সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা এবং সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু এক যুক্ত বিবৃতিতে গত ১ জুলাই গুলশানে সংগঠিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা একইসাথে দেশের এবং জাপান, ইতালি, ভারতের নিহত নাগরিকদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন. ‘গুলশানে ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি যে পাশবিক কায়দায় ২০ জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করলো তা অত্যন্ত নিন্দাযোগ্য এবং সভ্যতাবিরোধী। ঘটনার ভয়াবহতা দেশের সাধারণ মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেহাল অবস্থা এবং জননিরাপত্তার বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট নেই বলেই এমন নির্মম ঘটনা ঘটতে পারলো। সমাজের সকল স্তরের মানুষই যে আজ এক ভয়াবহ বিপদে আছে তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। সরকার এতদিন ধরে ব্লগার, বিজ্ঞান লেখক কিংবা পুরোহিত, ভিক্ষু, মুয়াজ্জিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে হত্যার ঘটনাকে তুচ্ছ-বিচ্ছিন্ন করে দেখাতে চেয়েছে। লোক দেখানো উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এসব উদ্যোগ কতটা অকার্যকর তা এই ২০ জন নিরীহ প্রাণের করুণ মৃত্যুতে যেন তীব্রভাবে বোঝা গেল।
সরকার এই ঘটনার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। ধারাবাহিকভাবে জঙ্গি গোষ্ঠীর মাধ্যমে যখন একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তখন তাদের প্রায় কোনোটির বিচার না করে, হাতেনাতে ধরাপড়া জঙ্গিকে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হত্যা করে, জঙ্গি ধরার নামে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে হয়রানি আর গ্রেপ্তার বাণিজ্য করে সরকার এই পরিস্থিতি তৈরির উর্বর ক্ষেত্র তৈরি করেছে। গুলশানের ঘটনা এসব কর্মকাণ্ডেরই ধারাবাহিকতা।
দেশের যখন এই নাজুক পরিস্থিতি তখন সরকার চিরাচরিতভাবে বিরোধী দলকে দায়ী করে ‘ব্লেম গেম’র খেলায় মেতে উঠেছে। প্রকৃত অপরাধী খুঁজে দেখার বদলে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের এই নোংরা খেলা সরকারকে বন্ধ করতে হবে। নিজেদের ক্ষমতায় থাকার পথকে নির্বিঘ্ন রাখা, সমস্ত বিরোধী মতকে নির্মমভাবে দমন করা, দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকট থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নিবদ্ধ করার এই অপকৌশল দেশের অবস্থাকে আরও অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাবে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। শুধু পথভ্রষ্ট, ধর্মান্ধ কিছু জঙ্গির বিচার নয়, এসব ঘটনার নেপথ্যে জড়িত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কর্তা-ব্যক্তিদেরও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।