তনু হত্যাকারীদের অবিলম্বে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করার দাবিতে এবং সারাদেশে অব্যাহত নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে বাসদ (মার্কসবাদী)’র উদ্যোগে আজ ৪ এপ্রিল সোমবার বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশও পরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।| বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মানস নন্দী, উজ্জ্বল রায়, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, সা্ইফুজ্জামান সাকন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশ আজ খুনীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। ইউনয়িন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় ৩২ জনের বেশি মানুষ এর মধ্যে নিহত হয়েছে। প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই কয়েকটা খুনের খবর পাওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে নারীরা। ঘরের মধ্যে, রাস্তায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, চলন্ত বাসে সবত্র ধষণসহ নানা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে নারী। আর তনুর লাশ পাওয়া গেছে সুরক্ষিত ক্যান্টনমেন্ট এলাকার মধ্যে।ফলে দেশের কোথাও আজ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। এই নিরাপত্তাহীনতার দায় সরকারকে নিতে হবে। এদেশে সরকারী সমর্থংন, দলীয় মদদ কিংবা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকলে খুন করেও পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ অপরাধীদের বেপরোয়া করে তুলেছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনী যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালায় ও সরকারের মন্ত্রীরা তাকে সমর্থন করেন, সেখানে আ্ইনের শাসন ভেঙ্গে পড়া্ স্বাভাবিক। এই অবস্থায় তনু হত্যার বিচার দাবিতে মানুষ যেভাবে রাস্তায় নেমে এসেছেন তা এক ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯৯৫ সালে কিশোরী ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে দিনাজপুরে গণঅভ্যুত্থানের চাপে তার বিচার নিশ্চিত হয়েছিল। তনু হত্যার ক্ষেত্রেও ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে জনমনে সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে। গত বছর পহেলা বৈশাখে যৌন নিপীড়নের ঘটনার কোন বিচার হয়নি। পাহাড়ে যত আদিবাসি নারী ধর্ষণ হল তারও কোন বিচার হয়নি। জনগণের সজাগ প্রতিরোধই ন্যায়বিচারের একমাত্র গ্যারান্টি।
বক্তারা আরো বলেন, তনু হত্যা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। নারী নির্যাতন ব্যাপকতা পাওয়ার পেছনে সরকারি প্রশ্রয় ও বিচারহীনতা দায়ী। পাশাপশি ভোগবাদী পুঁজিবাদী সংস্কৃতি পর্ণোগ্রাফি-বিজ্হাপনসহ নানাভাবে নারীদেহকে পণ্য বানাচ্ছে। এ্রর প্রভাবে নারীকে ভোগের বস্তু হিসেবে দেখার যে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি তা আরো বিকৃত রুপ ধারণ করছে। নারীর নিরাপত্তাহীনতা দিনদিন বাড়ছে। তনু হত্যার বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলন নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ও মানুষ হিসেবে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সামগ্রিক সামাজিক আন্দোলনকে বেগবান করবে।