গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার এক সভা ২ আগষ্ট ২০১৬ বিকেল ৫টায় ২২/১ তোপখানা রোডস্থ বাসদ (মার্কসবাদী) অফিসে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বন্যাকবলিত অঞ্চলে দূর্গত মানুষদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ ও পুনর্বাসনে সরকারের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের অভাবের সমালোচনা করে দেশপ্রেমিক মানুষদের বন্যাকবলিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হেসেন নান্নু, অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, বাসদ(মাহবুব)-এর কেন্দ্রীয় নেতা ইয়াসিন মিঞা ও মহিনউদ্দিন লিটন।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, জঙ্গিবাদের ভয়াবহ আতংকে মানুষের উদ্বেগ ও অসহায়তার মধ্যেই লক্ষ লক্ষ বানভাসি মানুষের মানবেতর জীবনের আর্তনাদ অনেকটা যেন দৃষ্টির আড়ালেই। প্রায় ৪০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। সরকারি হিসেবে ১৬ জেলার ৫৯ উপজেলার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। ২২ হাজার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে মারা গেছে প্রায় ৪০ জন। বসতবাড়ি ও সম্পদ হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নেয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছেই। বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট। পানিবন্দী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি, মাছের ঘের, পুকুর, বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ। শিক্ষা উপকরণ পানির তোড়ে ভেসে গেছে। ভবিষ্যতের চরম অনিশ্চয়তায় যখন অন্ধকার দেখছে মানুষ, সরকারের ভূমিকা নিতান্তই দায়সারা! সরকার বলছে, ত্রাণের অভাব নেই। এ পর্যন্ত সরকারি বরাদ্দ জনপ্রতি ২১ টাকা যা প্রয়োজনের তুলনাই খুবই অপ্রতুল। সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, ত্রাণ নিয়ে তামাশা চলছে। অথচ সংবাদ সম্মেলন করে ত্রাণমন্ত্রী বলেছেন ‘ত্রাণের অভাব নেই’ এরকম দায়হীন বক্তব্যে বন্যাকবলিত মানুষের প্রতি তাচ্ছিলেরই প্রকাশ।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বন্যা প্লাবিত অঞ্চলকে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে সরকারী উদ্যোগে জরুরী ভিত্তিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারে প্রতি জোর দাবি জানান।