়দেনা মিটিয়ে দিয়েছে। এখন বিপিসি-র উদ্বৃত্ত তহবিল সরকার সরাসরি নিতে চায় অতীতের ভর্তুকির অর্থ ফেরত নেয়ার নাম করে। একদিকে তেলের দাম বেশি থাকলে সরকার ট্যাক্স বেশি পায়। পাশাপাশি, তেল বিক্রির মুনাফা দিয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগার ভরতে চায়। তথাকথিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে বারবার খরচ বাড়িয়ে যে লুটপাট চলছে তার ঘাটতি পোষাতে এই টাকা ব্যবহার হবে। অথচ, ডিজেলের দাম বেশি থাকায় কৃষিতে সেচের খরচ বাড়ছে, কিন্তু কৃষকরা এবারও ধানের দাম পাচ্ছে না। ডিজেলের দাম কমালে গাড়িভাড়া কমতো, পরিবহন খরচ কমে দ্রব্যমূল্যও হ্রাস পেতো। জনস্বার্থের দিকে এ সরকারের বিন্দুমাত্র ভ্রƒক্ষেপ নেই, মানুষের পকেট কেটে বেশি অর্থ আদায় করে কিভাবে বেশি লুটপাট করা যায় তাদের নজর কেবল সেদিকে।”
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ তেলের দাম কমানোর দাবিতে সোচ্চার হতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জোরালো প্রতিবাদ ও আন্দোলন গড়ে তোলা গেলেই কেবল জনগণের দাবি কিছুটা আদায় করা সম্ভব।