২৪ আগস্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালন
আফসানা ও তনু হত্যার বিচারসহ ৫ দফা দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের স্মারকলিপি পেশ
২৪ আগস্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। এই দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র দেশব্যাপী ‘আফসানা ও তনু হত্যার বিচার, বর্ষবরণে যৌন নিপীড়ন এবং নারী ও শিশু হত্যাকারী-নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত, নারী ও শিশুসহ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ ৫ দফা দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে। এর আগে রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সীমা দত্ত। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এড. সুলতানা আক্তার রুবি, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিদীপা ভট্টাচার্য, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক তাসলিমা আক্তার বিউটি।
উল্লেখ্য গত চার মাস ধরে নারী শিশু হত্যাকারী নির্যাতনকারীদের শাস্তির দাবীতে সারাদেশে ৪৫ হাজার স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে, অবস্থান কর্মসূচী, পথ সমাবেশ, প্রচারপত্র বিলি ইত্যাদি কর্মসূচী পালন করে এসেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা সংগৃহিত স্বাক্ষরসহ ৫ দফা দাবি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি পেশের কর্মসূচী পালন করে। একই দিনে রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, নোয়াখালী, সিলেট, চাঁদপুর, যশোর, জয়পুরহাট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় উক্ত কর্মসূচী পালিত হয়।
আন্দোলনে উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
হল ছাড়া আবার বিশ্ববিদ্যালয় কি?
প্রায় মাসখানেক ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হল প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করছে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে এই ন্যায্য দাবি উচ্চকিত করলেও এখনও পর্যন্ত সরকারের টনক নড়ছে না। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন, ধর্মঘট, সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করেছে। সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি না মানলেও সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন কয়েক দফা এই আন্দোলনের উপর খড়গহস্ত হয়েছে। হামলা ও ভয় দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে নিরস্ত করার চেষ্টা করছে। গত ২৮ আগস্ট পূর্বনির্ধারিত ধর্মঘট পালনকালে শিক্ষার্থীদের উপর উপর্যুপরি হামলা করে ২০ জন শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। পরদিন একই কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে কর্মসূচি বানচাল করেছে। হামলায় আহত অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মিঠুন রায় এখনো ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। হামলায় আহত হয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহরান আজাদ, পাঠাগার সম্পাদক অনিমেষ রায়।
প্রতিষ্ঠার ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো হল নেই। কলেজ থাকাকালীন অবস্থায় যে ১১টি ছাত্রাবাস ছিল তা এখন বিভিন্নভাবে দখল হয়েছে। ইতোপূর্বে কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীরা এই সব হল উদ্ধার করার দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে বরাবর উদাসীন থেকেছে। আন্দোলনের মুখে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি ছড়িয়েছে। একটি ছাত্রী হলের ভিত্তিপ্রস্তর ৩ বছর আগে স্থাপিত হলেও এখনও কাজ শুরু হয়নি। এই বিদ্যাপীঠের ২১ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা কী হবে এটা সম্পূর্ণরূপে বিশ্ববিদ্যালয়েরই দায়িত। কিন্তু সরকার দিন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দায়িত্ব অস্বীকার করছে। সেই লক্ষ্যে ইউজিসি’র ২০ বছর মেয়াদী কৌশলপত্র প্রণীত হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি তথা স্বনির্ভর হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার বিরোধী। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে আয়োজনগুলো দরকার তার মধ্যে হল অন্যতম। বিশ্ববিদ্যালয়ে হলকে শুধু আবাসন হিসেবে দেখা হয় না, জ্ঞানের মিথষ্ক্রিয়ার ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে হলে অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের হলের দাবি মেনে নিতে হবে।
বন্যার্তদের জন্য সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ ও পুনর্বাসনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(মার্কসবাদী)’র উদ্যোগে ৩ আগস্ট বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জরুরী ভিত্তিতে বন্যার্ত অসহায় মানুষদের সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করা ও পুনর্বাসনের দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিক ও সাইফুজ্জামান সাকন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজপথ প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “গুলশান-শোলাকিয়ায় নৃশংস হত্যাকান্ডের আতঙ্কের মধ্যেই লক্ষ লক্ষ বানভাসি মানুষের মানবেতর জীবনের প্রতিচ্ছবি অনেকটা যেন দৃষ্টির আড়ালেই মিলিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৪০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। সরকারি হিসেবে ১৬ জেলার ৫৯ উপজেলার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। ২২ হাজার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে মারা গেছে প্রায় ৪০ জন। ”
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ ও বন্যা সমস্যার সমাধানকল্পে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।