ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত বিক্ষুব্ধ কৃষকদের নিয়ে মহাসড়কে বস্তা বস্তা ধান ফেলে সরকারের গণবিরোধী অবস্থানের প্রতিবাদ জানালো বাসদ (মার্কসবাদী)। এ বছর কৃষকদের প্রতি মণ ধান উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৮৫০- ৯০০ টাকা, অথচ বাজারে প্রতি মণ ধানের মূল্য ৩৫০-৪০০ টাকা। ফলে কৃষক ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচ পর্যন্ত তুলতে পারছে না। সরকার মণ প্রতি ধানের মূল্য ৯২০ টাকা ঘোষণা করলেও তা কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। প্রতি বছর কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে কৃষক। নির্বিকার শাসকগোষ্ঠীকে ধিক্কার জানাতে বাসদ (মার্কসবাদী) এবং সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট বিক্ষুব্ধ কৃষকদের নিয়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। ৩১ মে সকাল ১১টায় রংপুর নগরীর সাতমাথায় সমবেত হয় ভুক্তভোগী কৃষক ও ক্ষেতমজুররা। সেখানে বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক এবং সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের জেলা আহবায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু’র সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা পলাশ কান্তি নাগ, কৃষক প্রতিনিধি আব্দুস সাত্তার প্রামাণিক, এমদাদুল হক বাবু, ওজিউলাহ্ মিয়া, নুর ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে আনোয়ার হোসেন বাবলু বলেন, এখানে মুনাফাখোর মধ্যসত্ত্বভোগী-ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে আর কৃষক বাম্পার ফসল ফলানোর পরেও ক্রমাগত লোকসানের শিকার হচ্ছে। ফলে এই কৃষকদের বাঁচাতে সরকারকে উৎপাদন খরচের সাথে ৩৩% মূল্য সহায়তা দিয়ে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ও বিক্ষুব্ধ কৃষক আব্দুস সাত্তার প্রামাণিক বলেন, সরকার শিল্পপতি-পুঁজিপতিদের নানা সুবিধা দিতে পারে, কিন্তু কৃষকদের ধানের ন্যায্য মূল্য দিতে পারে না। কৃষক এমদাদুল হক বাবু বলেন, ১ মণ ধান বিক্রি করে ১টা লুঙ্গি কেনার টাকা যোগাড় করতে পারি না। ফসল উৎপাদন করা কি আমাদের অপরাধ? সমাবেশ থেকে অবিলম্বে সরকার ঘোষিত ৯২০ টাকা মণ দরে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় এবং বর্ধিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। সেইসাথে কৃষক-ক্ষেতমজুরদের পুঁজিবাদী শোষণ-দুঃশাসন থেকে বাঁচতে ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান। এর আগে ৫ মে বেলা ১১টায় কাচারি বাজারে সমাবেশ শেষে জেলা এবং কৃষক ফ্রন্ট পীরগাছা উপজেলা শাখার উদ্যোগে ৩ মে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে চৌরাস্তা মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন বাসদ (মার্কসবাদী) পীরগাছা উপজেলা সংগঠক রঞ্জন বর্মন, বক্তৃতা করেন পলাশ কান্তি নাগ, কৃষক ফ্রন্ট আরাজি ঝিনিয়া অঞ্চল কমিটির আহবায়ক নিখিল বর্মন, সদস্য সচিব নবীন বর্মন, ছাত্র ফ্রন্ট নেতা আবু রায়হান বক্শি। চট্টগ্রাম, সিলেট, দিনাজপুর, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একই দাবিতে অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হয়।